প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় সৃষ্ট সংকটে প্রবাসী আয় টানা ছয় মাস কমলেও গত বছর বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে।

২০২১ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এর আগে কখনো কোনো বছর এত বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। তবে এক বছরে রেমিট্যান্স বাড়লেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২১ শতাংশ কমেছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ২৩ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল এক হাজার ২৯৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিট্যান্স কমেছে ২৭০ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ।

রেমিট্যান্স খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোভিডের কারণে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে বা ব্যবসা বন্ধ করে সব অর্থ পাঠিয়ে দেশে ফিরেছেন। এছাড়া করোনা মহামারীর ফলে দেশে টাকা পাঠানোর অবৈধ চ্যানেলগুলো বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা বাধ্য হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়েছেন। এর ফলে গত বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি ছিল।

এখন ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বহির্বিশ্বের সঙ্গে যাতায়াত বাড়ছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া জমানো টাকা না পাঠিয়ে অনেকে আবার জমাতে শুরু করেছেন। আবার সশরীরে বিদেশে যাওয়া-আসা শুরু হওয়ায় অনেকে সঙ্গে করে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসছেন। যার ফলে গত বছর শেষ ছয় মাসে বৈধ পথে রেমিট্যান্স কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসীরা গত ডিসেম্বর মাসে ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে ২০২১ সালে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৭ কো‌টি টাকার বেশি (প্রতি ডলার = ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা হিসেবে)। যা ইতিহাসে একক বছরে সর্বোচ্চ রে‌মিট্যান্স আহরণ। এর আগে ২০২০ সালে সর্বোচ্চ রে‌মিট্যান্স ২ হাজার ১৭৪ কোটি ডলার দেশে এসেছিল।