×

সম্পাদকীয়

পুলিশ সপ্তাহ শুরু : আরো আস্থাশীল হোক পুলিশ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩০ এএম

পুলিশ সপ্তাহ শুরু : আরো আস্থাশীল হোক পুলিশ

‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত থেকে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিগত বছরের ভূমিকার জন্য পুরস্কৃত, উৎসাহিত করা হয়। এ সময় তারা তাদের দাবি-দাওয়া, চাহিদার কথাও জানান। এসব বিবেচনায় পুলিশ সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ সপ্তাহে বরাবরের মতো এবারো সমস্যা, চাওয়া-পাওয়া ও বিভিন্ন দাবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের কাছে তুলে ধরেছেন। তবে অন্যান্য বারের এবং এবারের দাবি-দাওয়ার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য দৃশ্যমান। এবার সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি সংক্রান্ত দাবির চেয়ে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো, প্রশিক্ষণ, মর্যাদা বৃদ্ধি ও অপরাধ দমনে সমস্যা ও সরঞ্জামের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ করে বলেছেন, জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করা তাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। সে দায়িত্বটা তাদের অবশ্যই পালন করতে হবে। জনবান্ধব পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে পুলিশ বাহিনীকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও পুলিশ সদস্যরা দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গি দমনে যেভাবে অভিযান চালানো হয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একই ধরনের অভিযান চালাতে তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে জননিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা ও দায়িত্ব বিরাট। দেশের জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর চ্যালেঞ্জ সহজেই অনুমেয়। বিগত প্রায় দুই বছর করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া জঙ্গি তৎপরতা মোকাবিলায় পুলিশ বাহিনীর কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করতেই হয়। চুরি-ছিনতাই ইত্যাদি রোধ তথা নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান পুলিশের বড় দায়িত্ব। কিন্তু এসব মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ইদানীং বেড়েছে সামাজিক অপরাধ-সহিংসতা। এসব রোধে করণীয় নির্ধারণ দরকার। এদিকে পুলিশ সদস্যদের একাংশের অপরাধে সম্পৃক্ত হওয়া এবং পুলিশ পরিচয়ে অপরাধ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার, অপহরণ, নির্যাতন, খুনের মতো বড় বড় অপরাধকর্মেও এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত হওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। আবার ডিবি পোশাকে বা ডিবি পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারের নামে অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজির ঘটনাও ঘটে চলেছে। বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার প্রতিই মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি করে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। অপরাধী যেই হোক, তার শাস্তি নিশ্চিত করাই হলো অপরাধ দমনের প্রথম পদক্ষেপ। আর অপরাধ দমনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের মধ্যে যারা নিজেরাই অপরাধে লিপ্ত হবে, তাদের শাস্তি অধিকতর কঠোর হওয়া দরকার। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আমাদের চাওয়া, নতুন বছরে পুলিশের ইতিবাচক ভূমিকা ও পেশাগত কৃতিত্বই উজ্জ্বল হোক। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সামনে নিয়ে পুলিশ বাহিনী আগামী দিনে আরো জনবান্ধব হবে ও জননিরাপত্তায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করতে পারি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App