২০ বছর ধরে পেটে কাঁচি বয়ে বেড়াচ্ছেন বাচেনা খাতুন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:০২ পিএম
ভুল চিকিৎসার ফলে ২০ বছর ধরে পেটে কাঁচি বয়ে বেড়াচ্ছেন বাচেনা খাতুন। ছবি: ভোরের কাগজ।
২০০২ সালে পিত্তথলির অপারেশনের পর গত বিশ বছর ধরে পেটের মধ্যে আর্টারি ফরসেপ (অপারেশনে ব্যবহৃত বিশেষ কাঁচি) বয়ে বেড়াচ্ছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার বাচেনা খাতুন নামের এক নারী।
কিন্তু কিভাবে তার পেটে কাঁচি থেকে গেল সেটি তিনি যেমন জানেন না, তেমনি তার অপারেশনের সঙ্গে জড়িত থাকা চিকিৎসকরাও বলতে পারেননি। তবে এখন আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক্সরেতে পেটে কাঁচি ধরা পড়লেও উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস থাকায় তার শরীর থেকে এটি অপসারণ করা যায়নি।
প্রায় ৫০ বছর বয়সী এ নারীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামে।
জানা গেছে, ২০০২ সালে মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসেন আলমডাঙ্গার হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী বাচেনা খাতুন। এ সময় ক্লিনিকটির পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা বাচেনা খাতুনকে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করার পরামর্শ দেন।
২০০২ সালের ২৫ মার্চ বাচেনা খাতুনের অপারেশন করেন রাজা ক্লিনিকের সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সঙ্গে সহকারি হিসেবে ছিলেন ক্লিনিকের পরিচালক ডাক্তার পারভিয়াস হোসেন রাজা ও এ্যানেস্থেসিয়া করেন ডাক্তার তাপস কুমার।
এদিকে রোগীর পেটে কাঁচি রাখার বিষয়টি অনাকাঙ্খিত ভুল হলেও ভুক্তভোগীকে সব রকম সহযোগীতা করা হচ্ছে এমন দাবী করেন ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার পারভিয়াস হোসেন রাজা।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে বাচেনা খাতুনের কাঁচি অপারেশনের জন্য চুয়াডাঙ্গার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক বাচেনার অতিরিক্ত মাত্রায় ডায়াবেটিস থাকায় অপারেশন না করে চিকিৎসা পরামর্শ দেন। ডায়াবেটিস কন্ট্রোল হলে তার অপারেশন করা হবে বলে জানানো হয়।
এ ঘটনায় রাজা ক্লিনিকের মালিকের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সিভিল সার্জন জাওয়াহেরুল ইসলাম। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর গাংনীর সেই রাজা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান এই কর্মকর্তা।