×

সারাদেশ

অস্ত্রোপচার করলেন নার্স, নবজাতকের মাথায় ৯ সেলাই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৪৯ পিএম

অস্ত্রোপচার করলেন নার্স, নবজাতকের মাথায় ৯ সেলাই

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের বদলে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর অস্ত্রোপচার করেছেন নন-ডিপ্লেমা নার্স। অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের মাথার বাম পাশের কিছু অংশ কেটে গেছে। শিশুটির মাথায় ৯টি সেলাই লেগেছে।

শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় হাসপাতালের ২ পরিচালকসহ অভিযুক্ত নার্সকে আটক করেছে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- পলাশ মোল্লা (৪৫), আল হেলাল (৪১) ও নার্স চায়না বেগম (৩৬)। এই ঘটনায় ওই হাসপাতালের সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান।

যে নারীর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে তার নাম রুপা বেগম (২৮)। তিনি রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার মইজউদ্দিন মন্ডল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শফি খানের(৩২) স্ত্রী। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে এই দম্পতির বিয়ে হয়। এটিই তাদের প্রথম সন্তান।

রুপা বেগমের স্বামী শফি খান জানান, তার স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আজ সকালে তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে রাজবাড়ীর উজানচরের শ্বশুর বাড়ি থেকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নিয়ে আসেন। তাদের ইচ্ছা ছিল সরকারি ওই মেডিকেলে অস্ত্রোপচার করানোর। কিন্তু ওই হাসপাতালের বিপরীত পাশে অবস্থিত একটি দ্বিতল ভবনের আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারি তাদেরকে দ্রুত চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে সেখানে নিয়ে যান। তারপর ডাক্তারের কথা বলে নন-ডিপ্লেমা নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচার করানো হয়। এসময় তিনি শিশুটির মাথার কিছু অংশ কেটে ফেলেন।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাতিজা মোস্তফা আমীর ফয়সাল (২৭) ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমরা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। এসময় ওই হাসপাতালের বিপরীতে অবস্থিত আল মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালের কর্মীরা তাড়াতাড়ি প্রসব হবে- বলে নিয়ে আসেন। আমাদের তাড়া থাকায় এখানে চলে আসি।

তিনি লিখিত অভিযোগে আরও বলেন, আমরা চিকিৎসকের নাম জিজ্ঞেস করলে আমাদের জানানো হয় ডাক্তার নুসরাত জাহান এই অস্ত্রোপচার করবেন। যিনি ফরিদপুর ডায়াবেটিস হাসপাতাল থেকে ২০১৮ সালে এম.বি.বি.এস পাস করেছেন। পরে আমরা জানতে পারি ওই চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেননি। সেখানে একজন নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। যার ফলে এই অঘটন ঘটেছে।

লিখিত অভিযোগে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করেন। আমীর ফয়সাল জানান, এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করবেন। এ ঘটনার শুরু থেকে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের সঙ্গে ছিলেন শফি খানের বোন হোসনে আরা বেগম (৩১)।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, এই ঘটনায় আমি ওই হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী পরিবারকে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। আর ইতোমধ্যে এ ঘটনায় হাসপাতালের ২ পরিচালক ও অভিযুক্ত নার্সকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App