×

সম্পাদকীয়

মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে অনিশ্চয়তা কাটুক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:২১ এএম

মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে অনিশ্চয়তা কাটুক

প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খোলার পথ খুঁজতে আজ ঢাকায় দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হতে পারে। দীর্ঘদিন পর হলেও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নতুন করে বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার খবর ইতিবাচক ও উৎসাহব্যঞ্জক। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানি। আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখনো জনশক্তি রপ্তানির প্রধান টার্গেট। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানির বাজার দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে সরকার নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছে। ২০১৯ সালেরু ৬ নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়। এ বৈঠকে দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে সম্মত হয়েছিল। ছয়টি সিদ্ধান্ত হয়েছিল ওই বৈঠকে। এর ভিত্তিতে দুই দেশের মতপার্থক্য দূর করে কর্মী নিতে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনার সিদ্ধান্তও হয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ২০১৬ সালে জিটুজি প্লাস চুক্তি করে পরের দিন তা স্থগিত করে মালয়েশিয়া। ২০১৭ সালে দেশটিতে কর্মী যাওয়া শুরু হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে বন্ধ হওয়ার আগে জিটুজি প্লাসে বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ কর্মী মালয়েশিয়ায় যায়। মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৮ সালের মে মাসে ক্ষমতায় এসে অভিযোগ তোলে জিটুজি প্লাসে কর্মী নিয়োগে অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। দুই দেশের সিন্ডিকেট এ টাকা লোপাট করেছে। গত দুুই বছরে শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায় থেকে কমপক্ষে পাঁচবার ইতিবাচক ঘোষণা এলেও ওই সিন্ডিকেটের জন্যই তা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। একই সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অনিয়মিত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি শুরু হয়, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। মালয়েশিয়াতে আমাদের বিশাল এক শ্রম অভিবাসী কাজ করছেন। মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে অবশ্যই আগের ভুলত্রæটি মোকাবিলা করে এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সহনশীল ব্যয়ের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করাটাই এখন বড় কর্তব্য। সিন্ডিকেট সমস্যাটি এখানে প্রকট। কেউ কেউ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলছেন। তবে অনেকে মনে করেন, অনিয়ম-প্রতারণা বাড়বে। এই অবস্থার মধ্যেই মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক সংসদীয় ককাসের ২৪ দফা প্রস্তাব পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে এ খাতে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের প্রভাব থাকবে না বলে সরকারের একটি মহল মনে করছে। কোনোভাবেই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে যাতে ব্যয় বেড়ে না যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যাতে কেউ নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App