×

তথ্যপ্রযুক্তি

কবে, কী রোগে মৃত্যু, বলে দেবে চোখ!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:৪০ পিএম

কবে, কী রোগে মৃত্যু, বলে দেবে চোখ!

প্রতীকী ছবি

এককালে চোখের ভাষাতেই প্রেম খুঁজে পেতেন কবি-সাহিত্যিকরা। কিছুদিন আগে বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের মাধ্যমে নাকি আয়ুষ্কাল সম্পর্কে জানা যায়! তাও এক দশক আগে!

সম্প্রতি ব্রিটিশ জার্নাল অব অপথ্যামমোলজি একটি বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চোখের মাধ্যমে কার কীভাবে মৃত্যু হবে এবং কবে হবে সে বিষয়ে আগে থেকেই অনুমান করা যায়। খবর সায়েন্স অ্যালার্ট, ইয়ননিউজ ও নিউইয়র্ক পোস্টের।

গবেষকরা জানান, দুজন সমবয়সী ব্যক্তির দেহকোষগুলোর ক্ষয় বয়সের সঙ্গে একই হারে হয় না। কারও ক্ষেত্রে তা হয় দ্রুত হারে। কারও ক্ষেত্রে হয় কম। এখানে বছরের হিসাব অনুযায়ী মানুষের বয়স এবং তার দেহকোষের আয়ুর পার্থক্য তৈরি হয়। আর দেহকোষের সেই ক্ষয়ের বিষয়টি নিখুঁতভাবে আগেভাগেই শনাক্ত হয় রেটিনায়। রেটিনা দেখেই আগেভাগে বলে দেয়া যেতে কার আয়ু কত দিনের। কী রোগে মৃত্যু হতে পারে। আর এগুলো বলে দেয়া সম্ভব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের অ্যালগরিদমের মাধ্যমে।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ পদ্ধতি চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন মাত্রা যোগ করবে। কারণ এ পূর্বাভাসের জন্য এখন যে পদ্ধতিগুলো (যেমন, নিউরোইমেজিং, ডিএনএ মেথিলেশন ক্লক, ট্রান্সক্রিপটোম এজিং ক্লক) চালু আছে, সেগুলো তেমন নিখুঁত নয়। একইসঙ্গে প্রচুর ব্যয়সাপেক্ষ ও যন্ত্রণাদায়কও। তাই রেটিনা পরীক্ষা করে এ কাজ করা সম্ভব হলে ব্যয় সাশ্রয় এবং যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা দুটিই কমবে।

যুক্তরাজ্যে প্রায় ৫০ হাজার মধ্যবয়সীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পদ্ধতির মাধ্যমে যদি বোঝা যায় কারও চোখের রেটিনার বয়স তার নিজের বয়সের চেয়ে অন্তত এক বছর বেশি, তা হলে বলে দেওয়া যাবে আগামী ১১ বছরের মধ্যে যে কোনো কারণে তার মৃত্যুর আশঙ্কা দুই শতাংশ বেড়ে গেছে। সেই পূর্বাভাস যতটা সঠিক হবে পুরুষের ক্ষেত্রে, ততটাই নিখুঁত হবে নারীদের ক্ষেত্রেও।

গবেষকরা আরও জানান, রেটিনার বয়স কারও বয়সের চেয়ে অন্তত এক বছর বেশি হলে ক্যানসার বা কোনো রকমের হৃদরোগ ছাড়া অন্য কোনো রোগে আগামী ১১ বছরে তার মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যাবে কম করে তিন শতাংশ।

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগরিদম অনুযায়ী এভাবে প্রায় ৫০ হাজার মধ্যবয়সির রেটিনা পরীক্ষা করে গবেষকরা যে পূর্বাভাস করেছিলেন, তা মিলে গেছে এক দশকের মধ্যে প্রায় ২ হাজার জনের মৃত্যুর মাধ্যমে। মৃতদের রেটিনার বয়স তাদের বয়সের চেয়ে এক বছর বেশি ছিল।

পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই চালানো হয়েছে এ গবেষণা। রেটিনা দেখে কেন মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তার কারণ এখনও জানতে পারেননি গবেষকরা। তবে গবেষণার ফলাফল অন্তত এইটুকু জানিয়েছে, দেহের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যে ক্ষয়ক্ষতিগুলো হয় দেহকোষের তাতে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল রেটিনাই। রেটিনার কোষগুলোতেই সেই ক্ষয়ক্ষতির ছাপ পড়ে সবচেয়ে বেশি। চোখের ভাষাতেই প্রথম ধরা পড়ে আমাদের বুড়িয়ে যাওয়ার দাগ!

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App