×

জাতীয়

দুর্নীতিতে অধিদপ্তর, দূষণে পরিবেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৩১ এএম

পরিবেশ দূষণের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে পরিবেশ অধিদপ্তর। দূষণ তৈরিকারী শিল্পকারখানাকে ঘুষের বিনিময়ে পরিবেশগত ছাড়পত্র দিচ্ছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে পরিবেশ দূষণ বেড়ে চলছে, পাশাপাশি বাড়ছে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, পরিবেশ অধিদপ্তর দুর্নীতি ও অনিয়মে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির দুর্নীতির বড় ক্ষেত্র পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া ও নবায়ন।

গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবেশগত ছাড়পত্র পেতে ৬৬ শতাংশ শিল্পকারখানাকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। শ্রেণিভেদে এই অর্থের পরিমাণ ৩৬ হাজার থেকে এক লাখ ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় শিল্পকারখানা স্থাপনের আইনি বিধান না থাকলেও ৭২ শতাংশ কারখানার অবস্থান আবাসিক এলাকায়। ক্ষমতার অব্যবহার ও ক্ষেত্রবিশেষে অবৈধ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে এটি করা হয়।

বুধবার এক ওয়েবিনারে 'পরিবেশ অধিদপ্তরে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন টিআইবির রিসার্চ ফেলো নেওয়াজুল মাওলা।

প্রতিবেদন উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে যে মৌলিক ভূমিকা, তা পালনে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সর্ষের মধ্যে ভূত দেখতে পাচ্ছি। পরিবেশ অধিদপ্তরের কারণে উল্টো পরিবেশ দূষণ বাড়ছে।

২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টিআইবির গবেষণাটি পরিচালিত হয়।টিআইবির গবেষণায় বলা হয়েছে, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজস্ব সংগ্রহে আগ্রহ বেশি থাকায় তা পরিবেশ রক্ষায় অন্যতম অন্তরায় ও দুর্নীতির ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরে তথ্যের উন্মুক্ততা ও স্বপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ঘাটতি রয়েছে। অধিদপ্তরের কাছে পরিবেশ দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তালিকা নেই। পাশাপাশি অধিদপ্তরের অনুমোদিত পদের ৫৯ শতাংশে জনবল নেই।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সুশাসনের চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণে টিআইবি ১০ দফা সুপারিশ প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আইনের যথার্থ প্রয়োগ, দৃঢ়তার সঙ্গে পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী বড় উন্নয়ন প্রকল্প-শিল্পকারখানাগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা, ওয়েবসাইটকে আরও তথ্যবহুল করা, ত্রুটিমুক্ত পরিবেশগত সমীক্ষা করা, সব কর্মীর বার্ষিক আয় ও সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করা, আইন সংশোধনের মাধ্যমে পরিবেশ আদালতে সাধারণ মানুষের সরাসরি মামলা করার সুযোগ রাখা।

টিআইবির গবেষণার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিবেশগত ছাড়পত্র শাখার সহকারী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান খানকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি। পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, টিআইবির প্রতিবেদন এখনও তিনি পাননি। প্রতিবেদনটি দেখে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন।

প্রতিবেদনের কিছু অংশ জানানো হলে মহাপরিচালক বলেন, আপনার যে প্রশ্ন আছে তা আমাকে লিখিতভাবে জানান। আমি দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রশ্নের জবাব দেব। এখন আমি খুব ব্যস্ত|

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App