×

জাতীয়

১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘটের হুমকি পেট্রোল পাম্প মালিকদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৩:৫৩ পিএম

১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ধর্মঘটের হুমকি পেট্রোল পাম্প মালিকদের

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন।

জ্বালানি তেলের বিক্রয় কমিশন সাড়ে ৭ শতাংশ না বাড়ালে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের সকল ডিপো থেকে জ্বালানী তেল উত্তোলনে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্ট অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল, মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ মোমিন, সহ-সভাপতি আব্দুল আওয়াল জ্যোতি, মাহবুবুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব শেখ ফরহাদসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জ্বালানী মন্ত্রণালয় ও বিপিসি কর্তৃপক্ষ একক সিদ্ধান্তে বিবেচনাহীনভাবে জ্বালানী তেল বিক্রয়ের উপর কমিশন লিটার প্রতি মাত্র ২০ পয়সা বৃদ্ধি করেছে। যেখানে আমরা জ্বালানি তেলের মুল্য বৃদ্ধির অনেক আগে থেকেই বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি, সরকারী বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি, সর্বোপরি উর্ধমূল্যের বাজারে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধিতে জ্বালানী তেল বিক্রয়ের উপর কমিশন ১.৬০ টাকা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি করে আসছি। সেখানে সরকার গত ২০২১ সালে ৪ নভেম্বর ডিজেলের মূল্য এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করলেও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের জন্য কোনরূপ কমিশন বৃদ্ধি করেননি।

চলতি বছর ৬ জানুয়ারি বিপিসির ডাকা মিটিংয়ে আমাদেরকে একটি সম্মানজনক কমিশনের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন। কিন্তু কার্যত দুঃখজনকভাবে বিপিসি ও জ্বালানী মন্ত্রণালয় জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীদের প্রতি চরম উদাসীনতা দেখিয়েছেন। এখানে উল্লেখ্য যে, জ্বালানী তেল বিক্রয়ে তাদের লোকসান ঠেকাতে লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে। অথচ যাদের মাধ্যমে এই পুরো তেল বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তাদের ব্যবসার প্রতি বিন্দুমাত্র সুবিচার করা হয়নি। ফলে সকল জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পই প্রতিদিন গড়ে ২০০০ লিটারের নিচে ডিজেল বিক্রি করে থাকে। ফলে .২০ পয়সা দিয়ে গড়ে তাদের মাসিক ১২ হাজার টাকা আয় বৃদ্ধি পায়। যা দিয়ে অতিরিক্ত মূলধন বিনিয়োগ এবং সকল বৃদ্ধি পাওয়া খরচ চালানো দূরুহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি সকল বিভাগীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ মত কর্মসূচী ঘোষণা রেখে কঠোর কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেন, বর্তমান কোভিডের কারণে আমরাও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। ইদানিং ফিলিং স্টেশনের উপর আরোপিত বিভিন্ন সংস্থার অমীমাংসিত লাইসেন্স গ্রহণের ব্যাপারে হয়রানি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বিপুল অংকের টাকা (অফিস খরচ হিসেবে) তারা দাবী করছে, যা আমাদের কমিশনের সীমিত আয় দিয়ে প্রদান করা সম্ভব না।

মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন বলেন, আমরা দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে ও হরতাল ধর্মঘটে কখনই যেতে চাইনি। আমরা আলাপ আলোচনা ও বৈঠকের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধান করতে চেয়েছি। গত ৩ বছর ধরে দাবি-দাওয়া নিয়ে বহু পত্র দিয়েছি ও আলোচনা করেছি, বৈঠক করেছি। অথচ বৈঠক হচ্ছে ঠিকই কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি। পরবর্তীতে শেষ পর্যন্ত এসোসিয়েশনের মতামতকে উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্তে সরকার জ্বালানি তেল ডিজেলের ০.২০ পয়সা বিক্রয় কমিশন ধার্য্য করে। যা জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের আশাহত করেছে।

আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায় সম্ভব নয় বিধায় সকল জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তক্রমে আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন ও জ্বালানি তেলের বিক্রয় কমিশন সাড়ে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা না হলে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশের সকল ডিপো থেকে জ্বালানী তেল উত্তোলনে বিরত থাকবে।

এসময় বেশ কিছু দাবি-দাওয়া পেশ করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে জ্বালানী তেল বিক্রয়ের প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করা। জ্বালানী তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট যাহা গেজেট আকারে প্রকাশ করা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল করা।

ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা। মালিক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরী শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা চালু করার জন্য বীমা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সকল জ্বালানী ডিপো সংলগ্ন ট্যাংকলরী শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নিশ্চিত করা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App