×

জাতীয়

ইসিতে সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধি রাখার পরামর্শ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:৩৩ পিএম

ইসিতে সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধি রাখার পরামর্শ

সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। ছবি: ভোরের কাগজ

ইসিতে সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধি রাখার পরামর্শ

সার্চ কমিটির বৈঠক। ফাইল ছবি

ইসিতে সংখ্যালঘু ও নারী প্রতিনিধি রাখার পরামর্শ

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। ফাইল ছবি

নির্বাচন কমিশনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী সংখ্যালঘু, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও নারী প্রতিনিধি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে তারা এই পরামর্শ দেন।

এর আগে সকালে সার্চ কমিটির সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠক হয় দেশের বিশিষ্টজনদের। সেসময় তারা ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তি যাচাইয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সৎ, নিষ্ঠাবান ও সব চাপের উর্ধ্বে থেকে কাজ করার যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দেয়ার পরামর্শ দেন।

দুপরে সার্চ কমিটির সঙ্গে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের বৈঠক শেষে ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, নির্বাচন কমিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিগত নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে নানা বিতর্ক ছিল। আগামী নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে নির্বাচনটি করতে গেলে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। সেটি করার দায়িত্ব সার্চ কমিটির।

[caption id="attachment_334607" align="aligncenter" width="1200"] সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

তিনি আরও বলেন, যেকোন নির্বাচনে সব চেয়ে বেশি ভিকটিম হয় সংখ্যালঘুরা। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশনে কখনোই সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব ছিল না। আমরা তাদের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম থেকে প্রতিনিধি এবং সমাজের অবহেলিত অথচ সমাজে যারা ভাল ভূমিকা রাখছেন তাদের প্রতিনিধি রাখার দাবি জানিয়েছি।

ভোরের কাগজ সম্পাদক জানান, সবচেয়ে বড় কথা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে যাদের মনে নানা রকম বিতর্ক রয়েছে, তাদের নাম যাতে না আসে এমন ১০ জনের নাম প্রস্তাব করতে আহবান জানিয়েছি। আমরা সার্চ কমিটিকে বলেছি, যে দশজনের নাম তারা রাষ্ট্রপতিকে দেবেন- তিনি তো সেসব নামের বাইরে যাবেন না, সেকারণে এমন ব্যক্তিদের নাম থাকা উচিত যারা আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন। এছাড়া এ দশটি নামের বিষয়ে সবার মতামত নেবার জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি।

৭১ টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু বলেন, একেবারে বিভক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ঐকমত্য সৃষ্টি করা কঠিন, যখন সমাজের এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি অংশ এই প্রক্রিয়ার বাইরে। সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম যেন সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, সে বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। একটি দল এই প্রক্রিয়ায় আসছে না, তারা তো এর বিরোধিতা করবেই। তাই এ বিষয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক হওয়ার জন্য বলেছি সার্চ কমিটিকে।

[caption id="attachment_334608" align="aligncenter" width="1156"] সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

তিনি আরও বলেন, সার্চ কমিটি যাদেরই নির্বাচন করবেন অন্তত তাদের নাম সবার আগে মিডিয়ায় প্রকাশ করবেন। কারণ যাদের আপনারা নির্বাচিত করবেন তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সাধারণ জনগণ আগেই মতামত দিতে পারবে। তা না হলে নিয়োগ পাওয়ার পর যদি কোনো বিতর্কিত লোক নির্বাচিত হয়ে যায়, তখন একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।

৭১ টিভির প্রধান সম্পাদক আরো বলেন, নির্বাচনের আগে পরে সংখ্যালঘুরা সব সময় নির্যাতনের শিকার হন। সে কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে একজন যদি ইসি সদস্য হন তাহলে তারা ভোট দিতে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে আসবে। তাছাড়া গণমাধ্যমকর্মীরা খুব কাছ থেকে নির্বাচন ফলো করে, সে কারণে গণমাধ্যম থেকে একজন এবং নারীদের মধ্য থেকেও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নাম রাখার প্রস্তাব করেন তিনি।

দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, যাদের নাম এ পর্যন্ত এসেছে তাদের নাম থেকে এমন ১০ জনের নাম বাছাই করতে আমরা বলেছি যাদের কর্মজীবনে কোনো খুঁত নেই। অর্থাৎ কোনো সময় কোনো দুর্নীতি বা অস্বচ্ছতার আশ্রয় নেননি এমন লোক বাছতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাদের নাম এসেছে সেগুলো ও ১০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশের দাবি জানান তিনি।

যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সার্চ কমিটি যে ১০ জনের নাম তালিকাভূক্ত হবেন তারা যেন কর্মে ও যোগ্যতায় সাহসী ও নির্লোভ ব্যক্তি হন তা দেখতে হবে। অধিকাংশ মানুষের আস্থায় ও বিশ্বাসের জায়গায় আছে এমন ১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হোক। নির্বাচন কমিশন গঠিত হবার পরে নির্বাচন বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে যেন নির্বাচন কমিশনে মতানৈক্য বা গরমিল না দেখি। কেননা নির্বাচন কমিশনে আস্থার জায়গায় ইতিমধ্যে সবার মনে ঘুন ধরেছে। এটা আমরা আর চাই না। সে জায়গাটায় যেন আর ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যাতে কাজ করতে পারে সে জন্য ইসিতে সাহসী মানুষ দরকার। এ সাহস পোশাকের বিরুদ্ধে, সাহস পেশী শক্তি, অস্ত্র বা গোষ্ঠী ও দলের বিরুদ্ধে। এমন মানুষ দরকার যিনি নির্লোভ থাকবেন।

প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সবার অংশগ্রহণে যাতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয় সে বিষয়ে সার্চ কমিটিকে আমরা বলেছি। একইসঙ্গে ব্যক্তিত্বশীল লোকদের যেন এ কমিশনে সুযোগ দেয়া হয়, সে প্রস্তাবও দিয়েছি। তাদের যেন কোনো সময়ে কোনো রাজনৈতিক দলের সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ না থাকে। তারা যেন সৎ, যোগ্য, দক্ষ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি হোন এ আহবান জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App