×

পুরনো খবর

সাফারি পার্কের নিরাপত্তা বিষয়ে চিন্তার আধুনিকতা প্রয়োজন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:৫৩ এএম

সাফারি পার্কের ইকো সিস্টেম নিয়ে কোনো গবেষণা হয়েছে? খাদ্য পরীক্ষা, পানি পরীক্ষার জন্য কোনো ল্যাব আছে? কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে তার জন্য কোনো আইসোলেসন জোন আছে? সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যু নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে এবং আরো হবে হয়তো। মূল কারণ যেখানে গিয়েই ঠেকুক সাফারি পার্ক ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ইকো সিস্টেম পুরো এলাকার সার্বিক পরিবেশের ওপরই নির্ভর করে। সাফারি পার্কের পরিবেশে দূষণের হার কত এবং এই দূষণের ইম্প্যাক্ট প্রাণীদের ওপর পড়ছে কিনা তা কি গবেষণার আওতায় আসবে কখনো? গাজীপুরের সবচেয়ে দূষিত খালের মধ্যে একটি হচ্ছে শ্রীপুরের লবলং খাল। বর্তমানে সাফারি পার্কের খুব কাছ দিয়েই এটি প্রবাহিত হচ্ছে। এই খালের প্রবাহমানতার ফলে আশপাশের পানি এমনিতেই দূষিত। বলা হচ্ছিল জেব্রার পেটে বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এই ব্যাকটেরিয়ার উৎস সম্পর্কে তেমন ধারণা নেয়া হচ্ছে না। যারা সাফারি পার্কে ঘাস সরবরাহ করছে তারা যদি দূষিত লবলং খালের আশপাশে থেকে ঘাস সংগ্রহ করেন তাহলে এর চেয়েও মারাত্মক সমস্যা মোকাবিলা করতে হতে পারে আমাদের। এ বিষয়টি ভালোভাবে দেখা প্রয়োজন। সাফারি পার্কে যে পানি সরবরাহ করা হয় সে পানির গুণগতমান টেস্ট করা হয় কিনা? যদি করা হয় তবে নিরাপত্তার জন্য ৩ মাস পরপরই টেস্ট করা প্রয়োজন। কয়েকদিন আগের রিপোর্ট অনুযায়ী গাজীপুর বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। বায়ুদূষণ মানে এমন দূষণ নয় তা ছাড়িয়েছে সব ধরনের গ্রহণযোগ্য মাত্রা। বায়ুতে সলিড পার্টিকেলের সঙ্গে আর কী কী উপাদান বেশি ছড়াচ্ছে তা আরো ভালোভাবে চিহ্নিত করতে হবে। বাতাসের দূষণ মানুষ এবং প্রাণীর ওপর যে প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। সলিড পার্টিকেলের সঙ্গে কার্বন, সালফার, ক্লোরিন, পটাসিয়ামসহ অন্য কতগুলো উপাদান বর্তমানে বাতাসে আছে এবং কম্পোজিটভাবে এদের প্রভাবীয় কারণ বের করা সময়ের দাবি। লবলং খালের পানি দূষণ থেকেও বায়ুদূষণ ছড়াচ্ছে। যাদের বাড়ি লবলং খালের পাড়ে তাদের ঘরের টিন ২-৩ মাসের মধ্যে মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে খসে পড়ছে। শিশুরা বিভিন্ন ধরনের শ্বাসনালির সংক্রমণে ভুগছে অনেক আগে থেকেই। সাফারি পার্কে গতকালও স্থানীয় এমপি মহোদয়, পরিবেশ, বন ও জয়বায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয় ঘুরে দেখে গেছেন। তদের মুখেও তদন্তের কথাই বারবার আসছিল। কিন্তু তদন্তের সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়টি গবেষণা প্রয়োজন। সঠিক ইম্প্যাক্ট এনালাইসিস প্রয়োজন। বাতাস, পানির মান পরীক্ষা করা প্রয়োজন। খাবারে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া পানি ও বায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কিনা সেটা ল্যাবে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। পার্কের চারদিকে স্বচ্ছ জলধার তৈরি করা প্রয়োজন ও ফোয়ারা দেয়া প্রয়োজন। শব্দ নিয়ন্ত্রণে আরো কার্যকরী ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন। জেনারেটর যারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে ব্যবহার করেন তারা যাতে তাদের চুল্লী নির্দিষ্ট উচ্চতায় ব্যবহার করেন এ ব্যাপারে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। প্রাণীর খাদ্য সিলেকসনে ল্যাবরেটরি পরীক্ষার জন্য বায়োকেমিস্ট ও কেমিস্ট দিয়ে খাদ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেখানে অবশ্যই খাদ্য পরীক্ষার জন্য একটি ল্যাবরেটরি প্রয়োজন বলে মনে করি। অনেক প্রস্তাবনার মধ্যে সবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি সাফারি পার্ক যদি এখানে সঠিকভাবে তার বিস্তৃতি চলমান রাখতে না পারে তবে মানুষের নিরাপত্তাও যে হুমকির মুখে তা স্পষ্টই বোঝা যায়। চিন্তার আধুনিকতা না আসলে এ বিষয়গুলো সমাধান সত্যিকারার্থেই সম্ভব নয়! সাঈদ চৌধুরী – শ্রীপুর, গাজীপুর। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App