বুস্টার ডোজ : টিকাপ্রাপ্তি নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৪৬ এএম
দেশে করোনার টিকার বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে গত মঙ্গলবার থেকে। আগে বয়স্ক, স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইনারদের এই টিকা দেয়া হচ্ছে। বুস্টার ডোজ কতটা সুরক্ষা দিবে সেটা দেখার বিষয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন ধরনে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও ফাইজারের দুই ডোজ টিকার কার্যকারিতা কমে গেছে। তবে বুস্টার ডোজ করোনার যে কোনো উপসর্গের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৫ ভাগ সুরক্ষা দিয়েছে। এমন তথ্য আশাজাগানিয়া। জানা গেছে, ওমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে করোনার দুই ডোজ টিকাও যথেষ্ট নয়। সম্প্রতি এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা। নতুন ধরন ঠেকাতে দুই ডোজ টিকা অপেক্ষাকৃত কম কার্যকরী। কিন্তু তৃতীয় বুস্টার ডোজ করোনার যে কোনো উপসর্গে আক্রান্ত হওয়া থেকে প্রায় ৭৫ ভাগ সুরক্ষা দেয়। এমন মত বিজ্ঞানীদের। এরপর থেকে শুরু হয়েছে বুস্টার ডোজ কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশেও ডোজ দেয়া শুরু করেছে সরকার। যারা বুস্টার ডোজ পাবেন তাদের এসএমএস পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে। যারা ইতোমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন এবং দুই ডোজ টিকা নেয়ার সময় যাদের ৬ মাস পার হয়েছে, ষাটোর্ধ্ব এবং যারা ফ্রন্টলাইনার তাদের কাছে এই এসএমএস যাবে। তবে টিকা প্রদানে গতি বাড়ানো ও শৃঙ্খলা ফেরানো জরুরি। দেশে ১০ মাসের বেশি সময় ধরে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশের ২৩ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ পূর্ণ দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। টিকাদানে গতি না বাড়ালে ৮০ শতাংশ মানুষকে পূর্ণ দুই ডোজ টিকার আওতায় আনতে আরো ২৪ মাস সময় লেগে যেতে পারে। বর্তমানে যেভাবে মানুষ নতুন করে ওমিক্রন আক্রান্ত হচ্ছে তাতে দ্রুততম সময়ে সাধারণ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে সঠিক পদক্ষেপ। শুরুতে টিকা নিয়ে সমাজে নানা ধরনের অপপ্রচার এবং ভীতি তৈরি হলেও সে অবস্থা এখন নেই। এখন টিকা নেয়ার বিষয়ে সবার মাঝেই আগ্রহ লক্ষণীয়। টিকা কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক ভিড় বলে দিচ্ছে সবাই এখন টিকা নিতে আগ্রহী। তবে টিকা প্রদানে নানা ধরনের অভিযোগ গণমাধ্যমে আসছে। কেন্দ্রে সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনা, গণচাপসহ সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই উপেক্ষিত হচ্ছে। টিকা দেয়ার সময় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ায় করোনার উচ্চ সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, এ ধরনের কার্যক্রম শুরুর আগে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এই ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। দেশে চলমান করোনার টিকা কার্যক্রমে বিশেষ গতি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি টিকা প্রদান করতে গিয়ে এক ধরনের অব্যবস্থাপনা আমরা দেখেছি। সরকার যেভাবে দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করেছে তা প্রদানের বিষয়টিও সেভাবে দ্রুতায়িত করতে হবে। সব মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষ যাতে সহজে টিকা পায় এবং গ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। টিকার আওতায় সবাইকে না আনতে পারলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা অনেক কঠিন ব্যাপার। পাশাপাশি টিকা প্রদানে শৃঙ্খলার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। সর্বোপরি, দেশে টিকা প্রদানযোগ্য মানুষের সংখ্যা ১৩-১৪ কোটি হওয়ায় টিকাপ্রাপ্তির বিষয়টিকে নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে।