×

সম্পাদকীয়

আসুন, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ০১:০২ এএম

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ফলে নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। গতকাল ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, কুড়িগ্রামে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা চলতি বছরের সারাদেশের রেকর্ডকৃত তাপমাত্রার মধ্যে সর্বনিম্ন। হাড়কাঁপুনি শীতে বিশেষ করে গরিব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি-হাঁচি-জ্বর, হুপিংকাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। তবে আগে যেভাবে দেশে শীতে মানুষ মারা যেত, এই হার কমে আসছে। এটা ইতিবাচক দিক বলা যায়। জানা গেছে, গত শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাসহ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের ১৭ জেলার তাপমাত্রা এখন ১০-এর নিচে অবস্থান করছে। এছাড়া ১০ ডিগ্রির মধ্যে আছে আরো ৭ জেলার তাপমাত্রা। এমতাবস্থায় কনকনে শীতের কারণে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। শীত মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতি খুব সামান্য। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তীব্র শীতের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। খবরে প্রকাশ- রংপুর, কুড়িগ্রামে শৈত্যপ্রবাহে গরম কাপড়ের অভাবে শীতের কষ্টে ভুগছে শিশু, বৃদ্ধসহ নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষ। দেশব্যাপী বয়ে যাওয়া তীব্র শৈত্যপ্রবাহের বিস্তার ঘটেছে রাজধানীতেও। আকস্মিক তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ শৈত্যপ্রবাহের জন্য অনেকাংশে দায়ী বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন। উপমহাদেশেও আবহাওয়ার ভাবগতি বিশেষ সুবিধার নয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, হিমাচল প্রদেশসহ উত্তর খণ্ডে চলছে শীতের তাণ্ডব। হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্বতমালা থেকে ধেয়ে আসছে ঘন কুয়াশামালা, সুতীব্র হিমেল প্রবাহ। এ দেশেও শীতে যে কোনো দুর্যোগ-দৈবপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর দরকার এখনই। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্রসহ কম্বল বিতরণের খবর অবশ্য আসছে গণমাধ্যমে। তবে তা যথেষ্ট নয়, এ ধরনের তৎপরতা আরো বিস্তৃত হওয়া উচিত। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের এখনো তেমন সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে না, দু-চারজন ব্যতিক্রম ছাড়া। হতদরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র সরবরাহ সরকারের সামর্থ্যরে বাইরে নয়, তবে দরকার সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন। দেশে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাও পারে শীতার্ত দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোও বিভিন্ন স্থানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে বাড়িয়ে দিতে পারে সহযোগিতার হাত। বিত্তবানদের যৎসামান্য ভালোবাসা ও সহানুভূতিই পারে শীতার্ত মানুষের হৃদয়ে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিতে। আসুন আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App