×

জাতীয়

মাদক সিন্ডিকেটের তথ্য দেয়াই কাল হয় সায়মনের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:৪৬ পিএম

মাদক সিন্ডিকেটের তথ্য দেয়াই কাল হয় সায়মনের

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আটককৃতদের হাজির করা হয়। ছবি: ভোরের কাগজ।

মাদক সিন্ডিকেটের তথ্য দেয়াই কাল হয় সায়মনের
গ্লাসের দোকানের দক্ষ শ্রমিক ছিলেন মো. সুমন। সেখানেই কাজ করার সময় ভাঙ্গা গ্লাস দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ ও জখম করার কারণে সে এলাকায় গ্লাস সুমন হিসেবে পরিচিতি পায়। এক সময় এলাকায় মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলে সে। আর তার এ মাদক সিন্ডিকেটের খবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেয়ায় সায়মন ওরফে নুরে আলমকে (২৫) শিক্ষা দিতে হাত ও পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে সুমনসহ তার গ্রুপের অন্য সদস্যরা। কেরানীগঞ্জে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে বিকালে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, গত শনিবার কেরানীগঞ্জ এলাকায় সায়মন ওরফে নুরে আলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত সায়মনের ভাই মো. আরস আলম গত সোমবার কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭-৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করলে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত রবিবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমন ছাড়াও মো. সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ (২৮), শরীফ ওরফে গরীব (২৯), জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি (৩২) ও হারুনকে (৩২) আটক করতে সমর্থ হই আমরা। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচগিয়ার ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্লাস সুমন একটি মাদক সিন্ডিকেটের হোতা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। কেরানীগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় তিনি গ্লাস কোম্পানি নামে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন বলে জানা যায়। এতে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ১২-১৫ জন। সায়মনকে কেন হত্যার শিকার হতে হলো জানতে চাইলে র‌্যাব লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, কিছুদিন আগে সায়মনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্লাস কোম্পানি মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর সেই থেকে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাকে শিক্ষা দিতে বালুর মাঠে বসে গ্লাস সুমনের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়। পরিকল্পনায় পাঁচ-ছয়জন অংশ নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জানুয়ারি গ্লাস সুমন সিন্ডিকেটের সদস্যরা সায়মনকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে। সেখানে চেপে ধরে তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে চলে যায় তারা। গ্রেপ্তার হারুন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে বলে জানা যায়। গ্লাস সুমনের নেতৃত্বে ৭-৮জন সক্রিয়ভাবে কিলিং মিশনে অংশ নেন। পরে স্থানীয়রা চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে সায়মনকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গ্লাস সুমন পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডের সময় সশরীরে উপস্থিত থেকে সায়মনের রগ কাটেন। লম্বু সোহাগ, শরীফ ও গরীবুল্লাহ রগ কাটায় তার সঙ্গে অংশ নেয়। গ্লাস সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক ও ছিনতাইয়ের পাঁচটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ, জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি ও হারুনের বিরুদ্ধেও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App