×

পুরনো খবর

ইউক্রেন সংকটের পরবর্তী অবস্থা কী হতে পারে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:৫৩ এএম

ইউক্রেন সংকটের পরবর্তী অবস্থা কী হতে পারে
বিশ্ব রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উপস্থিত হয়েছে ইউক্রেন সংকট। ইউক্রেনকে নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেখানে রাশিয়া এবং আমেরিকা জড়িয়ে রয়েছে। যার ফলে সংকটের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণমাধ্যমগুলো আজ অনেক বিষয়ে প্রচার করছে। কিন্তু একবারও কি প্রচার করেছে ইউক্রেন সাধারণ মানুষের কথা। না প্রচার করা হয়নি। যেখানে প্রচার করা হয়েছে সামরিক শক্তির কথা। যুদ্ধ একটা জাতির জন্য অভিশাপ, যুদ্ধ কখনোই ভালো কিছু বয়ে আনে না। পূর্বের সব যুদ্ধ এমন কথাই বলে। রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। আমেরিকা পোল্যান্ডে নতুন করে ৩ হাজার সামরিক সেনা মোতায়েন করেছে। রুশ সামরিক বাহিনীতে নিয়মিত টহল নজরদারি চলছে। কৃষ্ণ সাগর নৌযান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব কার্যক্রম যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে গণ্য করা হয়। এখন কথা হলো কেন এমন আগ্রাসী হয়ে উঠল রাশিয়া। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে। তারপর থেকে প্রভাব প্রতিপত্তি হ্রাস পায় রাশিয়ার। কারণ এসব দেশ রাশিয়ার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে স্বাধীন হতে চায়। আর ঠিক সে সময় আমেরিকা এসব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। যার ফলে রাশিয়ার আক্রোশ জন্মাতে থাকে। যার বাস্তবতা আমরা দেখেছি ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়। ক্রিমিয়া দখল করার পর রাশিয়ার বিশ্বাস অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তারা ভাবতে থাকে ইউক্রেন কেউ তারা নিজেদের বলয়ে নিয়ে আসা সময়ের ব্যাপার। আর সেই সময়টাও তারা পেয়ে যায়। কারণ বর্তমান সময়ে বিশ্ব মোড়লরা করোনা মহামারি অর্থনীতি সচল করার দিকে মনোনিবেশ করেছে। অন্যদিকে আমেরিকার তাইওয়ান ও চীন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। তাই রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। এই সেনা মোতায়েন মোটেও ভালো কোনো সংকেত ছিল। না তাইতো যুক্তরাষ্ট্র একটু নড়ে বসে। ইউক্রেনের ওপর যে কোনো হামলার অর্থ হলো আমেরিকার ওপর হামলা। এছাড়াও ইউক্রেন যদি রাশিয়ার হয়ে যায় তাহলে ইউরোপে আমেরিকার প্রভাব-প্রতিপত্তি বহুলাংশে হ্রাস পাবে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে তা কখনো মেনে নিতে পারে না আমেরিকা। যার কারণে এই সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করছে। আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সামনের সপ্তাহে রাশিয়া আক্রমণ চালাতে পারে। যদি রাশিয়া আক্রমণ চালায় তাহলে ইউক্রেনের ৭৫ হাজার বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটবে, বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে খাদ্য ঘাটতি, চিকিৎসা এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর চরম ব্যাঘাত ঘটবে। অন্যদিকে ইউরোপের বৃহৎ জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ হলো রাশিয়া। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যদি তারা জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তাহলে চরম সংকটে পতিত হবে ইউরোপীয় দেশগুলো। ইউক্রেনকে নিয়ে যে যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে সেটা শুধু ইউক্রেন, আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ছড়িয়ে পড়বে পুরো বিশ্বে। এমনটাই সংকেত দিচ্ছে। এই কারণে আমেরিকা রাশিয়ার সঙ্গে কূটনীতিক সমাধান করার চেষ্টা করছে। তবে বারবার ব্যর্থ হয়েছে আমেরিকা। যার কারণে আমেরিকা রাশিয়ার প্রতি বৈরী মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং এই কারণে যুদ্ধ আবশ্যকীয় উঠেছে। ইউক্রেন সরকার ও রাশিয়ার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কারণ তারা রাশিয়ার এমন আচরণ কখনো মেনে নেবে না। অন্যায়ভাবে একটা ভূখণ্ডকে দখল কখনো ভালো কিছু বার্তা দেয় না। তাইতো পশ্চিমাদের দিকে মনোনিবেশ করেছেন। ক্রিমিয়া-ইউক্রেনের একটা অংশ ছিল। আবার রাশিয়া কিছুদিন পরপর ইউক্রেনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। ইউক্রেনের কাছে মোটেও সুবিধাজনক বলে মনে হয় না। তারা অসহায়ত্ব বোধ করে যার কারণে তারা ন্যাটোর সদস্য হতে চায়, যাতে এমন আগ্রাসন থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। ইউক্রেন গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হতে চায়, অন্যদিকে রাশিয়া সমাজতন্ত্র। ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র। যার কারণে ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র হবে এটাই স্বাভাবিক। রাশিয়া যে চিন্তা মাথায় নিয়ে আগ্রাসন চালাতে থাকে সেটা মোটেও ভালো কোনো বিষয় নয়। কারণ আমেরিকা রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানোর জন্য ফ্রান্স-জার্মানি মধ্যস্থতায় অবতীর্ণ হয়েছে। ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানি আমেরিকার সঙ্গে বৈঠক করবে। যাতে উভয়ে রাষ্ট্রীয় যুদ্ধে না জড়ায়, কারণ একটা যুদ্ধ পুরো বিশ্বের অপূরণীয় ক্ষতি বয়ে আনবে। তাই এখন দেখার বিষয় হলো যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির দিকে লক্ষ্য করে দুই দেশের ভূমিকা কোন দিকে যায়। একটা দুর্ঘটনা যেমন সারা জীবনের জন্য কান্না। ঠিক তেমনই একটা যুদ্ধ পুরো জাতির জন্য অভিশাপ। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান- এটাই কাম্য। জাফরুল ইসলাম – শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App