×

জাতীয়

শৃঙ্খলা আনতে সচিবালয়ে প্রবেশ পাস ও কার্ড বদল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৪৫ এএম

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের সব ধরনের পাসে পরিবর্তন আসছে। বদলে যাচ্ছে সিনিয়র সচিব থেকে পরিচ্ছন্নকর্মীদের পরিচয়পত্র। এমনকি গাড়ির স্টিকারও পরিবর্তন হচ্ছে। মূলত, সচিবালয়ের ভেতরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সব উপসচিব ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাইক্রোবাসসহ নিরাপত্তার কোনো গাড়ি সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। সেসব গাড়ি রাখতে হবে মুক্তাঙ্গনে। কমানো হবে সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের সংখ্যাও। এসব বিষয় জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতি কর্মদিবসে সচিবালয়ের ভেতরে লোকজনের গাদাগাদি অবস্থা হয়ে যায়। গাড়ি রাখার জায়গারও সংকট দেখা দেয়। যার বড় একটি অংশ থাকে তদবির পার্টি। এসব কারণে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তদবিরকারদের কারণে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং সিনিয়র সচিব, সচিবসহ কর্মকর্তারা বিব্রতবোধ করেন। এক মন্ত্রণালয়ের পাস নিয়ে লোকজন ঘুরে বেড়ায় সারা সচিবালয়। সব মিলিয়ে সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কয়েক দফা সভা করেছেন। সভায় সিনিয়র সচিব থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীর পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার বদলে নতুন করে ইস্যু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন পরিচয়পত্রে যুক্ত থাকবে চিপস ও ছবি। সব মন্ত্রণালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। গাড়ি ও মোটরসাইকেল প্রবেশের জন্য ইস্যু করা প্রচলিত স্টিকার/পাস বদল করার কাজও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে সাংবাদিকদের নামে ইস্যু করা স্থায়ী ও অস্থায়ী অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কীভাবে এই কার্ড কমানো যায় সেই উপায় খোঁজা হচ্ছে। উপায় বের করে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নতুন করে ইস্যু করা হবে। যাতে চিপস স্থাপনের পাশাপাশি ব্যবহারকারীর ছবিও সংযোজন করা হবে। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কমাতে বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গত ২৫ জানুয়ারি ইস্যুকৃত চিঠিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা ভবন মোড় থেকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত অর্থাৎ আব্দুল গণি রোডে রিকশা বা ভ্যান চলাচল বন্ধ, সচিবালয়ের সামনে ও দেয়ালে কোনো ধরনের তোরণ তৈরি করা যাবে না, ঝোলানো যাবে না ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন। সেই সঙ্গে সব উপসচিব ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাইক্রোবাসসহ নিরাপত্তার কোনো গাড়ি সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। সেসব গাড়ি রাখতে হবে মুক্তাঙ্গনে। চিঠি পেয়ে পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য সব মন্ত্রণালয় তাদের অধীনে থাকা বিভাগ ও দপ্তরগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানা গেছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং একটি উচ্চ সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। মাত্র ১৭ দশমিক ৫৩ একর জমিতে ১১টি ছোট-বড় ভবন ও ৬টি ক্যান্টিন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন সভায় আসা সদস্য ও দর্শনার্থীসহ প্রায় ২৫ হাজার লোক প্রতিদিন সচিবালয়ে গমনাগমন এবং ৫ থেকে ৬ হাজার যানবাহন প্রবেশ করে। জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন খলিফা স্বাক্ষরিত চিঠিতে চার ধরনের নির্দেশনার মধ্যে যে বিষয়টি নিয়ে সমস্যা হতে পারে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মনে করছে সেটা হলো বাইরে গাড়ি রাখা নিয়ে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সচিবালয়ে কর্মরত সব উপসচিব এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মাইক্রোবাস মুক্তাঙ্গনে বা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পার্কিংয়ে অবস্থান করতে হবে, সচিবালয়ে অবস্থান করতে পারবে না। নিরাপত্তার কাজে থাকা গাড়ি কোনোভাবেই সচিবালয়ে প্রবেশ করবে না। এসব যানবাহন বাইরে পূর্বপাশে অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট থেকে পল্টন মোড়ের সড়কটিতে অবস্থান করবে। তবে মুক্তাঙ্গনে পার্কিংয়ের বিষয়ে ডিএসসিসির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ আহম্মেদ। এসব যানবাহন যদি রাস্তায় রাখা হয় তাহলে করপোরেশন ও বিভিন্ন সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখিও হতে পারে বলে জানান তিনি। অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম টিপু সুলতান বলেছেন, জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে যে আদেশ জারি করা হয়েছে তা সবার সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো বাস্তবায়নে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App