×

জাতীয়

সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজ উদ্যোগে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩৭ পিএম

দুর্ঘটনা হ্রাস করতে সকলকে ট্রাফিক রুলস মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেক স্কুল নিজ উদ্যোগে বিশেষ ট্রাফিকের ব্যবস্থা নিতে হবে। আর ট্রাফিক পুলিশ থাকবে তাদের সহযোগিতা করতে। এ ব্যপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রত্যেকটা স্কুলকে নির্দেশ দিতে পারে। একেবারে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলব আপনারা উদ্যোগ নেন। প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই নির্দেশটা দেবেন। তাহলেই দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত: ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাস, সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক-৪ মহাসড়ক, বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগসড়ক, রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর চেংগী নদীর উপরে ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন একটা দুর্ঘটনা হলেই সবার আগে গাড়ীর ড্রাইভারকে ধরে পিটানো হয়। এমনকি কখনও কখনও গণপিটানি দিয়ে মেরে ফেলা হয়, হত্যা করা হয়। যখন দুর্ঘটনা, সেই দুর্ঘটনা কেন ঘটল? কি কারণে ঘটল? কার দোষে ঘটল? সেটা বিবেচ্য বিষয়। সেটা খুঁজে দেখা দরকার। সেখানে আমি পথচারিদের উদ্দেশে বলব ট্রাফিক ‍রুলস সম্পর্কে সবার জ্ঞান থাকা দরকার এবং সেটা মেনে চলা দরকার।

তিনি বলেন, ট্রাফিক রুলস সকলে মেনে চলবেন। মোবাইল ফোন কানে নিয়ে কথা বলতে বলতে সড়ক দিয়ে চলা বা রেললাইনের পাশ দিয়ে হাটা বা রেললাইন পার হওয়া এটা কখনও কেউ করবেন না, এটা বন্ধ করতে হবে। আর যেখান সেখান থেকে হঠাৎ করে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হবেন না। রাস্তা পার হতে গেলেই দুর্ঘনা ঘটে। সে ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি জায়গায় ফুটওভার ব্রিজ করা আছে বা আন্ডারপাস করে দিচ্ছি সকলকে সেটা মেনে চলতে হবে। একটা দুর্ঘটনা হলে সাথে সাথে সেখানে যখন পুলিশ যায়, অবশ্যই এটা দেখবে যে দোষটা কার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রায়ই ছাত্ররা মারা যায়। কিন্তু অধিকাংশ দেখা যায় হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে কথা বলতে বলতে রাস্তা চলছে অথবা ফুটপাত ছেড়ে দিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাটা শুরু করেছে। যখন একটা যানবাহন চলাচল করে সেই চালককে কিন্তু সাথে সাথে ব্রেক কষা সম্ভব হয় না। এটা যান্ত্রিক বিষয়, সেটা মাথায় রাখা দরকার।

গাড়ীর চালক এবং হেলপারদের উদ্দেশে বলেন, চালকরা দীর্ঘ সময় গাড়ী চালালে অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় ঝিঁমিয়ে পড়ে, সেটা হয়। সেজন্য এখন মহাসড়কের পাশে চালক এবং যাত্রীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোন চালক যদি ক্লান্ত হয় সেটা তারা বলতে পারেন বা কিছুক্ষণ গাড়ী থামাতে পারেন, কিন্তু ড্রাইভার পাশে বসে হেলপার দিয়ে গাড়ী চালানো। যার কোন ভারী যান চালানোর দক্ষতা নেই, তাকে দিয়ে চালানোটা ঠিক না, এটা অন্যায় কাজ। এই বিষয়গুলোর দিকে সকলের দৃষ্টি দিলে বিশেষ করে পথচারি তারা যদি সর্তক থাকে তাহলে দুর্ঘটনা অনেক কম হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ট্রাফিক রুলস মেনে চলতে হবে। যখন স্কুল ছুটি হয় তখন ছাত্র-ছাত্রীরা যেখান দিয়ে পার হয় সেখানে প্রত্যেকটা স্কুল নিজ উদ্যোগে বিশেষ ট্রাফিকের ব্যবস্থা নেবে। ট্রাফিক পুলিশ থাকবে তাদের সহযোগিতা করতে, কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ সচেতন থাকতে হবে, তাদেরও নিজস্ব লোক থাকতে হবে ওখানে। যাতে ছেলে মেয়েরা নিরাপদে সড়কটা পার হতে পারে। অনেক সময় অন্যের কথা শুনতে চায় না। কিন্তু স্কুললের কর্তৃপক্ষ যদি থাকেন তার কথা ছাত্র-ছাত্রীরা শুনবে। এ ব্যপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রত্যেকটা স্কুলকে নির্দেশ দিতে পারেন। তাহলেই দুর্ঘটনা অনেক কমবে। যানবাহনগুলোর যান্ত্রিক ত্রুট আছে কি-না সেটাও সময় সময় পরীক্ষা করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা স্কুল কলেজে ট্রাফিক রুলস সম্পর্কে একদম ছোট্ট বেলা থেকে শিক্ষা দেওয়া উচিত। এটা প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাস্তা ফুটপাত ধরে হাটলেও সব সময় যেদিক থেকে যান চলাচল করে বা যেদিক থেকে গাড়ী আসে তার উল্টো দিক থেকেই হাটতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। দুর্ঘটনা, ‍দুর্ঘটনাই, দোষ কার সেটা পরে দেখা যাবে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভারকে মারা। অনেক দুর্ঘটনা এরকম হয় হয়তো ধাক্কা লাগলে পড়ে গেল কিন্তু ড্রাইভার ভয় থাকে যে সে যদি গাড়ী থামায় তাহলে গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলবে, সেই ভয়ে গাড়ী চালিয়ে যায় এবং যে পড়ে থাকে সে হয়তো বেঁচে থাকত কিন্তু পরে ভীত হয়ে যখন গাড়ী চালায় তখন ওই লোক চাকায় পিষ্ঠ হয়ে যায়। একটা মানুষের জীবন চলে যায়। কাজেই যারা এভাবে কিছু হলেই ড্রাইভারকে ধরে পিটাবেন, গাড়ী ভাঙবেন, গাড়ীতে আগুণ দেবেন, এটা কিন্তু ঠিক না। আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আছে তারাই দেখবে। যে আইনগত কি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App