×

জাতীয়

দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ পিএম

দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

বুধবার ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২১-২২ এর গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলছেন। ছবি : বিটিভি থেকে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্সে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান আপনাদের (সৈনিকদের) ওপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন ও যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ডিএসসিএসসি কোর্স-২০২১-২২ এর গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনিতে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। এবার ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ (ডিএসসিএসসি) কোর্সে বাংলাদেশ ছাড়াও বন্ধুপ্রতিম ১৮টি দেশের সদস্যরা সনদ গ্রহণ করে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে। সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে হবে। দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ এই দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা আর কখনও কেউ থামিয়ে দিতে পারবে না। সেভাবেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে।

কোর্সে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে হবে, সম্মানের সঙ্গে, মর্যাদার সাথে। সেই মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়। আমাদের যা সম্পদ আছে তাই দিয়ে আমরা নিজেদেরকে বিশ্বে মর্যাদাশীল করে গড়ে তুলেছি এবং আমরা আরও গড়ে তুলব। সামনে এগিয়ে যাব।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। অপর দিকে জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে বিজয়ের ইতিহাস, আমরা যে বিজয়ী জাতি সেটাই এ জাতি ভুলতে বসেছিল। আসলে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। আমরা জাতির পিতার সেই আদর্শ সামনে তুলে নিয়ে আসি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুম প্রজন্মের কাছে তুলে ধরি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে যে চলতে হবে, আমরা প্রশিক্ষণে সব সময় সেটাই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা চাই আমাদের সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী আধুনিক এবং যুগপোযোগী হবে। সেই সাথে সাথে প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০১৬ সালে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সাথে বৈরিতা নয়। এই পররাষ্ট্র নীতি জাতির পিতা আমাদের দিয়ে গেছেন। আমরা সেই নীতিই মেনে চলি। আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করব না, কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত এলে আমরা চুপ করে থাকব না। সেটা নিশ্চই আমরা প্রতিরোধ করব বা প্রতিবাদ করব। সেইভাবেই আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় বিশ্বাস করি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে বাংলাদেশ অত্যান্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেই সীমাবদ্ধতার সত্ত্বেও আমরা সব সময় যেখানেই কোন বিপন্ন মানবতা, তার ডাকে আমরা সাড়া দিয়েছি। আমরা সাহায্য করার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, সেই সাথে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছি যাতে তারা স্বদেশ ভূমিতে ফিরতে পারে। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের কাছে আমাদের নীতিমালার কারণে একটা সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যে কোন জাতীয় প্রয়োজনে সর্বচ্চো ত্যাগ স্বীকার করে থাকেন এবং সহযোগিতা করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদণ্ডে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি। বর্তমানে বাংলাদেশে অর্থনীতির আকার ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমরা দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। নতুন গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন ও যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। আমরা চাই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি সদস্য আন্তর্জামিক মান সম্পন্ন হবে। আমি পদবি পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে অনেক কাজ করে দিয়েছি। যাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমান তালে আমাদের প্রতিটি সদস্য চলতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই করে দিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি সত্যি জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি বলেছিলেন একদিন বিদেশি বন্ধুরা আমাদের একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিতে আসবে। আজ অনেক বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশে অনেক নেতিবাচক কথা ছিল। তবে এখনও কিছু কিছু লোক আছে বাংলাদেশ সম্পর্কে বদনাম করতেই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ফলে, আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা এবং দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে যে দক্ষতা দেখিয়েছি তার ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ঠিক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পর যে সম্মান আমরা আন্তর্জাতিকভাবে পেয়েছিলাম ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর যে সম্মান হারিয়েছিলাম আজ আবার সেই সম্মান পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছি। এখন আর বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারে না। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিশ্বদরবারে মর্যাদা পেয়েছে। এই মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App