×

জাতীয়

পরিবেশ রক্ষায় স্মার্ট মনিটরিং জরুরি: সাবের হোসেন চৌধুরী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:৫০ পিএম

পরিবেশ রক্ষায় স্মার্ট মনিটরিং জরুরি: সাবের হোসেন চৌধুরী

শুক্রবার “বাপা-বেন বার্ষিক সম্মেলন-২০২২” এ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় সবার আগে ভাবতে হবে, আমাদের সক্ষমতা কিভাবে বাড়ানো যায়। এজন্য স্মার্ট মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নেতৃত্ব দিয়ে প্রমাণ করতে হবে পরিবেশ রক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি সংস্থাগুলো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইলে জনগণও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবে বলে মনে করি। যদি সরকারি সংস্থাগুলো এই ভূমিকা না রাখতে চায়, তাহলে জনগণও এগিয়ে আসবেনা। আর সেটা না হলে, পরিবেশগত দিক দিয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশের কোন অবস্থানে যাবে, সে প্রশ্নও নিষ্পত্তি হবে না।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে টার দিকে বাপা-বেন বার্ষিক সম্মেলন-২০২২ উপলক্ষে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন বিষয়ক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তত্যে তিনি এ কথা বলেন। এরআগে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাপা-বেন সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বাপার সভাপতি সুলতানা কামাল, বাপার সহসভাপতি নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে বাপা-বেনের নেতারা পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন ব্যতয় ও ঘাটতির কথা তুলে ধরেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য যারা ভূমিকা রাখবে, সেই পরিবেশ অধিদপ্তরেরই বড় সঙ্কট জনবল। পদ আছে ১ হাজার ১৫০টি। কিন্তু ৫০ শতাংশের বেশি পদ শূণ্য অবস্থায় রয়েছে। অথচ প্রয়োনীয়তা রয়েছে ৬ হাজার জনবলের। এক্ষেত্রে স্মার্ট মনিটরিং কিভাবে করা যায়, সেটি ভাবতে হবে। কারণ জনবল নিয়োগ দিয়েতো প্রতি শিল্প কারখানায় একজন করে বসিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা। স্মার্ট মনিটরিং শুরু হলে, কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত টেনারি শিল্পনগরীর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ১০ বছর হয়ে গেছে, টেনারি সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। অথচ এখনো ছাড়পত্রই চাওয়া হয়নি। সরকারি সংস্থার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে জনগণ কিভাবে পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনে যোগ দিবে।

ঢাকা-৯ আসনের সাংসদ বলেন, প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিদেশীদের উপর নির্ভরশীলতার কথা বলেন অনেকে। এর পেছনে অন্যতম কারণ, অনেক সময় আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনার ক্ষেত্রে একটা শূণ্যতা বিরাজ করে। যার জন্য যখন যে উন্নয়ন সহযোগী যে প্রস্তাবনা দেয় তা গ্রহণ করি। আমরা মনে করি, সেটাই সবচেয়ে উত্তম প্রস্তাবনা। এই কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্প বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের কথা শুনতে চাই না। এগুলো হবে, বাংলাদেশের প্রকল্প। যেখানে সহায়তা করছে বিদেশীরা। এই মন মানসিকতা পরিবর্তন আনলে আমরা আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবো।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে পরিবেশ রক্ষার যে আলোচনাগুলো উঠে এসেছে এগুলো যদি আগামীতে সরকারের পরিকল্পনা, নীতি বা কৌশল এমনকি আইন প্রণয়ন ক্ষেত্রে প্রতিফলন বা অন্তত বিবেচনায় না থাকে তাহলে কোনো লাভ নেই। এখানে, রামপাল নিয়ে ১৩টি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনের কথা বলা হয়েছে। এখানে পরিবেশের যে ঝুকির কথা বলা হচ্ছে, তার যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখা আসলেও থাকে, তাহলে পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির কাছে জমা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সংসদীয় কমিটি অবশ্যই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে দেখবে। শুধু রামপালই নয়, পরিবেশ রক্ষায় যেকোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অন্যতম হচ্ছে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সেটার জন্য পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সবারই কর্তব্য। সেটি যদি না করতে পারি, তাহলে বিজয়ের যে ৫০ বছর উদযাপন করছি, পরবর্তী ৫০ বছর কিভাবে অতিবাহিত করবো সে প্রশ্নের নিষ্পত্তি হয়তো হবে না।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎকে সবচেয়ে আলোচিত বলে মনে করি। এখানে অনেক ঘাটতির বিষয় আছে। সবকিছু আড়ালে ফেলে এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। সরকারের এই চমক যেকোনো বিচারে একটি বড় অর্জন। তিনি বলেন, অনেক বিষয়ে হয়তো শিল্পায়নে রুপান্তরের মূল্য দিতে হচ্ছে। তবে, এই সংকট মোকাবেলা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধ পরিকর। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী তার দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে সব সঙ্কট মোকাবেলা করে দেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App