চট্টগ্রামে বিএনপির দুই গ্রুপের হাতাহাতিতে সভা মঞ্চ ভেঙে পড়েছে। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সরওয়ার জামাল নিজামকে লাঞ্চিত করেছে নিজ দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কিতে অনুষ্ঠানে ভেঙে পড়ে সভা মঞ্চ।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার সিডিএ আবাসিক এলাকা মাঠে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় আনোয়ারা উপজেলার বিএনপির নেতা হেলাল ও মোস্তাফিজ সমর্থিত ফারুক নামের এক বিএনপি কর্মী মঞ্চে বসে থাকা সাবেক এমপি সরওয়ার জামাল নিজামের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তার শার্ট ও গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরে এমপি নিজাম আমাকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে নেতাকর্মীরা এগিয়ে সরওয়ার জামাল নিজামকে গাড়িতে তুলে দেন। এ সময় নেতাকর্মীদের ধাক্কাধাক্কিতে হঠাৎ মঞ্চ ভেঙে পড়ে।

কিন্তু এ সময় আমীর খসরু মাহমুদ বক্তব্য দেয়া বন্ধ রাখেননি। বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ জেলার আজকের সমাবেশে সরকার পতন আন্দোলনের বাঁধ ভেঙেছে। জনগণকে কিছুতেই আটকে রাখা যাবে না। এত লোকের উপস্থিতিতে সমাবেশ মঞ্চ তো ভাঙবেই। এতে আন্দোলন বন্ধ হবে না, চলতে থাকবে। তিনি আরও বলেন, ১৪৪ ধারার দিন শেষ হয়ে গেছে‌‌। দফায় দফায় অনুমতি নিয়ে জনসভার দিন শেষ হয়ে গেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।

বিএনপির নেতা ও সাবেক এমপি লাঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখায় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। তবে কর্ণফুলী উপজেলার কোনো নেতাকর্মী তাকে লাঞ্চিত করেননি। যারা লাঞ্চিত করেছে তারা সবাই আনোয়ারা উপজেলার। এদিকে সমাবেশ শুরুর দিকে জনসভায় সরওয়ার জামাল নিজাম বক্তব্য দেয়ার সময় নেতাকর্মীদের ভুয়া-ভুয়া স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মারামারি প্রসঙ্গে কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ বলেন, সমাবেশে সকাল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই  তারা মারামারিতে জড়ান। বিএনপির এক নেতা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম প্রমুখ।