×

খেলা

স্বাধীনতা সংঘকে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে মোহামেডান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৪৪ পিএম

স্বাধীনতা সংঘকে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে মোহামেডান

সোমবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ফেডারেশনকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বল নিয়ে ছুটছেন মোহামেডানের সুলেমান দিয়াবাতে। ছবি : ভোরের কাগজ

বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপে সোমবার ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচ শেষ হয়েছে নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। টাইব্রেকারে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘকে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান। এর আগে কমলাপুরে নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ১-১ গোল সমতায় শেষ হয়। এদিকে উত্তর বারিধারা ক্লাব টুর্নামেন্টে অংশ না নেয়ায় সন্ধ্যায় মাঠে নামা হয়নি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। অন্যদিকে, খেলতে অস্বীকৃতি জানানোয় বসুন্ধরা কিংস ও উত্তর বারিধারা ক্লাবকে জরিমানার পাশাপাশি আগামী ফেডারেশন কাপেও নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

চলতি ফেডারেশন কাপে ‘এ’ গ্রুপে থাকা তিন দলের মধ্য মোহামেডান ও স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ অংশ নিলেও অংশ নেয়নি বসুন্ধরা কিংস। ফলে কোনো সমীকরণ ছাড়াই এই দুই দল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যাচ্ছে এটা আগে থেকেই নিশ্চিত। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে সমীকরণ মেলাতে হলে প্রতি গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দল নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু গ্রুপের এক মাত্র ম্যাচটি ড্র হলে চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপ নির্ধারণ হবে কি করে। সোমবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মোহামেডান ও স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের ফলাফল এমনই হলো। কিন্তু তখনো হুঁশে ছিল না ম্যাচ আয়োজকরা। খেলা শেষ, স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের বাতি নিভে গেছে। পোশাক পরিবর্তন করে মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের খেলোয়াড়েরা বাসের সিটে বসে পড়েছেন। বাস ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন তারা। প্রতিপক্ষ স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের খেলোয়াড়রাও মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন নিজেদের বাসের অপেক্ষায়। এমন সময় খবর আসল আবার খেলোয়াড়দের মাঠে ফিরতে হবে। নামতে হবে টাইব্রেকার নামক স্নায়ুর লড়াইয়ে।

লাল জার্সি পরিহিত মোহামেডানের গোলরক্ষক মোহাম্মদ সুজন। খেলা শেষ করে বাসে উঠে ঘুমাচ্ছিলেন। তাকে ডেকে এনে টাইব্রেকারে নামানো হয়। ম্যাচটি যেহেতু ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ নির্ধারণ করতে ম্যাচের ফল বের করতে হবে। মাঠে ফিরলেন স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের ফুটবলাররাও। দু দল গা গরম করে নেমে পড়ল টাইব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে স্বাধীনতাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে মোহামেডান। তবে হেরে বাদ যায়নি স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘও। রানার্স আপ হয়ে ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে তারা। ফেডারেশন কাপের একই গ্রুপে মোহামেডান ও স্বাধীনতার সঙ্গে ছিল বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু খেলোয়াড়দের সুরক্ষার কথা ভেবে ঝুঁকিপূর্ণ টার্ফে না খেলার সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বাফুফেকে জানিয়ে দেয় বসুন্ধরা। তাই গ্রুপে দল দুটি। কোয়ার্টার ফাইনালে কে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হিসেবে খেলবে, এই নিয়েই প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠেছে, ফেডারেশন আগে কেন টাইব্রেকারের ব্যবস্থা করেনি কেন?

এর আগে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ছিল ১-১ গোলে ড্র হয়। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে মালির স্ট্রাইকার ও দলের অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতের গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান। সাহেদ মিয়ার কর্নারে বক্সের মধ্যে লাফিয়ে উঠে হেডে গোলটি করেন দিয়াবাতে। এক মিনিট পরেই স্বাধীনতাকে ম্যাচে ফেরায় বসনিয়ার স্ট্রাইকার নেদো তুর্কোভিচ। রাসেল আহমেদের রক্ষণচেরা থ্রু থেকে ডান পায়ের প্লেসিংয়ে গোলটি করেন তিনি।

এদিকে ফেডারেশন কাপে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে কড়া শাস্তি পেয়েছে বসুন্ধরা কিংস ও উত্তর বারিধারা। বাফুফে ডিসিপ্লিনারি কমিটি দল দুটিকে এই টুর্নামেন্টের পরের আসরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। বাফুফে সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে কিংস ও উত্তর বারিধারাকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানার করার সিদ্ধান্তও জানায়। জরিমানার অর্থ আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে পরিশোধের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে ডিসিপ্লিনারি কমিটি। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গত শনিবার প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিনে শিরোপাধারী কিংসের ম্যাচ ছিল স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে। উত্তর বারিধারার খেলা ছিল আবাহনীর বিপক্ষে। প্রতিপক্ষ যথাসময়ে মাঠে এলেও কিংস ও উত্তর বারিধারা ছিল অনুপস্থিত।

নিয়মবহির্ভূতভাবে সূচি পরিবর্তন এবং কমলাপুরের টার্ফ খেলার উপযোগী নয়- এই দুই কারণ জানিয়ে প্রতিযোগিতা শুরুর আগে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বাফুফেকে চিঠি দিয়েছিল কিংস। টার্ফ নিয়ে আপত্তি তুলে না খেলার কথা ঘরোয়া ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানিয়েছিল উত্তর বারিধারাও।

সূচিতে বদল এনে ফেডারেশন কাপ টার্ফেই চালিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে অটুট থাকে বাফুফে। নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কিংস ও উত্তর বারিধারাও মাঠে আসেনি। দুই ম্যাচেই বাইলজ অনুযায়ী ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে মাঠ ছাড়েন ম্যাচ কমিশনার। ওই দিনই সন্ধ্যায় বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি ও পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী জানিয়েছিলেন বাইলজ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। কেউ খেলুক বা না খেলুক, ফেডারেশন কাপ চলবে বলেও জানান তিনি। ডিসিপ্লিনারি কমিটি সোমবার তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বাইলজ অনুযায়ী স্বাধীনতা ও আবাহনী যথাক্রমে কিংস ও উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয় এবং পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পাবে। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে গত রবিবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের ম্যাচ ছিল। শেখ জামাল মাঠে এলেও আসেনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ভেস্তে যাওয়া এই ম্যাচের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এখনো জানায়নি বাফুফে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App