×

জাতীয়

সম্পত্তির জন্য স্ত্রী-ছেলের নির্যাতন, বাড়িছাড়া প্রবাসী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৫৪ পিএম

সম্পত্তির জন্য স্ত্রী-ছেলের নির্যাতন, বাড়িছাড়া প্রবাসী

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে সম্পত্তির জন্য স্ত্রী-ছেলের নির্যাতনের বর্ণনা দেন কফিল উদ্দিন। ছবি: ভোরের কাগজ

সম্পত্তির জন্য স্ত্রী ও ছেলের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়িছাড়া হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা কফিল উদ্দিন। চারটি বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও এখন পথে পথে ঘুরছেন কুয়েতফেরত এই ব্যক্তি।

আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সম্পত্তির জন্য স্ত্রী হোসনে আরা বেগম ও ছেলে সাইফুল ইসলামের করা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন কফিল উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে কফিল উদ্দিন বলেন, ১৯৮৯ সালে আমার বড়ভাই আব্দুল মজিদ মারা যাওয়ার পর ১৯৯২ সালে তার স্ত্রী হোসনে আরা বেগমকে আমি বিয়ে করি। ভাইয়ের মৃত্যুর সময় তার চার ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। তাদের আদর-স্নেহ দিয়ে বড় করেছি আমি। এরমধ্যে, আমারও এক ছেলের জন্ম হয়। আমার ভাইয়ের চার ছেলেকেই আমি নিজের টাকায় বিদেশে পাঠিয়েছি। দীর্ঘ ২৬ বছর কুয়েতে প্রবাস জীবন কাটিয়ে ২০১৯ সালে দেশে চলে আসি আমি। প্রবাসে থাকা অবস্থায় প্রতিবারই দেশে ছুটিতে এসে আমি জমি কিনেছি। ২৬ বছর প্রবাসে থেকে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে এলাকায় চারটি বাড়ি, স্থানীয় ধারিয়ারচর বাজারে একটি দোকান এবং ১৭ কাণি জমি কিনেছি। দেশে স্থায়ীভাবে থাকার মানসে সর্বশেষ যখন ছুটিতে আসি, তখন একটি জমি কেনার জন্য আমার স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, আমি দেশে আসার পর ব্যবসার জন্য টাকা দিতে চাপ দিতে শুরু করে আমার ছেলে সাইফুল ইসলাম। পরে ১২ লাখ টাকা খরচ করে স্থানীয় একটি বাজারে তাকে কাপড়ের দোকান করে দিই। এদিকে, স্ত্রীর কাছে জমি কেনার জন্য গচ্ছিত রাখা ১০ লাখ টাকার হিসাব চাইলে উল্টো তার এবং ছেলে সাইফুলের নামে সম্পত্তি নিবন্ধনের চাপ দিতে থাকে। এসময় সব সম্পত্তির দলিল নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয় তারা। আমি তাদের বলি, আগে আমার সম্পদের দলিল বুঝিয়ে দাও, এরপর আমি সেগুলো বণ্টন করে দেবো। কিন্তু তারা রাজি না হয়ে আমাকে শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। বিদেশে থাকা আমার ভাইয়ের চার ছেলের পরামর্শে তারা আমার ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমি খেলাম কিনা, শরীর ভালো কিনা- সেটার খবর নেয়ারও প্রয়োজন মনে করে না আমার স্ত্রী-ছেলে। সাড়ে ৫ মাস আগে আমাকে আমার ভাগিনার বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে আসে। এরপর আমাকে ঘরে আটকে রেখে সস্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন চালয়। এক পর্যায়ে আমাকে ট্যাংকের সাথে মেশানো ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ফেলে। পরে অচেতন অবস্থায় আমার টিপসই নিয়ে কিছু সম্পদ তাদের নামে লিখে নেয়। আমি বাঞ্ছারামপুর থানায় এ বিষয়ে জিডি করি। এরপর থেকেই আমি বাড়িছাড়া অবস্থায় রয়েছি। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে আমার স্ত্রী-ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলার পর থেকে আমাকে হত্যার জন্য খুঁজছে তারা। আমার নিজের ঘরবাড়ি থাকা সত্ত্বেও পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে আমাকে। আমি আমার ওপর যে অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতন হয়েছে, তার বিচার চাই। আমার সারা জীবনের কষ্টার্জিত অর্থে গড়া সম্পত্তিগুলো ফেরত চাই। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সহযোগিতা চাই আমি।

তবে বাবাকে নির্যাতন করে সম্পত্তি লিখে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে কফিল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবা স্বেচ্ছায় আমাদের সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন। বাবাকে কখনোই সম্পত্তির জন্য নির্যাতন করা হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App