দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রোধে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সিন্ডিকেটকে দায়ী করে তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় অবিলম্বে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। একই সঙ্গে বক্তারা চালের দাম বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে চলমান লুটপাটতন্ত্র ও দুঃশাসনের অবসান ঘটানোর লড়াইয়ে সামিল হতে দেশের মানুষের প্রতি আহবান জানান।

বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সিপিবি ঘোষিত ‘দাম কমাও, জান বাচাও’ দিবসে দলটির ঢাকা দক্ষিণ কমিটি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণবিরোধী সরকার আর অবৈধ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে ভোক্তা জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। লুটপাটের ধাক্কায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। বিনা ভোটের সরকার দেশের মানুষকে আজ ভাতে মারতে চলেছে। তারা জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার পল্টন মোড়ে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সভাপতি শামসুজ্জামান হীরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সিপিবি নেতা ত্রিদিব সাহা, শংকর আচার্য, গোলাম রাব্বী খান প্রমুখ। সমাবেশটি পরিচালনা করেন সিপিবি ঢাকা দক্ষিণের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আক্তার হোসেন।

সমাবেশে মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, গণবিরোধী সরকার লুটেরা, মুনাফাখোর, মজুতদারদের পাহারাদার হিসেবে ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেটকে রক্ষা করে চলেছে। সাধারণ মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দায় নেই। একদিকে ভোক্তাদের পকেট কাটা হচ্ছে, অন্যদিকে উৎপাদক কৃষক প্রতারিত হচ্ছে। সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দর্শনের বদলে সরকার এখন মুক্তবাজার দর্শনের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করছে। সরকারের বাজার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের অভাবে ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়েই চলেছে।

জলি তালুকদার জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সিন্ডিকেটকে দায়ী করে অবিলম্বে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, করোনার আঘাতে মানুষ যখন বিপর্যস্ত, তখন দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার ধাক্কায় মানুষের দৈনন্দিন জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যেই মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে সরকার আবারও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। সমাবেশ থেকে বলা হয়, দাম বাড়ার প্রতিবাদে তীব্র লড়াই গড়ে তোলার পাশাপাশি স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধেও গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান হয়।

সমাবেশ থেকে গরিব মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু, গণবণ্টন ব্যবস্থা চালু, টিসিবির কার্যক্রম জোরদার করা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, বাফার স্টক গড়ে তোলা, অবৈধ ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া, লুটেরা-মজুদদার-মুনাফাখোর-মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশের পূর্বে ‘দাম কমাও, জান বাঁচাও’ স্লোগানে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।