সাড়ে ৫ কোটি টাকা আত্মসাত
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট কেনার পরিবর্তে শুধুমাত্র সার্চ লাইট কিনে ৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দুই মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও পরিচালকসহ সাত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত সপ্তাহে মামলার অনুমোদন দেয়া হলেও দুই একদিনের মধ্যে সংস্থার সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর।
অনুমোদন হওয়া মামলার আসামিরা হলেন- বিআইডব্লিউটিসির সাবেক চেয়ারম্যান ও পরিচালক (কারিগরি) ড. জ্ঞান রঞ্জন শীল, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ক্যাপ্টেন শওকত সরদার, নুরুল হুদা, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি পঙ্কজ কুমার পাল, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (মেকানিক্যাল) ইঞ্জিনিয়ার মো. রহমত উল্লা, বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) মেকানিক্যাল বিভাগের ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং মেসার্স জনি কর্পোরেশনের মালিক ওমর আলী।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১০ কিলোমিটার দেখা যায় এমন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট কেনার উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিসি। এরপর ২০১৫ সালের জুন মাসে আরিচা ও মাওয়া ঘাটে ১০টি লাইট স্থাপন করা হয়। কাগজপত্রে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট স্থাপনের কথা বলা হলেও অনিয়মের মাধ্যমে শুধুমাত্র সার্চ লাইট বসানো হয়েছে। অনুসন্ধানকালে দুদক জানতে পারে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ও পিএসআই কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে সার্চ অ্যান্ড ফগ লাইটের পরিবর্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সার্চ লাইটসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয় করে সরকারের ৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন।
অনুসন্ধানকালে দুদক জানতে পারে, ২০১৫ সালের ৪ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত মোট ১০টি ফেরিতে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইট স্থাপন করা হয়েছে। ফেরিগুলো হলো- আরিচায় চলাচলকারী ফেরি খাঁন জাহান আলী, ফেরি জাহাঙ্গীর, ফেরি এনায়েতপুরী, ফেরি কপোতী, ফেরি কুমারী। মাওয়ার ফেরিগুলো হলো- বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, আমানতশাহ, শাহ আলী, কাকলী ও ক্যামেলিয়া। এসব লাইট স্থাপনের পরেও ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হলে লাইটের বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে ফগ অ্যান্ড সার্চ লাইটের অস্তিত্ব নেই বলে উল্লেখ করা হয়। দুদক জানায়, অনুমোদন হওয়া মামলায় তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।