×

পুরনো খবর

মানুষের জয় হবে নিশ্চয়ই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:৫৩ এএম

মানুষের জয় হবে নিশ্চয়ই
যুগে যুগে বহু মহামারি মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ১০ হাজার বছর আগে মানুষ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে থিতু হওয়ার সময়েই গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ভুক্ত হয়ে বসবাসের ধারণা পায়। মূলত তখন থেকেই সংক্রামক রোগ মহামারি আকারে রূপ নিতে শুরু করে। প্লেগ, ম্যালেরিয়া, গুটি বসন্ত, কুষ্ঠ, য²া, কালা জ্বর, কলেরা, সার্স, মার্স, এইডস, সুয়াইন ফ্লু, নিপাহ ভাইরাস ও হালের কোভিড-১৯ মহামারির সৃষ্টি হয়েছে। মানবসভ্যতার ব্যাপক উন্নতির সঙ্গে মহামারিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও বাড়ছে বহুগুণে। ভয়ংকর সব মহামারির মধ্যে ৫৪১ খ্রিস্টাব্দে মিসর থেকে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়া জাস্টিনিয়ান প্লেগে তৎকালীন পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ তথা প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ১৩৫০ সালের দ্য ব্ল্যাক ডেথে তৎকালীন পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের মৃত্যু হয়েছিল। ১৮১৭ সালে রাশিয়ায় শুরু হওয়া প্রথম কলেরা মহামারিতে পৃথিবীব্যাপী প্রায় ২৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ১৮৮৯ সালে রাশিয়ান ফ্লুতে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০ কোটি। ১৯৫৭ সালে এশিয়ান ফ্লুতে বিশ্বব্যাপী ১১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাজার মানুষের। ১৯৮১ সালের এইচআইভি/এইডসে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী সাড়ে ৩ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্বব্যাপী ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৫৯ লাখ ৮১ হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত এবং ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার ৭০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারি বাংলাদেশের হানা দেয় ২০২০ সালের মার্চে। তখন থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত কোভিড-১৯ মহামারিতে ১৮ লাখ ৬১ হাজার ৫৩২ জন আক্রান্ত হয়েছে। ২৮ হাজার ৫৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছে ১৬ লাখ ২ হাজার ৫৫০ জন। কোভিড-১৯ বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর একাধিক ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গমন ও মৃত্যুর হার বেশি হলেও বর্তমান ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক হলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না এবং মৃত্যুর হারও সবচেয়ে কম। সাধারণ মানুষের ভাষ্যমতে করোনা দুর্বল হয়ে গেছে মনে করা হলেও এই দুর্বল কিংবা মহামারির হানা কমার পেছনে অবশ্যই কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের যথেষ্ট ভূমিকা আছে। ইতোমধ্যেই দেশব্যাপী সিংহভাগ নাগরিক প্রথম ডোজের আওতায় চলে এসেছে। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাদের ২য় ডোজও শেষের পর্যায়ে। ২য় ডোজ সম্পন্ন হওয়া ব্যক্তিরা বুস্টার ডোজ নিচ্ছেন। কোভিড-১৯ এর আতঙ্ক মানুষের মন থেকে কেটে গেছে সত্যি। তবে একেবারেই চিন্তামুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ ওমিক্রনে আক্রান্ত মানুষের শ্বাসকষ্ট না হওয়া এবং মৃত্যুহার কম হলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ভাষ্যমতে যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি না করানো হলেও বাসাতে যথানিয়মে চিকিৎসাধীনই থাকা জরুরি। কেননা আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে বাসায় থাকা বৃদ্ধ পিতা-মাতা কিংবা দাদা-দাদি কেউ আক্রান্ত হলে ওমিক্রনও তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতির কারণ হবে। ফলে ওমিক্রনকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সময়ে জারিকৃত গাইডলাইন মেনে চলতে পারলে অবশ্যই দ্রুততম সময়ের মধ্যে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। মানুষ মুক্ত বিহঙ্গের মতো পৃথিবীর আলো-বাতাস ভোগ করবে, শান্তির নিশ্বাস ফেলবে। কোভিড-১৯ এর অন্ধকার কাটিয়ে আলোর পথ আর বেশি দূরে নেই। জুবায়ের আহমেদ – শিক্ষার্থী, বিজেম, কাঁটাবন, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App