মানবতা, ন্যায়পরায়নতা, নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা হলো মানবিক নীতির মূল ভিত্তি। ভিডিও ও আলোকচিত্রের মাধ্যমে মানবিক নীতির তাৎপর্য ও দৈনন্দিন জীবনে এর গুরুত্ব তুলে ধরার লক্ষে ‘মানবিক নীতি: এখানে এবং এখন’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পঞ্চম তলায় সুইজারল্যান্ডের লুসানের ফটো এলিসি জাদুঘরের সহযোগিতায় বাংলাদেশস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ রেড ক্রস (আইসিআরসি) এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে আয়োজন করে প্রদর্শনীটি। উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড, বাংলাদেশে আইসিআরসি প্রতিনিধি দলের প্রধান মিসেস কাটজা লরেঞ্জ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এই প্রদর্শনী দর্শকদের মধ্যে মানবতার জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ বা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এই প্রদর্শনীর আয়োজনের জন্য সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, আইসিআরসি এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে ধন্যবাদ জানান।
সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, মানবিক নীতিগুলি সুইস জনগণ হৃদয় দিয়ে অনুভব করে এবং এই অসামান্য মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতেই ১৯৭০ সালের গোড়ার দিক থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশ যখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে, তখন যৌথভাবে আয়োজিত এই প্রদর্শনী আমাদের জন্য বিশেষ গুরত্ব বহন করে।
বাংলাদেশে আইসিআরসি প্রতিনিধি দলের প্রধান মিসেস কাটজা লরেঞ্জ বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আইসিআরসি মানবিক সহায়তা নিয়ে বাংলদেশের পাশে ছিল। আমরা শত-হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়েছি। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আমরা সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনের ভিত্তিতে আমরা বন্দিদের অধিকার সুরক্ষা, শারিরিকভাবে নির্যাতিতদের পরিসেবা প্রদান করে থাকি। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে যৌথভাবে আমরা পারিবারিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করার চেষ্টা করি, যেখানে নানা কারণে আত্মীয়দের মধ্যে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলনে কাজ করি। আমরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের কাছাকাছি বসবাসকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের নানাভাবে সহায়তা প্রদান করে থাকি।
প্রদর্শিত আলোকচিত্রগুলোতে ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং বিগত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশে আইসিআরসি-এর কার্যক্রমের প্রতিফলন এবং পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের মানবিক কার্যক্রমের প্রতিফলন ঘটেছে। এছাড়াও ১০ জন সুইস আলোকচিত্রির লেন্সের মধ্য দিয়ে দেখা দৈনন্দিন জীবনে মানবিক নীতিমালার প্রতিফলন ঘটেছে তাদের নির্মিত ১০টি শর্ট ফিল্মে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ৬টি আলোকচিত্রও রয়েছে প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনীটি চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। রবিবার বাদে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রদর্শনীর দরজা সবার জন্য খোলা থাকবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।