×

সম্পাদকীয়

অবৈধ পথে ভয়ংকর যাত্রা বন্ধ করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩৯ এএম

অবৈধ পথে ভয়ংকর যাত্রা বন্ধ করুন

বলার অপেক্ষা রাখে না, বৈধভাবে বিদেশে যাওয়ার প্রায় সব পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই অবৈধ উপায়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এতে তারা প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রায় মৃত্যুর খবর নতুন নয়। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও জীবনে স্বপ্নের হরিণ ধরতে ঝুঁকি নিয়ে আফ্রিকার দেশ লিবিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশ করছে বাংলাদেশিসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা। সর্বশেষ, লিবিয়া থেকে ইতালির ল্যাম্পেদুসা যাওয়ার পথে নৌকায় হাইপোথার্মিয়ায় (শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস) আক্রান্ত হয়ে ৭ বাংলাদেশি অভিবাসী মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার ইতালির অ্যাগ্রিজেনটো শহরের প্রসিকিউটর লুইগি প্যাট্রোনাজ্জিও এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। অভিবাসীদের বহনকারী ওই নৌকায় অন্তত ২৮০ জন ছিলেন; যাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ এবং মিসরের নাগরিক। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্য মতে, ভূমধ্যসাগর ব্যবহার করে ইউরোপে প্রবেশকারীর সংখ্যায় বাংলাদেশিদের অবস্থান চতুর্থ। গত ৯ বছরে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যেতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যানবিষয়ক দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ১ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে। ইতালির সরকারি তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ইতালির বিভিন্ন বন্দরে ১ হাজার ৭৫১ জন অভিবাসী পৌঁছেছে। ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে লিবিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার পথটি হচ্ছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। গত ৫ বছরে ওই পথ দিয়ে ইতালি যাওয়ার সময় প্রতি ৭০ জন মারা গেছে। বিদেশ গমনেচ্ছুদের দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। মৌখিক প্রচারণায় বলা হয় শিপ দিয়ে তারা ইউরোপের মানবাধিকার দেশ ইতালিতে পাড়ি জমান। বাস্তবতা হলো, শিপ নয় এ যেন মৃত্যুর এক ফন্দির নাম প্লাস্টিকের বোর্ড। প্রত্যক্ষদর্শী এমন অনেকেই আছেন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে জীবন ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন। অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পথে বিদেশযাত্রা রোধে ও দালাল প্রতারকদের দৌরাত্ম্য কমানোর ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় জনশক্তি রপ্তানির উদ্যোগ বেশ আশার আলো দেখিয়েছিল। কিন্তু তা কাক্সিক্ষত মাত্রায় কার্যকর না থাকায় এসব অবৈধ তৎপরতা থামেনি। অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা রোধ ও বিদেশে নিরাপদ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার জন্য বৈধ পথে কম খরচে প্রবাসে কর্মসংস্থানের সরকারি উদ্যোগে গতি আনা, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করা জরুরি। প্রায় ৭ বছর ধরে কোনো বাংলাদেশি অভিবাসী ইতালিতে বৈধভাবে প্রবেশ করতে পারছে না। ইতালির শ্রমবাজার নতুন করে উন্মুক্ত করার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। আগামীতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে অভিবাসী ও উদ্বাস্তু সংক্রান্ত বৈশ্বিক চুক্তি করার ব্যাপারে বাংলাদেশকে কণ্ঠ সোচ্চার রাখতে হবে নিজেদের স্বার্থেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App