×

অর্থনীতি

ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরতে দীর্ঘ অপেক্ষা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:১৫ এএম

ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরতে দীর্ঘ অপেক্ষা

প্রতীকী ছবি

২৪ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০৫ মামলা, ৩০ ই-কমার্সের ব্যাংক হিসাব তলব

বিলাসবহুল রেঞ্জ রোভারসহ সাতটি গাড়ি নিলামে তুলেছে বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। বিক্রির অর্থ অফিস পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজে ব্যয় করতে চায় ইভ্যালির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন আগে ইভ্যালির রহস্যময় দুটি লকারে খুঁজে পাওয়া গেছে মাত্র আড়াই হাজার টাকা। দুটি ব্যাংক হিসাবে থাকা ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খরচের নির্দেশ পেয়েছে ইভ্যালির নতুন পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা কবে নাগাদ টাকা ফেরত পাবেন তা অনেকটাই অনিশ্চিত। যদিও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম তাদের অল্পসংখ্যক গ্রাহকের কিছু অর্থ ফেরত দিয়েছে। গ্রাহকের অর্থ ফেরত দিতে তৎপরতা নেই বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এদিকে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে এ পর্যন্ত ২৪ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সারাদেশের বিভিন্ন থানায় ১০৫টি মামলা রুজু করা হয়েছে। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি, তারা কেন্দ্রীয় ডিজিটাল ই-কমার্স নীতিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ পাবে। শুধু তাই নয়; প্রতারিত গ্রাহকরা ন্যায়বিচার পাবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জানা গেছে, ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সচিবালয়ে গতকাল রবিবার ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (ইউবিআইডি) নামে একটি অ্যাপস উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ই-কমার্স খাতের ব্যবসা করতে এখন ইউবিআইডি নম্বর বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ফলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যারা ব্যবসা করবেন তাদেরও নিবন্ধনের আওতায় আসতে হবে। এ জন্য ইউবিআইডি অ্যাপস নামে একটি অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ডিজিটাল কমার্স এবং ফেসবুকভিত্তিক ১১ প্রতিষ্ঠানকে ডিবিআইডি সনদ দেয়ার মাধ্যমে দেশে এ কার্যক্রমটি শুরু হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ডিবিআইডি নিবন্ধন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে।

জানা গেছে, দেশের ই-কমার্স ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ‘ইভ্যালিকাণ্ড’। প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে রাসেল ও শামীমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তারা কারাগারে। গত বছরের ১৮ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি দেখভাল করতে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করেন উচ্চ আদালত। বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, ইভ্যালির মাধ্যমে ৩ হাজার ৮শ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ টাকাই অন্যান্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে। অথচ বর্তমানে মাত্র ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে রয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি সিটি ব্যাংক ও সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে এই অর্থ তোলার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। মূলত কোম্পানির স্বার্থে ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যবহার করতে বলেছেন আদালত। গত ৩১ জানুয়ারি ইভ্যালির রহস্যময় দুটি লকার খুঁজে পাওয়া গেল মাত্র আড়াই হাজার টাকা। লকার ভাঙার সময় ইভ্যালির চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভেবেছিলাম জরুরি প্রয়োজন মেটাতেও অন্তত লকারে কিছু টাকা থাকবে। কিন্তু আমরা পাইনি। সে অর্থে আমরা নিরাশ হয়েছি।’

এবার ইভ্যালির গাড়ি বিক্রির জন্য নিলামে দিয়েছে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে খোলা নিলামের মাধ্যমে গাড়ি বিক্রয় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ইভ্যালির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর বলেন, বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিলাম হ?চ্ছে। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হ?য়ে?ছে। বিক্রির অর্থ অফিস পরিচালনাসহ যাবতীয় কাজে ব্যয় করা হবে। নিলামের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সাতটি চালু গাড়ি রেজিস্ট্রেশন সনদ, ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস (যে অবস্থায় আছে) ভিত্তিতে খোলা নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে। সাত?টি গাড়ির মধ্যে রয়েছে ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৭০৯৮, রেজি: সন-জুন ২০, রেঞ্জ রোভার, ব্র্যান্ড-ল্যান্ড। ২০২০ সালে তৈরি গাড়িটি ন্যূনতম নিলাম মূল্য শুরু হবে এক কো?টি ৬০ লাখ টাকায়। ঢাকা মেট্রো-গ-৪৫-৪১২৭, রেজি: সন-জানু ২১, টয়োটা প্রিউস, ব্র্যান্ড-টয়োটা। ২০১৫ সালে তৈরি গাড়িটির ন্যূনতম নিলাম মূল্য শুরু হবে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৭৫১২, রেজি: সন-জুলাই ২০, টয়োটা চিএইচআর হাইব্রিড, ব্র্যান্ড- টয়োটা। ২০১৭ সালে তৈরি গাড়িটির ন্যূনতম নিলাম মূল্য শুরু হবে ১৮ লাখ টাকায়। ঢাকা মেট্রো-গ-৪৫-৪৬২০ এবং ঢাকা মেট্রো-গ-৪৫-৪৬২১, রেজি: সন-জানু ২১, টয়োটা এক্সিও, ব্র্যান্ড টয়োটা। ২০১৫ সালে তৈরি গাড়ি প্রত্যেকটির নিলাম মূল্য ৯ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-৯৬১৫, রেজি: সন-জানু ২১, হোন্ডা ভেসেল, ব্র্যান্ড হোন্ডা। ২০১৫ সালে তৈরি গাড়িটি ন্যূনতম নিলাম মূল্য ১৬ লাখ টাকা। ঢাকা মেট্রো-চ-৫৬-৪৮২২, রেজি: সন-জুন ২০, মাইক্রোবাস, ব্র্যান্ড টয়োটা। ২০১৫ সালে তৈরি গাড়িটি ন্যূনতম নিলাম মূল্য শুরু হবে ১২ লাখ টাকা।

জানা গেছে, প্রতারণা করে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে চালানো অভিযানে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন আলোচিত ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, এসপিসি ওয়াল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আল আমীন ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক শারমীন আক্তার, কিউকমের প্রধান নির্বাহী রিপন মিয়া ও রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া মামলা রয়েছে এমন ২৪টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- ইভ্যালি, যে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সারাদেশে ২০টি মামলা রুজু করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। এরপরই রয়েছে ই-অরেঞ্জ যাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সাতটি। ২টি করে মামলা হয়েছে রিংআইডি, গ্লোবাল গেইন ই-কমার্স ও ধামাকা শপিংয়ের বিরুদ্ধে, গেøাবাল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩টি, আনন্দের বাজারের নামে ১টি, আনন্দ বাজারের নামে ২টি, দালাল প্লাস ২টি, এমাসবিডি ২টি, ফাল্গুনি শিপ বিডি ১টি, সিরাজগঞ্জ শপ ১টি, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস ২টি, ২৪টিকিটি লিমিটেড ৩টি, নিরাপদ শপ ১টি, র‌্যাপিড ক্যাশ ক্যাশ-কুইক অনলাইন ইলোনস অ্যাপ ১টি, সহজ লাইফ এন্ড লাইভলি লাইফ ২টি, এহসান গ্রুপ ৪টি, তাহলে ডট কম ১টি, আলিফওয়ার্ল্ড ১টি, মাইক্রোট্রেড গ্রুপ ডট কমের নামে ১টি, ডিজাইন ফ্যাশন ১টি এবং জিকা বাজার লিমিটেডের নামে ১টি মামলা রুজু করা হয়েছে। অর্থাৎ ২৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সারাদেশে ১০৫টি মামলা রুজু করেছেন প্রতারিত গ্রাহকরা। পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স স্পেশাল ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সিআইডিসহ অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক অভিযুক্ত কিংবা ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে এমন ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত তালিকা চাওয়া হয়। ওই পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডিসহ বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ই-কমার্স সংক্রান্ত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সমন্বয়ক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বকেয়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ফেরত দেয়া হবে। এ কারণেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সব মামলার তথ্য মন্ত্রণালয়ে জানাতে পুলিশ সদর দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছিল। সিআইডির তথ্যের ভিত্তিতে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে গ্রাহকদের টাকা ফেরতের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকেও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে। তিনি বলেন, গ্রাহক স্বার্থ সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়ে একটি সমাধানের পথ বের করতে কাজ করা হচ্ছে। প্রতারিত গ্রাহকরা ন্যায়বিচার পাবেন।

টাকা ফেরত দেয়ার উদ্যোগ : যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই, পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের ক্রেতাদের আটকে থাকা টাকা দ্রুত ফেরত দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেল থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৩০ জুন ই-কমার্স নির্দেশিকা জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার পর বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান টাকা পাবে। তবে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহ না করলে টাকা কীভাবে ক্রেতার কাছে ফেরত যাবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। একটি এসক্রো সার্ভিস চালুর কথা বলা হলেও তা এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনেক গ্রাহকের টাকা পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছে আটকে গেছে। ৩০ জুনের পর থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানিগুলোর কাছে ২১৪ কোটি টাকা আটকে পড়েছে। এসব টাকার একটি বড় অংশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ফ্রিজ করে রাখার জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে অনুরোধ করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ টাকা ছাড় করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সিআইডিকে অনুরোধ করে। পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়েরও মতামত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক মতামত পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে চিঠিতে বলা হয়েছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো মামলা নেই, তাদের গ্রাহকদের টাকা দ্রুত ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইতোমধ্যে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের যেসব ক্রেতা আগাম টাকা পরিশোধ করে পণ্য পাননি, তাদের ৫৬ কোটি ৮৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৪ টাকা ছাড় করতে ৩ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এগুলো হচ্ছে- ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর এমডিদের এ চিঠি পাঠানো হয়। ফস্টার করপোরেশনের ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা কিউকমের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এ চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে টাকা ছাড়ের জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ২৩ জানুয়ারি কিউকমের ২০ গ্রাহককে ৪০ লাখ টাকা ফেরত দেয়। এ গ্রাহকেরা কিউকমে পণ্যের ক্রয়াদেশ দিয়ে দীর্ঘদিন পণ্য বা টাকা কিছুই পাচ্ছিলেন না। তার আগে কিউকম ও ফস্টার যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রথম দফায় ৬ হাজার ৭২১ গ্রাহকের একটি আংশিক তালিকা দেয়। তাদের ফেরত দেয়া হবে মোট ৫৯ কোটি ৫ লাখ টাকা।

ইভ্যালি-দারাজসহ ৩০ ই-কমার্সের ব্যাংক হিসাব তলব : দারাজ, আলেশা মার্ট, ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ ৩০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে তাদের লেনদেনসহ ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটির ব্যাংক হিসাব তলব ও ফ্রিজ করা হয়। বিএফআইইউর চিঠির সঙ্গে তথ্য পাঠানোর জন্য একটি ফরমও দেয়া হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লেনদেন থাকা ব্যাংকের শাখা, হিসাবের নাম, নম্বর, ধরন ও তা খোলার তারিখ, মোট জমা ও উত্তোলন এবং বর্তমান স্থিতি জানাতে বলা হয়েছে। হিসাব সচল নাকি বন্ধ তাও জানাতে হবে। ব্যাংক হিসাব তলবের তালিকায় আরো রয়েছে- কিউ কম, আলাদিনের প্রদীপ, বুম বুম, প্রিয়শপ, ধামাকা শপিং, সিরাজগঞ্জ শপ, আদিয়ান মার্ট, ওয়ালমার্ট, নিডস, দালাল প্লাস, ২৪ টিকেটি, থলে, উই কম, ইনফিনিটি মার্কেটিং, আনন্দের বাজার, আকাশ নীল ব্রাইট হ্যাশ, অ্যানেক্স ওয়ার্ল্ড ওয়াইড, আমার বাজার, আস্থার প্রতীক, বাংলাদেশ ডিল, বাড়ি দোকান ডট কম, শ্রেষ্ঠ ডট কম, অ্যামস বিডি, নিরাপদ ও আলিফ ওয়ার্ল্ড। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের তথ্য নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App