×

শিক্ষা

অনশন ভাঙার পর চিকিৎসকের পরামর্শে আছেন শাবি শিক্ষার্থীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৫২ পিএম

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ১৬৩ ঘণ্টা অনশনে থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ শিক্ষার্থী।

সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা। এমনকি অনশন চলাকালে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে মেডিকেল টিম এসে অনশনস্থলে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা।

বুধবার সকালে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক, লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক অনশন ভাঙান শিক্ষার্থীদের। এর আগে ১৯ শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদেরকে অনশন ভাঙাতে বুধবার সকালে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আদিল বলেন, অনশন ভাঙানো পরও শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ৭ শিক্ষার্থীকে পুনরায় আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বুধবার সন্ধ্যায় ৫ শিক্ষার্থী চিকিৎসকের সাথে কথা বলে রিলিজ নিয়ে চলে আসে।

তবে মাহিন শাহরিয়ার রাতুলের এপেন্ডিসাইটিস অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারিরীক অবস্থা খুব বেশি উন্নতি হয়নি। ব্যাথা রয়েছে। এছাড়া আরও এক শিক্ষার্থীর অবস্থা খারাপ থাকায় রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। পরে সেও হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়েছে।

‘সবাইকে ডায়েট মেনে খাবার খাওয়ার জন্য বলা হয়েছে’ উল্লেখ করে আদিল বলেন, দীর্ঘ সময় খাবার না খাওয়ায় ভারী খাবারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তরল কিংবা উচ্চ মাত্রায় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি চলছে চিকিৎসা।

সাফিন নামে অনশনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, দুই-একজন বাদে বাকি সবাই মোটামুটি সুস্থ আছে। হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে হল, মেসে বা বাসায় অবস্থান করছে।

নিজের শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় কিছু না খাওয়ায় শরীর দুর্বল। ডাক্তার ভারী খাবার খেতে নিষেধ করেছেন। অন্তত দুইদিন তরল কিংবা স্যুপ জাতীয় খাবার খেতে বলেছেন, তাই মেনে চলছি। পাশাপাশি ওষুধ নিচ্ছি।

অনশনকারী শিক্ষার্থী মরিয়মের সহপাঠী অনামিকা বলেন, এখন তারা সুস্থ আছেন। শরীর খুবই দুর্বল। মাথা সবসময় ঝিমঝিম করে মরিয়মের। এমনকি শরীর দুর্বল থাকায় ভালভাবে হাটতেও পারছে না।

রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত এক চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আদিল বলেন, সর্বোচ্চ সতর্কতা ও নিয়ম মেনে চলতে হবে তাদেরকে। তা না হলে শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাদেরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। বেশি বেশি প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

এছাড়া, নিয়মিত চেকাপ ও কোন সমস্যা দেখা দিলেও দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হবার জন্য ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন বলেও জানান আদিল।

বুধবার বিজ্ঞানমনস্ক লেখক এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

পরে আন্দোলনে পুলিশী হামলা হলে তার প্রতিবাদে ১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি, আমরণ অনশন, মশাল মিছিল, উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ, কাফন পরিধান করে প্রতীকী লাশ নিয়ে মিছিল, গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

এতে ১৯ জানুয়ারি বুধবার দুপুর থেকে অনশনে বসে ২৪ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে একজনের বাবা অসুস্থ থাকায় সে বাসায় চলে যায়। এর সঙ্গে গণঅনশনের ডাকে আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে যোগ দেন। সর্বমোট ১৬৩ ঘণ্টা অনশনে ছিলেন তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App