×

সারাদেশ

আখাউড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে খুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:০১ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার শান্তিনগরের জোহারা খাতুনকে (৭৮) কুপিয়ে খুন করে তারই ছোট ছেলে জামির খাঁ। জমি নিয়ে ৩৬ বছর ধরে চলা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে নিজেরা সুবিধা নিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

পুলিশের হাতে আটকের পর জামির হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জামিরের ঘর থেকে উদ্ধারের পর সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে আটক করে। পরিবারের লোকজনদের সামনে মুখোমুখি করার পর জামির হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে জানায়, বিরোধে অতিষ্ঠ হয়ে রাগের মাথায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটান তিনি।

রবিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে বৃদ্ধা জোহরা খাতুনকে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি শান্তিনগর এলাকার প্রয়াত রশিদ খাঁর স্ত্রী। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় জামিরের বড় ভাই জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশি আত্মীয়রা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিপক্ষের তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে পুলিশ জামিরকেও আটক করে।

স্থানীয় লোকজন জানান, রশিদ খাঁর সঙ্গে প্রতিবেশি আত্মীয় বজলু খাঁর পরিবারের জায়গা নিয়ে বিরোধ ছিলো। আদালতের রায়ে রশিদ খাঁর পক্ষ জায়গাটি দখলে নেয়। রবিবার দুপুরে ওই জায়গার সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে দিয়ে রশিদ খাঁর পরিবারের উপর হামলা চালানো হয়।

বৃদ্ধার ছেলে জাহাঙ্গীর খাঁ তাৎক্ষনিকভাবে জানান, জায়গা নিয়ে বিরোধের জেরে ফজল খাঁ, ইয়াছিন খাঁসহ আরো কয়েকজন হামলা চালায়। বাড়িতে ঢুকে তারা এ হত্যাকাণ্ড চালায়।

শান্তিনগরের বাসিন্দা মো. মোসলেম উদ্দিন জানান, পারিবারিক বিরোধে সৃষ্ট মারামারির খবর পেয়ে সেখানে তিনি ছুটে যান। হামলায় এক বৃদ্ধা মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছেন।

ঘটনাস্থলে থাকা ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জান্নাত হোসেন জানান, জমি নিয়ে বিরোধে চাচাতো নাতিসহ অন্যরা এ হামলা চালায় বলে পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছেন। পুলিশ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে আরেক পক্ষের দু'জনকে আটক করে নিয়ে যায় বলে জানতে পেরেছি।

এ ঘটনায় আরেকটি সূত্র জানায়, বিভিন্নভাবে তদন্ত করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা নিহতের বাড়িতে পাওয়া গেলে সন্দেহ পাকাপোক্ত হয় পুলিশের। জামিরকে আটকের পরই ঘটনার মোড় ভিন্ন দিক নিতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাকে তার পরিবারের লোকজনের সামনে এনে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে এক পর্যায়ে সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে।

জামির পুলিশকে জানায়, জায়গা নিয়ে বিরোধে তারা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে উঠে। আদালতের রায় পেলেও তারা ভোগদখল করতে পারছিলেন না। রবিবার প্রতিপক্ষ বাড়ির দেয়াল ভাঙ্গলে তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য হুট করে রাগের মাথায় মাকে হত্যা করেন।

আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, সন্দেহ হলে জামিরকে থানায় আনা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য জামিরকে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, আটক প্রতিপক্ষের তিনজনের বিরুদ্ধে বেআইনী দলবদ্ধ হয়ে আক্রমনের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App