ইভ্যালির রাসেল-শামীমাকে মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের জিম্মায় মুক্তির দাবি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৩:১৭ পিএম
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ইভ্যালি মার্চেন্ট অ্যান্ড কনজ্যুমার কো অর্ডিনেশন কমিটির সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাকিব হাসান। ছবি: ভোরের কাগজ
ইভ্যালি দুষ্টচক্রের হাতে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইভ্যালি মার্চেন্ট অ্যান্ড কনজ্যুমার কো অর্ডিনেশন কমিটি।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাকিব হাসান। এ সময় সংগঠনের সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন, সদস্য শাহ ইমরান হিমেল, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন বলেন, ইভ্যালির বিরুদ্ধে কয়েকজন গ্রাহক কাল্পনিক অভিযোগ করেছে। বর্তমানে ইভ্যালিতে ৭৪ লাখ গ্রাহক ও ৩৫ হাজার মার্চেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে একজন গ্রাহক ৩২ হাজার টাকা পাবেন বলে দাবি করেছেন। তিনি এই টাকার জন্য ইভ্যালির অবসায়ন চেয়েছেন। আমি মনে করি, একটি দুষ্ট চক্র ইভ্যালির পেছনে লেগেছে।
ইভ্যালির এমডি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে নাসির বলেন, ইভ্যালি কোনো অর্থ পাচার করেনি। বরং অন্য ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান অর্থ পাচার করছে। কোম্পানিগুলো প্রতারণা করছে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইভ্যালিতে ৩৫ হাজার মার্চেন্টের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ ও ভোক্তাদের লাখ লাখ টাকা অর্ডার রয়েছে। কিন্তু সেখানে মাত্র ৩২ হাজার টাকার জন্য একজন গ্রাহক ইভ্যালির অবসায়ন চেয়েছেন।
আমরা মনে করি, একটি অপশক্তি ইভ্যালিকে বন্ধ করে লাখ লাখ ভোক্তা ও মাচেন্টদের স্বার্থহানি করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। আমরা জানি রাসেল ও শামীমা নাসরিন ছাড়া কেউই ইভ্যালি পরিচালনা করে আমাদের বকেয়া অর্থ প্রদান করতে পারবে না। রাসেল ব্যতীত মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের সঠিক হিসাব কারও পক্ষে নিরূপণ করা সম্ভব নয়।
বর্তমান পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এই পরিচালনা কমিটি ইভ্যালির বাড়ি বিক্রি না করে ইভ্যালির ব্রান্ড ভ্যালুকে কাজে লাগিয়ে ৫০০-১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ সংস্থান করলে আমরা সাধুবাদ জানাব।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান ইভ্যালি পরিচালনা কমিটির মধ্যে বিভেদ স্পষ্ট। তারা আমাদেরও কোনো কথা শুনছে না। কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি মাকিনের একেক সময় একেক বক্তব্যের কারণে আমরা বিভ্রান্ত হয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব হাসান বলেন, আমরা চাইলে বসে থাকতে পারি। কিন্তু কেউ কী সমাধান দিতে পারবে। রাসেল ভাই ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। কারণ যেহেতু কোম্পানিটি তার। প্রতারণা বলেন, অর্থপাচার বলেন এগুলো হচ্ছে অভিযোগ, প্রমাণিত হলে আমরাও রাসেল ভাইয়ের পক্ষে দাঁড়াব না। প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করাতে আমরা নতুন ব্যবসায়িক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। রাসেল ভাইকে দায়িত্ব দিলেই গ্রাহকদের পণ্য এবং অর্থ ফিরিয়ে দেয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ইভ্যালি চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল কয়েকটি অভিযোগের কারণে কারাগারে। এ কারণে আমাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ইভ্যালির বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ই-কমার্স নীতিমালা হয়েছে। বেশকিছু গাইডলাইন হয়েছে। সেখান ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতারণা প্রায় অসম্ভব।
লিখিত বক্তব্যে রাসেলকে মার্চেন্ট ও ভোক্তাদের জিম্মায় মুক্তির দাবি:
এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন আমরা ইভ্যালির মার্চেন্ট ভোক্তাবৃন্দ, ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও সিইওকে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দিয়ে আমাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখা ও ঋণ পরিশোধের সুযোগ চাই। ইভ্যালির মার্চেন্ট এবং ভক্তদের সমন্বয় কমিটি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাসেলের জামিনের পক্ষে ২০ হাজার ১৮২ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরে লিখিত আবেদন জানিয়েছি। বিশ হাজার একশত বিরাশি জন মার্চেন্ট এবং ভোক্তার সমন্বয় কমিটির জিম্মায় রাসেলকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা হাজার হাজার মার্চেন্ট এবং লাখ লাখ ভোক্তার মুক্তির কথা চিন্তা করে মোহাম্মদ রাসেলকে আমাদের জিম্মায় জামিন দিতে আপনার যথাযথ হস্তক্ষেপ এবং কৃতজ্ঞচিত্তে প্রার্থনা করছি।