×

জাতীয়

জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ন্যাপ: সাবের হোসেন চৌধুরী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:২৯ পিএম

জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ন্যাপ: সাবের হোসেন চৌধুরী

বুধবার জাতীয় পর্যায়ের অংশীজন সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবের হোসেন চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে কোন কিছুরই তুলনা হয় না, কিন্তু স্বাধীনতার মূল আকাঙ্খার সঠিক বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই আমাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। আর টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে একটি যথাযথ ন্যাশনাল এডাপটেশন প্ল্যান (ন্যাপ) প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

ন্যাপ আমাদের জাতীয় জীবনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা অতীতেও অনেক ডকুমেন্ট প্রস্তুত করেছি। এখন আমাদের প্রয়োজন অতীতের সফলতা এবং ব্যর্থতাগুলোর সঠিক মূল্যায়ন করা এবং আমাদেরকে অতীতের ব্যর্থতাগুলো থেকে অবশ্যই শিক্ষা নিতে হবে, না হলে ন্যাপ কখনোই সফল হবে না।

তিনি আরো বলেন, ন্যাপকে অবশ্যই একটি ‘লিভিং ডকুমেন্ট’ হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে। সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে তৈরি করতে হবে। আজকের এই ‘অংশীজন সংলাপ’ এবং সিপিআরডির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আনিত উপাত্ত এবং প্রস্তাবনাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা হতে পারে। ন্যাপ প্রণয়ন প্রক্রিয়াটি বটম-আপ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। আমরা সবাই চাই একটি অংশগ্রহণমূলক এবং যথাযথ ন্যাপ। আয়োজন দেখে মনে হচ্ছে- আমরা সঠিক পথেই আছি বলেও জানান তিনি।

বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের অংশীজন সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিসিএএস নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামছুদ্দোহা।

ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স হলে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এর আয়োজনে এবং অ্যাওসেড, ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ড, সিসিবিভিও, ডিয়াকোনিয়া এবং এসডিএস এর সহযোগিতায় জলবায়ু পরির্বতনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় অঞ্চলভিত্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তকরণ বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ের অংশীজন সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অঞ্চলে (উপকূলীয় অঞ্চল, নদী-ভাঙ্গন প্রবণ অঞ্চল, খরাপ্রবণ অঞ্চল) সিপিআরডি এবং তার পার্টনার সংগঠনগুলো কতৃক পরিচালিত অধিপরামর্শ সভায় প্রাপ্ত পরামর্শ, প্রস্তাবনা ও উপাত্তগুলো উপস্থাপন করা হয়।

এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব ধরিত্রী কুমার সরকার, সিনিয়র সাংবাদি নিখল চন্দ্র ভদ্র প্রমুখ। এছাড়া সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকরা অংশ নেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আতিক রহমান বলেন, ন্যাপ প্রক্রিয়াটি ধীরে ধীরে এগোচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়াটি আগামী ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে শেষ হবার সম্ভাবনা আছে। ন্যাপ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অঞ্চলগুলোর নিজস্ব বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশ একটি উপকূলীয় দেশ। ফলে দেশের সব অঞ্চলেই জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্টভাবেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বলেন, সুশাসন শুধুমাত্র দুর্নীতি বন্ধ করাই না, একইসঙ্গে সঠিক সময়ে সঠিক নীতি প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নও সুশাসনের অংশ। ন্যাপ প্রণয়নের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে বলে তাগিদ দেন তিনি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মো: শামছুদ্দোহা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবেলা ও অভিযোজন কার্যক্রমে সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। ইউএনএফসিসিসি এর নির্দেশিত গাইডলাইন অনুসারে ন্যাপ তৈরির প্রক্রিয়াটি অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ হতে হবে এবং পরিকল্পনাটি নারী, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর বিশেষ ঝুঁকি ও একইসঙ্গে স্থানীয় দুর্যোগ ঝুঁকি ও ঝুঁকি হ্রাসে করণীয় বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রণীত হতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর এবং বিভিন্ন অংশীজনের যথাযথ অংশগ্রহণ ছাড়া ন্যাপ প্রণয়ন করা হলে পরিকল্পনাটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি সব অংশীজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে স ধরনের জড়তা ঝেড়ে ফেলে কাজ করার আহবান জানান।

অভিযোজন করারও একটি সীমা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধের কার্যকর উপায় কার্বন নির্গমন হ্রাসকরণের বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগ ও বিশ্বসম্প্রদায়কে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে। আগের মতোই ন্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটিতেও সিপিআরডি ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর মতামত উপস্থাপন, গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশ ও বিভিন্ন পাবলিকেশন এবং নীতিনির্ধারকগণকে প্রয়োজনীয় জ্ঞাননির্ভর সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App