×

সারাদেশ

মনপুরায় বিদ্যুতের খুঁটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৫৩ পিএম

মনপুরায় বিদ্যুতের খুঁটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ টাকা!

ভোলার মনপুরায় সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানির বিরুদ্ধে। সম্পূর্ন বিনা পয়সায় এসব খুঁটি বসানোর নিয়ম থাকলেও খুঁটি প্রতি ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। এছাড়াও সংযোগ সড়কে খুঁটি বসাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার একাধিক প্রমান রয়েছে। নিয়মিত আবাসিক সংযোগ নিবন্ধিত গ্রাহকরা অবেদন করেও পাচ্ছেন না এসব সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি।

জানা যায়, মনপুরা উপজেলাটি ভোলা জেলা শহর থেকে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ হওয়ায় এখানে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবুশন কোম্পানীর (ওজোপাডিকো) মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুতে’র আওতায় ওজোপাডিকোর বিদ্যুত সম্প্রসারনের লক্ষে পুরনো লোহার খুঁটি তুলে নেয়া হচ্ছে। লোহার খুঁটি সরিয়ে সিমেন্টের তৈরি খুঁটি বসানো হচ্ছে মূল সড়কসহ সংযোগ সড়কগুলোতে।

বরিশালের ঠিাকাদারি প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানি দরপত্র আহবানের মাধ্যেমে এই খুঁটি বসোনোর দায়িত্ব পায়। প্রথম পর্যায়ে উপজেলা সদর হাজীর হাট ইউনিয়নে ১ হাজার খুঁটি বসানোর কার্যক্রম চলছে। কিছু খুঁটি না বসাতেই গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানীর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রাহক সুমন, কামরুল, বিপ্লব, আলাউদ্দিন, লোকমান জানান, আমাদের নিবন্ধিত বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। আমাদের বাড়িতে লোহার পিলার (খুঁটি) রয়েছে। অথচ আবেদন করার পরও আমরা সিমেন্টের তৈরী নতুন খুঁটি পাচ্ছিনা। পুরনো লোহার খুঁটি বেঙ্গে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎ চলছে। খুঁটিপ্রতি ৫ হাজার টাকা না দিলে কোন খুঁটি দেয়া হবেনা বলে জানান ঠিকাদার।

এদিকে যাদের বাড়িতে ওজোপাডিকোর বিদুতের কোন আবাসিক সংযোগ নিবন্ধন নেই তাদের বাড়িতে দেখা গেছে সরকারি বিদ্যুতের নতুন খুঁটি ও তার সংযোগ। যাদের বাড়ি মুল সড়ক থেকেও অনেক দুরে সেসব বাড়িতেও দেখা যাচ্ছে বিদ্যুতের একাধিক নতুন খুঁটি। রাস্তা থেকে দুরে হওয়ায় একটি বাড়ির জন্য ৩টি, ৪ টি বা ৫টি নতুন সিমেন্টের খুঁটিও বসানো হয়েছে শতাধিক বাড়িতে। অথচ পুরনো নিবন্ধিত গ্রাহকরা নতুন খুঁটি পাচ্ছেন না।

এব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনিবন্ধিত একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী ভবিষ্যতে মনপুরায় জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুত চালু হবে। সেজন্য আমরা খুঁটিপ্রতি ৫ হাজার টাকা দিয়েছি জে.এন.জে কোম্পানীর ঠিকাদার মো. শাহীনের ছেলে সোহানকে। আমাদের বাড়ি মুল রাস্তা থেকে দুরে হওয়ায় ৪/৫টি পিলারের প্রয়োজন হয়েছে।

এব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানির সত্ত্বাধিকারি মো. শাহীন বলেন, সরকারি পরিকল্পনা মোতাবেক আমাদের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। পুরনো সংযোগসহ মূল সড়ক ও সংযোগ সড়কে খুঁটি বসানোর পরিকল্পনা কাঠামো আছে। তবে আমার ছেলে সোহান কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমার জানা নেই।

এছাড়াও সংযোগ সড়কে খুঁটি বসানোর অনুমোদিত পরিকল্পনা থাকলেও কিছু কিছু সড়কে এখনো খুটি বসানো হয়নি। সেসব সংযোগ সড়কে নতুন খুঁটি দেখা যাচ্ছে সেগুলো টাকার বিনিময়ে বসানোর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি সংযোগ সড়কের সকল বাসিন্দাদের কাছ থেকে মাথাপিচু হাড়ে দালালদের মাধ্যমে খুঁটিপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে।

অনিয়মের ব্যাপারে ওজোপাডিকোর উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলি আব্দুস সালাম জানান, সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর জন্য কোন প্রকার টাকা নেয়া হয়না। এব্যাপারে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। তার পরও যদি কেউ টাকা দিয়ে থাকেন তার দায় ওজোপাডিকোর নয়।

এব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. শামীম মিঞা জানান, সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি সম্পূর্ন বিনামূল্যে বিতরনের নিয়ম রয়েছে। খুঁটি বসাতে টাকার নেয়ার অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রমানসাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App