×

অর্থনীতি

নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতিতে ক্ষতিগ্রস্থ তামহা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:২৫ পিএম

নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতিতে ক্ষতিগ্রস্থ তামহা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা
নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতিতে ক্ষতিগ্রস্থ তামহা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা

বুধবার ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে শেয়ার লেনদেন ও ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) স্থগিত হওয়া তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীরা অর্থ ফেরতের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিনিয়োগকারীরা। এ সময় তামহা সিকিউরিটিজে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারী বাবুল, নজরুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, আবু তাহের, মো. ফকরুল ইসলাম, রওশনারা হোসেন, সোহরাব হোসেন, সোহেল সাহেব, রুহুল হোসেন, শাজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বিনিয়োগকারীরা বলেন, সম্প্রতি তামহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড সদস্য নং ৮১ মালিক কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়। পরে ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর হাউজটির ট্রেড স্থগিত করে দেয় বিএসইসি। এরপর আমরা সিডিবিএল এ যোগাযোগ করে জানতে পারি আমাদের বিও হিসেবে কোনো শেয়ার নেই। এমনকি আমাদের দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীদের মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করে তামহা সিকিউরিটিজ। যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের এই জালিয়াতি জানতে না পারে। তারা যে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করত সেটা থেকে আমাদেরকে ক্রয় বিক্রয়ের এসএমএস ও মেইলে প্রতিদিনের বাজারের আপটেড দিতো। এ কারণে আমরা তাদের জালিয়াতি বুঝতে পারিনি। সিকিউরিটিজ হাউজটির মালিকসহ তার দুই ভাই বোন প্রায় শত কোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন বিনিয়োগকারীদের আবেদন ছাড়া সিডিবিএল এ মোবাইল নাম্বার কিভাবে পরিবর্তন করল। ডিএসই এর মনিটরিং এর অভাবে আজ আমরা সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি ঠিক মতো মনিটরিং করতো তাহলে এ ধরনের জালিয়াতি ঘটতো না বলে আমরা মনে করি। কারণ এই জালিয়াতি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে তামহা সিকিউরিটিজ।

বিএসইসি চেয়ারম্যান, আমরা ধারনা করছি তামহা সিকিউরিটিজ এর মালিক ডা. হারুনই বিনিয়োগকারীদের এই অর্থ আত্মসাত করেছেন। তাই যতদ্রুত সম্ভব তাকে বিচারের আওতায় এনে আমাদের টাকা/ শেয়ার ফেরতের উদ্যোগ নিন। আমরা প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী আজ তিন মাস ধরে পথে পথে ঘুরেছি। কখনো বিএসইসিতে আবার কখনো ডিএসইতে। কেউ আমাদের লোপাট হওয়া টাকা/ শেয়ার ফেরতের আশ্বাস দিচ্ছেন না। সবকিছু হারিয়ে আমরা এই করোনায় অসহায় হয়ে পড়েছি। এমনকি নতুন বছরে ছেলেমেয়েদর লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিনিয়োগকারী ফখরুল ইসলাম বলেন, কোম্পানি ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান করার আশ্বাস দিলেও আমাদের কোনো সমাধান হয়নি। আমরা বিএসইসি ও ডিএসই থেকে এখনও কোনো আশ্বাস না পেয়ে হতাশ।

‘হারুন নিজেকে বাচাঁনোর জন্য অফিসের স্টাফদের উপর দোষ দিয়ে নিজেও বিএসইসিতে অভিযোগ জানিয়েছেন যে তার প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু মূলত তিনি নিজেই এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’

ভুক্তভোগী মজিবুর রহমান বলেন, আমার ১৩ লক্ষ টাকা এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছি কিন্তু এখন দেখছি আমার কোনো টাকা নেই। আমার চাকরির পেনশনের সমস্ত টাকা হারিয়েছি এখানে। টাকা হারিয়ে এখন আমার সংসার চালাতে সমস্যায় পড়েছি। আমি এবং আমার স্ত্রী খুবই অসুস্থ এ পরিস্থিতি আমরা অনেক সমস্যায় আছি।

মজিবুর রহমান বলেন, কোম্পানির প্রক্রিয়ায় এখনও আমাদের শেয়ার এবং টাকা দেখাচ্ছে যেটা সঠিক নয়। কারণ সিডিবিএলের কাছে কোনো তথ্য নেই।

সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যনের কাছে তাদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত দেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে স্টক ব্রোকারেজ হাউজ তামহা সিকিউরিটিজের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়।

এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুরোধে গত ৫ জানুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশিদসহ প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App