×

চিত্র বিচিত্র

লাহোরের ট্রাফিক আইল্যান্ডে হাজারো পাখির বাসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৩৮ পিএম

লাহোরের ট্রাফিক আইল্যান্ডে হাজারো পাখির বাসা

ছবি: সংগৃহীত

লাহোরের ট্রাফিক আইল্যান্ডে হাজারো পাখির বাসা
লাহোরের ট্রাফিক আইল্যান্ডে হাজারো পাখির বাসা

ছোট থেকেই শহরের অলিগলিতে ঘোরাফেরা। তা-ও যেন পুরোপুরি চেনা ছিল না লাহোর। পাকিস্তানের এ শহরের বহু বাসিন্দাই এমন কথা বলছেন। তাদের মতে, শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাজার হাজার পাখির বাসা গড়ে ওঠার পর থেকেই ভোল বদলে গেছে লাহোরের। শহুরে ব্যস্ততার ভিড়েও ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিদের আনাগোনা বেড়েছে। ইস্তানবুল চকের ‘বার্ড হাউস’-এর জন্যই তা নাকি সম্ভব হয়েছে।

ইস্তানবুল চকে গড়ে তোলা হয়েছে হাজার হাজার পাখির বাসা। তা সম্ভব হল কী করে? স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তুরস্কের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক হিসাবে গড়ে তোলা এক সৌধের জেরেই তা সম্ভব হয়েছে।

লাহোরে ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের অভাব নেই। তবে ইস্তানবুল চকের একেবারে মাঝে গড়ে ওঠা এই স্থাপত্যের ফলে শহরের রূপ যেন বেশ খোলতাই হয়েছে।

২০১৫ সালে ইস্তানবুল চকে এই সৌধের উদ্বোধন করা হয়েছিল। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, একটি গাছ যেন ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আসলে, একটি দীর্ঘকায় স্তম্ভের উপরে ছোট ছোট আকারের পাখির বাসা ডানা মেলেছে এই স্তম্ভে।

ছোট ছোট পাখির বাসা একত্রে থাকায় প্রতি দিনই তাতে পাখিদের ভিড় দেখা যাচ্ছে। শহরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই বাসাগুলিতে স ধরনের পাখিই দেখা যায়। তবে পায়রার সংখ্যাই বেশি।

ইস্তানবুল চকে পায়রাদের দানা খাওয়ানোর জন্যও ছুটে আসছেন লাহোরের বহু বাসিন্দা। ভিড় করছেন পর্যটকেরাও।

হাজার হাজার পাখির বাসা এক সঙ্গে থাকায় শহরের শোভা যেন বেড়ে গেছে। এমনই মনে করছেন লাহোরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আসিফ। তার কথায়, ছোটবেলা থেকেই এখানে আসছি। তবে এখন যেন ইস্তানবুল চককে চেনাই যায় না। এমনকি, আমাদের মতো স্থানীয় বাসিন্দারাও এক সময় এ জায়গার নাম ভাল করে জানতেন না। তবে এই সৌধটি গড়ে ওঠার পর সে সব বদলে গেছে।

আসিফ জানিয়েছেন, সৌধ গড়ে ওঠার আগে ইস্তানবুল চকে একটি নৌকার মডেল ছিল। তবে এখন পাখির বাসা হওয়ায় তিনি পায়রাদের দানা খাওয়াতে প্রায়শই এখানে আসেন। আসিফ বলেন, ইস্তানবুল তো আমাদের কাছে নতুন নাম নয়। আতার্তুক এবং ইস্তানবুলের কথা ইতিহাস বইতে পড়েছি। তবে সে শহর যে দেশে, সেই তুরস্কের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক গাঢ়।

আসিফের মন্তব্যের সুরই শোনা গেছে, লাহোরের মেয়র মুবাসশির জাভেদের কণ্ঠে। তিনি বলেন, তুরস্ত এবং পাকিস্তানের বন্ধুত্বের নিদর্শন হল ইস্তানবুল চক। সেই সঙ্গে শহরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে এটি নতুন সংযোজন।

২০১৫ সালে এই সৌধ উদ্বোধনে লাহোরের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানে তুরস্কের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সাদিক বাবুর গুরকিন। মেয়র মুবাসশির জানিয়েছেন, লাহোরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালের অন্তর্গত লাহোর কলেজ অব আর্ট-এর পড়ুয়ারাই এই সৌধের নকশা তৈরি করেছেন।

সৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এর নকশা বাছাই করতে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন লাহোরের মেয়র। নায়ার আলি দাদা এবং রশিদ রানার মতো আর্টওয়ার্ক বিশেষজ্ঞরা ওই প্রতিযোগিতা থেকে সৌধের চূড়ান্ত নকশা বেছে নেন।

মেয়র মুবাসশির জানিয়েছেন, গোড়া থেকেই আমাদের খেয়াল ছিল যাতে এ সৌধে পায়রা বা অন্য পাখিরা এসে বসতে পারে। সে জন্য শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এই সৌধ বসানোয় সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, প্রত দিন এ সৌধে হাজার হাজার পায়রা এসে বসে। লোকজন তাদের নানা ধরনের খাবারদাবারও দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App