×

জাতীয়

রেল ইঞ্জিনে সিএনজি ও এলএনজি ব্যবহারের চিন্তা: রেলমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৩০ পিএম

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস (সিএনজি) ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলএনজি) ব্যবহার করে ট্রেন চালানোর চিন্তাভাবনা করছে রেলওয়ে। এর জন্য বিদ্যমান ইঞ্জিনগুলোকে (লোকোমোটিভ) ‘ডুয়েল ফুয়েল’ ব্যবস্থায় রূপান্তরের করতে হবে।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রেল ভবনে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দুই দফায় যুক্তরাজ্য, জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও রাশিয়া সফরের বিষয় জানাতে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব বলেন।

বর্তমানে রেলের ইঞ্জিনগুলোর জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের মাধ্যমে (ইলেকট্রিক ট্র্যাকশন) ট্রেন পরিচালনার জন্য একটি সমীক্ষা প্রকল্পও গ্রহণ করেছে রেলওয়ে।

রেলমন্ত্রী জানান, ট্রেনের ইঞ্জিনগুলোকে সিএনজি বা এলএনজিতে রূপান্তরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার একাধিক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো বিদ্যুত চালিত ট্রেন পরিচালনা শুরু হয়নি। সব ট্রেনে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহৃত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে বিদ্যুত চালিত ট্রেন চালুর জন্য একটি সমীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে আরও আধুনিক, উন্নত এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তি নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। এ ক্ষেত্রে ভালো একটা বিকল্প হতে পারে এলএনজি বা এলপিজি।

মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের জি-ভলুশন ও এক্সপ্রোনেট কোম্পানি ডিজেলচালিত ইঞ্জিনকে সিএনজি বা এলএনজির মাধ্যমে ডুয়েল ফুয়েল ব্যবস্থায় রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। এই ব্যবস্থা পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী ও টেকসই। রাশিয়ার ট্রান্সম্যাশহোল্ডিং (টিএমএইচ) কোম্পানির সঙ্গেও একই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বিদ্যুত চালিত ট্রেন প্রবর্তন অনেক ব্যয়বহুল। সারা দেশে বিদ্যুত চালিত ট্রেন প্রবর্তনের জন্য মোটা অঙ্কের বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। কাজেই বিদ্যুতের দিকে না গিয়ে যদি গ্যাসের দিকে যেতে পারি, তাহলে আমাদের জন্যই এটা সুবিধার। আমরা আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলেছি, আপনারা এই প্রযুক্তি নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। পরীক্ষামূলক হিসেবে ১০টি ইঞ্জিনে ডুয়েল-ফুয়েল ব্যবস্থা চালু করেন। তারপর যদি দেখি যে এটা ব্যয়সাশ্রয়ী, তাহলে আমরা পরবর্তী সময়ে বড় পরিসরে কাজ করতে পারি বলে তাদের জানিয়েছি।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামর্থ্য অর্জনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ যে বিনিয়োগের জন্য একটি ভালো জায়গা, ইউরোপের কোম্পানিগুলোকে তা অবহিত করা হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো তাদের রেলওয়ে ব্যবস্থাকে যেভাবে আজকের এই পর্যায়ে এনেছে, তাদের কাছ থেকে সেই অভিজ্ঞতা গ্রহণ করে বাংলাদেশে একটি টেকসই ও আধুনিক রেলওয়ে ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

ইউরোপের দেশগুলো বাংলাদেশের রেল খাতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারে, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন ভিক্ষা চাওয়ার মতো জায়গায় নেই। এসব দেশ কত বিনিয়োগ করবে, সেই চিন্তা করে আমরা সফরে যাইনি। আমরা রেলকে আধুনিক ও উন্নত করতে চাই। আমরা এখন চীনের বিনিয়োগ পাচ্ছি। দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, জাপানসহ এশিয়ার দেশগুলোর বিনিয়োগ পাচ্ছি। ইউরোপের দেশগুলো থেকে বিনিয়োগ আনার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কারিগরি, তথ্যপ্রযুক্তিগত ও জ্ঞানগত সহযোগিতা পাওয়া আমাদের এই সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।

সম্মেলনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হ‌ুমায়ূন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদারসহ মন্ত্রণালয় ও রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App