×

সারাদেশ

লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: কেরাণীগঞ্জ থেকে মালিক হামজালাল গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:১১ এএম

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চের মালিক শেখ হামজালালকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

র‌্যাব বলছে, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর এক আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন হামজালাল।

এর আগে রবিবার এক সাক্ষাৎকারে হামজালাল বলেন, এ মাসেই লাগানো রিকন্ডিশনড ইঞ্জিনে কোনো ত্রুটি ছিল না। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিন রুমের কাছে রাখা কয়েক হাজার লিটার তেল। লঞ্চে অগ্নি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও সেগুলো ব্যবহারের সময় পাওয়া যায়নি। লঞ্চটি যখন আমার, দায়-দায়িত্বও আমার। ক্ষতিপূরণসহ যেকোনো পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত আছি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা সদরঘাট থেকে কয়েকশ যাত্রী নিয়ে রওনা হয়েছিল এমভি অভিযান-১০। চাঁদপুর, বরিশাল ও দপদপিয়া ঘাট ছেড়ে লঞ্চটি যাচ্ছিল বরগুনার দিকে। শীতের রাতে যাত্রীদের অধিকাংশই ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ৩টায় লঞ্চটিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। পুরো লঞ্চে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পরে আগুন। সেই আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের সময় লেগেছে প্রায় তিন ঘণ্টা। লঞ্চ আর নদী থেকে ৩৬ জনের লাশ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। অনেকের লাশ শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) মো. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে। ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ জাহাঙ্গীর হোসেন শনিবার ঝালকাঠি সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন।

এরপর বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম নাসির রবিবার ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে। সেখানে লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকেও আসামি করা হয়েছে।

আর সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদী হয়ে রবিবার তৃতীয় মামলাটি দায়ের করেন মতিঝিলের নৌ আদালতে। পরে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পুরো নৌযানটি আগুনে পুড়ে যায়। সেখানে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রও ছিল না। পর্যপ্ত বালির ব্রাক্স ও বালতি ছিল না। ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিত অনেকগুলো ডিজেল বোঝাই ড্রাম এবং রান্নার জন্য সিলিন্ডার গ্যাসের চুলা ছিল, যা নিয়মের পরিপন্থি।

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল আইনের ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় করা এ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App