মুখে রুমাল চেপে অপহরণ করেন শুভ ও আলামিন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:১২ পিএম
রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে এক তরুণীকে তুলে নিয়ে ৪দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. মনির হোসেন শুভ (২২)। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ৪ দিন আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনা প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় র্যাব-৩ এর একটি অভিযানিক দল বুধবার রাতে রাজধানীর চকবাজার থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলোচিত ধর্ষণের প্রধান অভিযুক্ত মো. মনির হোসেন শুভকে আটক করে।
ভিকটিমের অভিযোগে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল অনুমান ১০টার দিকে ভিকটিম প্রাইভেট পড়তে শিক্ষকের বাসায় যাওয়ার পথে লালবাগ কেল্লার মোড়ে শুভ ও আলামিন তার মুখে রুমাল চেপে রিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে চারদিন আটকে রেখে শারিরীক নির্যাতন ও ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে অসুস্থ অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়। একজন পথচারী তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
[caption id="attachment_335495" align="aligncenter" width="700"] গণধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেন শুভকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করে র্যাব। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত জানায় যে, আটককৃত শুভ বর্তমানে বিবিএ শিক্ষার্থী। জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত দাবি করেছে ভিকটিমের সঙ্গে গত ১ মাস আগে লালবাগের একটি বাসায় তার এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচয় হয়। এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতর দাবী পরিচয়ের পর তার সঙ্গে ভিক্টিমের ৬-৭ বারের মত দেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক ছিল। ১২-১৬ ফেব্রুয়ারিতেও তাদের দেখা হয়েছে। তবে ধর্ষণের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে সে। ভিকটিম যেহেতু ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার আছে শারীরিক পরীক্ষার পরে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হবে। তবে বিষয়টি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করায় তদন্তের সুবিধার্থে আমরা তাকে দ্রুত আটক করেছি।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার্থে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। র্যাবের অভিযানে অদ্যবধি ধর্ষণের ঘটনায় ৩১১ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ২৯০ জন ভিকটিম। যেখানে নারীর অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে সেখানে র্যাব সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে আসামীদের গ্রেপ্তার করেছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে দুটি নির্মম, মর্মান্তিক ও পৈচাশিক ধর্ষণের ঘটনা ও ময়মনসিংহের হালূয়াঘাটে গারো সম্প্রদায়ের দুই কিশোরী গণধর্ষণের মামলায় মূল আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করে জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণের সক্ষম হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মী ও দেশবাসীর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে র্যাব নারীর অধিকার রক্ষার্থে সাফল্য ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর।