×

জাতীয়

করোনার চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি মৃত্যু অসংক্রামক রোগে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২:২৮ পিএম

করোনার চেয়ে দেশে ১০ থেকে ২০ গুণের বেশি মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে। সংক্রামক রোগের চেয়ে অসংক্রামক রোগে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু হলেও সংক্রামক রোগের প্রতি গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়। দেশে মোট মৃত্যুর ৭০ শতাংশ মারা যায় অসংক্রামক রোগে। এদিকে গুরুত্ব না দিলে ২০৪০ সালে এই হার ৭০ থেকে বেড়ে ৮০ শতাংশে উঠে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) প্রথম জাতীয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম পর্বে যোগ দিয়ে তারা এসব কথা বলেন। ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে ৩ দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২৬ জানুয়ারি শুরু হওয়া সম্মেলন শেষ হবে ২৮ জানুয়ারি। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ ৩০ টি দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সম্মেলনের প্রথম পর্বে স্বাস্থ্য অর্থ ইউনিটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ বলেন, করোনায় সারাবিশ্ব এই মুহুর্তে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমাদের দেশে করোনায় যে মৃত্যু, অসংক্রামক কোনো রোগে মৃত্যু তার চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণেরও বেশি। শুধু ধূমপান জনিত কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে সাড়ে তিনশ মানুষের। ক্যান্সার, টিভি, হার্ট ডিজিসসহ সবগুলোই অসংক্রামক রোগ এবং সবগুলোর কারণে যে মৃত্যু হার, প্রত্যেকটির মৃত্যুর হার করোনায় মৃত্যুর থেকে ৫ গুণ। কিন্তু কেন যেন আমরা শুধু সংক্রামক রোগের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বিভিন্ন গবেষণা তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দেশে এই মুহুর্তে ৮.৪ মিলিয়ন মানুষ ডায়বেটিসে আক্রান্ত। সবাইকে পরীক্ষা করলে সংখ্যা বাড়তে পারে। তাদের শুরু ইনসুলেন্সের জন্য বছরে খরচ হচ্ছে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অন্য বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। সরকারের স্বদিচ্ছার ঘাটতি তো নেই জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার টিকার জন্য এবার সরকারের ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একটি তহবিল আছে, সেখান থেকেও বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়া হয়ে থাকে। সবমিলিয়ে আমরা যদি হিসেব করি তাহলে ১০ ভাগের কাছাকাছি হবে। একটি গবেষণার বরাত দিয়ে বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৬৭.৫ ভাগ অর্থ জনগণ পকেট থেকে ব্যয় করে। এটি নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। এখানেও একটি হিসেব বারবার বাদ পড়ে যায়। যারা সরকারী কর্মচারী রয়েছেন তাদের জন্য সরকার প্রতিমাসে হেলথ অ্যালাউন্স দিয়ে থাকে দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার পর্যন্ত। এটির পরিমাণও ছয় হাজার কোটি টাকা। এটি কিন্ত কাউন্টে আনা হয় না। সবকিছু কাউন্টে আনলে হয়তো সরকারের অংশগ্রহণ আরও বেশি হতো। থোক বরাদ্দ চলমান অর্থ বছরে করোনার কারণে যা খরচ করেছে সেটি কাউন্ট করলে সরকারের অংশগ্রহণ অনেক বেশি হবে। অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য নেই। যা বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে আমরা সবসময় সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারিনা। সরকারের স্বদিচ্ছার ঘাটতি তো নেই। আমরা অনেক বিষয়ে অগ্রগামী চিন্তা করছি। কিন্তু সেই চিন্তাগুলোকে সমন্বিতভাবে পূরণ করতে পারলে অসংক্রামক রোগ থকে আমরা অনেকাংশে রক্ষা পেতে পারি। গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যত মৃত্যু হয় তার ৭০ ভাগই অসংক্রামক রোগে। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। ২০৪০ এ এই হার হয়তো ৮০ শতাংশে উঠে যাবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস। আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর আরবান হেলথ (আইএসইউএইচ) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জো আইভি বাফর্ড, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি টিম লিডার (ব্যাংলাদেশ) সাধনা ভাগওয়াত, ওয়ার্ল্ড ওরবেস্টি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জন উইলডিং, অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্ট্রর ডা. মুনির আহমেদ, ইউনিভার্সেল মেডিকেল রিসার্স সেন্টারের রিসার্স প্রধান অধ্যাপক ডা. রেদওনুর রহমান, বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হোসেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App