×

জাতীয়

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি, সড়ক অবরোধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৪৬ পিএম

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি, সড়ক অবরোধ

শনিবার তেজগাঁও মূল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীরা। ছবি: ভোরের কাগজ।

বুটেক্স শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি, সড়ক অবরোধ
বুটেক্স শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি, সড়ক অবরোধ

করোনা পরিস্থিতিতে হল বন্ধ ঘোষনা, সশরীরে পরীক্ষা বন্ধ, এক সপ্তাহের মধ্যেই অনলাইনে পরবর্তী টার্মের ক্লাস শুরু করা এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে কোনো শিক্ষার্থী আক্রান্ত বা অসুস্থ হলে এর দায়ভার প্রশাসনকে নেয়াসহ পাঁচ দফা দাবি তুলেছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা এবং করোনা যার যার, দায়ভার তার তার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের এমন বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছেন।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে তেজগাঁও মূল সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সকালে উপাচার্যের কাছে পেশ করা পাঁচ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

অন্যদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, ১১ জানুয়ারি আয়োজিত পরীক্ষা স্থগিত ও হল বন্ধ রাখার মৌখিক আশ্বাসও দেন। তবে মৌখিক নয়, শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্য চান। পাশাপাশি অফলাইনে পরীক্ষা বন্ধের কোনো নির্দেশনা না আসায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চলমান রেখেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তেজগাঁও সড়কের উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যে কারণে বনানী, গুলশান, হাতিরঝিল, কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণী, কাকরাইল পর্যন্ত সড়কে থমকে গেছে যান চলাচল।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা। তবে তখন সেসব দাবি উপাচার্য উড়িয়ে দেন। পাশাপাশি বুটেক্স রেজিস্ট্রার শাহ আলিমুজ্জামান বেলাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, করোনা যার যার, দায়ভার তার তার। রেজিস্ট্রারের ওই বক্তব্যের পরই সড়কে নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীসহ মেসগুলোতে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছি। কেননা আমরা হলগুলোতে অনেক গাদাগাদি করে একই রুমে অবস্থান করি। যার কারণে হলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব নয়। আবার মন্ত্রিপরিষদ থেকে বলা হয়েছে, ১২ বছরের অধিক বয়সের শিক্ষার্থীরা এক ডোজ টিকা ছাড়া সশরীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবে না এবং টিকা কার্ড ছাড়া যানবাহনে উঠতে পারবে না। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী এক ডোজই এখনও পায়নি। অনেকে দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছে।

তারা বলেন, করোনার কারণে সংক্রমণের হার শুক্রবার পাঁচ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় খুব শিগগিরই হয়ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা আর সেশনজট বাড়াতে চাই না। বরং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা দ্রুত অফলাইনের বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষাগুলো দিতে চাই। করোনা বেড়ে গেলে প্রয়োজনে হল বন্ধ করেও যথাসময়ে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে চাই। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১১ জানুয়ারি পরীক্ষার আয়োজন করেছে। তাই আমরা পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছি। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি হচ্ছে,

১. অবিলম্বে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে হল বন্ধ করতে হবে।

২. অবিলম্বে অফলাইনের বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন দিন থেকে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ সময় নিয়ে নতুন রুটিনে অফলাইনের বিকল্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারে অথবা বর্তমান রুটিনের প্রথম দুটি পরীক্ষা পিছিয়ে বাকি পরীক্ষাগুলো আগের রুটিন অনুযায়ী নিতে পারে।

৩. করোনাকালে চলমান টার্ম পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে অবশ্যই চলমান টার্মের পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই আগামী টার্মের ক্লাস অনলাইনে শুরু করতে হবে এবং প্রতিদিন অন্তত চারটি এবং সর্বোচ্চ ছয়টি ক্লাস নিতে হবে।

৪. করোনা পরিস্থিতি খারাপ হলে এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্তে বিলম্ব হওয়ার দরুন যদি কোনো শিক্ষার্থী হলে আক্রান্ত বা সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তার এবং তার পরিবারের সার্বিক দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।

৫. দাবিগুলো মেনে নিয়ে আজকের মধ্যেই মৌখিক স্বীকৃতি এবং আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রশাসনকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভার্সিটির ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় আমরা সশরীরে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে যেকোনো শিক্ষাকার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকব।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি ও আন্দোলনের বিষয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) উপাচার্য অধ্যাপক আবুল কাশেম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। মৌখিকভাবে বলেছি, ১১ জানুয়ারির পরীক্ষা স্থগিত, হলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে, যাতে ওরা আতঙ্কিত না হয়ে সেফ জোনে চলে যেতে পারে। পরবর্তীতে পরীক্ষা অফলাইনে নাকি অনলাইনে হবে সেটি নিয়ে আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাব। সেজন্য ওদের কাছে সময় চেয়েছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App