×

জাতীয়

টিকা নিয়ে বিড়ম্বনায় শিক্ষার্থীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৬ এএম

নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রে গিয়ে মিলছে না টিকা, এসএমএস না আসার অজুহাত

শিক্ষার্থীদের টিকা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শিক্ষার্থীর প্রমাণটুকু নিয়ে গেলেই তারা টিকা পাবে- সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই এমনটা বলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীর প্রমাণ হিসেবে স্কুলের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) থাকলেই চলবে। জন্ম সনদ দিয়েও টিকা নিতে পারবে তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এমন নির্দেশনাই দেয়া হয়েছে।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) সাভারে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকাদানের কর্মসূচি জোরদার করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারিসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার্থী পরিচয় নিয়ে গেলেই সেখানে তারা টিকা পাবে। এখানে কাউকেই বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু জন্ম সনদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র নিয়েও টিকা কেন্দ্রে গিয়ে মিলছে না টিকা। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেই নিবন্ধন করার পরও এসএমএস না আসায় টিকা নিতে পারছেন না।

গোপীবাগের বাসিন্দা ব্রততী দে (১৮)। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে অনার্সে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। এখনো তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড হয়নি। জন্ম সনদের নম্বর দিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুযায়ী কলেজের পরিচয়পত্র ও জন্ম সনদ নিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের টিকা কেন্দ্রে কয়েকবার গিয়েও বিষয়টির সুরাহা হয়নি বলে জানান ব্রততী।

ইডেন মহিলা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ইলোরা জামান (২১)। টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন প্রায় মাসখানেক আগে। টিকা কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) করোনা নির্ধারিত হাসপাতালকে। ইলোরা জামান বলেন, কলেজ থেকে টিকা নেয়ার বিষয়ে বরাবরই জোর দেয়া হচ্ছে। আমার এসএমএস আসছে না। অনেকে পরামর্শে পরিচয়পত্র, এনআইডি ও নিবন্ধন কার্ডসহ ডিএনসিসি টিকা কেন্দ্রে চারবার গিয়েছি। টিকা কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, এসএমএস না এলে টিকা দেয়া হবে না। ফিরে এসেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসি করোনা হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে সার্ভার ডাউন থাকায় এসএমএস না এলে কাউকেই টিকা দেয়া হচ্ছে না। তাদের অপেক্ষা কারার জন্য বলা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে। বিষয়টি আমাদের কাছে আগে কেউ জানায়নি। খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে।

গত বছর নভেম্বরের ১ তারিখ ঢাকায় ১২ বছরের বেশি বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ সামনের দিকে অনেক বাড়তে শুরু করবে এমন আশঙ্কা থেকে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষণা দেয়া হয়, দেশজুড়ে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি সব শিক্ষার্থীকে অন্তত এক ডোজ টিকা দেয়ার কাজ সম্পন্ন করা হবে। এক ডোজ টিকা নেয়া না থাকলে শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাসে যেতে পারবে না বলেও জানানো হয়। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ঢাকার ১২টি কেন্দ্রে স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

পরে জানুয়ারিতে সেটি আরো সম্প্রসারণ করা হয়। ১০ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, এখনো টিকা কার্যক্রমের বাইরে রয়েছে প্রায় ৭৬ লাখ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ টিকার আওতায় আসেনি ৬৫ শতাংশের বেশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে এ বিষয়ে দ্রুত টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সি সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া শেষ হবে বলেও ওই দিন জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিকে ১৩ জানুয়ারি

জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে জেলা পর্যায়ে থেকে ঢাকার জন্য আলাদা আলাদা বুথ করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই নির্দেশনায়; টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র ব্যবহার করে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এসব সনদ না থাকলে তালিকা তৈরি করে টিকা কার্ডের মাধ্যমে (সংযুক্ত) টিকা দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া টিকা নিলে টিকা সনদ মিলবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App