×

জাতীয়

শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা আসছে সহসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৪৭ এএম

শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা আসছে সহসা

প্রতীকী ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো সময় দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন। গ্রিডভুক্ত এলাকাগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৯৯ দশমিক ৮৫ ভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম এলাকায় অচিরেই শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে শতভাগ জনপদে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেয়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন ভোরের কাগজকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করেছি। গত নভেম্বর মাসে ৯৯ দশমিক ৭৫ ভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের ৯৯ দশমিক ৮৫ ভাগ এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। যেটুকু এলাকা এখনো বাকি আছে তা সবই পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার দুর্গম এলাকা। এগুলো সবই অফগ্রিড এলাকা। এখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যম ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব না। এই এলাকাগুলোতে সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিষদ কাজ করছে। ইতোমধ্যেই বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই এটা সম্পন্ন হবে।

তিনি বলেন, অল্প দিনের মধ্যেই আমাদের অঙ্গীকার পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেবেন। আমরা এখন অপেক্ষায় আছি। আমাদের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। তার কাছ থেকে আমরা সময় পেলেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবো।

তিনি আরো বলেন, টেকসই এনার্জি কিভাবে পেতে পারি তা নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। বিদ্যুতের সরবরাহ মান আরো উন্নত করতে কাজ চলছে। আগে এক ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করা হতো, কিন্তু এখন মিক্স ফুয়েল ব্যবহার করে কাজ চলছে।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়ার সহায়তায় বিদ্যুৎ খাত পুনর্গঠন কাজ শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছেন। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ এখন শতভাগ বিদ্যুতায়নের রেকর্ড করতে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই তিনি শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষনা দেবেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে শতভাগ জনপদে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেয়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ। এটি বড় ধরনের একটি মাইলফলক। এই ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ এই মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনায় ইআরপি, স্ক্যাডা, স্মার্টগ্রিড, স্মার্ট প্রিপেইড মিটার, ভূগর্ভস্থ ক্যাবল ব্যবস্থা, ভূগর্ভস্থ উপকেন্দ্র, জিআই ট্রান্সফরমার সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব প্রকল্পের কাজ এখন চলমান রয়েছে। ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের ক্যাবল নেয়ার কাজও চলছে। এছাড়া দেশীয় জ্বালানি ব্যবহারে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে। এজন্য একদিকে বাপেক্সকে শক্তিশালী করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কয়লা ও গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রণোদনা দেয়া অব্যাহত রয়েছে। বায়ু বিদ্যুৎ, ওশান রিনিউবল এনার্জি, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ ইত্যাদি আগামীর জ্বালানি মিশ্রণে ব্যাপক অবদান রাখবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে দেশে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বিদ্যুৎ বিভাগের রয়েছে। ২০২১ সালের প্রথম দিন পর্যন্ত দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। সিস্টেম লস এখন সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। ২০২৪ সাল নাগাদ অনেক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) তথ্য অনুযায়ী, তাদের গ্রিডভুক্ত ৪৬১টি উপজেলা এখন শতভাগ বিদ্যুৎ পেয়েছে। পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালি উপজেলাটি অফগ্রিডভুক্ত হলেও সেখানে বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App