গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পর পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন বরিশালের হিজলার আসপিয়া ইসলাম।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে হিজলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র আসপিয়ার কাছে পৌঁছে দেন।

নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে আসপিয়া ও তার পরিবার আনন্দিত। এ জন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আসপিয়া বলেন, পুলিশের চাকরির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের মাথা গোঁজার ব্যবস্থাও হয়েছে। জেলা প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দ দিয়েছে, নির্মানাধীন এ ঘরের মাধ্যমে বরিশালের হিজলায় আমাদের স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে।

হিজলা থানা সূত্রে জানা যায়, নিয়োগপত্রটি আসপিয়ার হাতে শনিবার রাতে তুলে দেন হিজলা থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান। নিয়োগপত্রে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে জেলা পুলিশ লাইনসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেখান থেকে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ছয় মাসের প্রশিক্ষণের জন্য রংপুরে পাঠানো হবে।

বাবার মৃত্যুর পর আসপিয়া ইসলামের পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন শুরু হয়। এর মধ্যে গত বছর এইচএসসি পাস করেন আসপিয়া। স্বপ্ন ছিল পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করে সংসারে সচ্ছলতা আনবেন। সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির আবেদন করার পর পরীক্ষার সব কটি ধাপে উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু নিজেদের কোনো জমি না থাকায় তার চাকরি হচ্ছিল না।

জমি না থাকায় চাকরি হবে না, এটা জেনে আসপিয়া বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম আকতারুজ্জামানের কার্যালয়ে ছুটে যান। চাকরি না হওয়ার কারণ জানার জন্য ডিআইজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আসপিয়া। ডিআইজি তাকে জানান, পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীকে অবশ্যই নিজ জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। কিন্তু আসপিয়ার হিজলায় নিজস্ব কোনো জমি নেই। তাই আইন অনুযায়ী তাকে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। হতাশ আসপিয়া দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত বরিশাল পুলিশ লাইনসের মূল ফটকের সামনে বসে থাকেন।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এটি আলোচনার জন্ম দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আসপিয়াকে জমিসহ ঘর এবং যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানিয়েছেন,আসপিয়া বরিশালের জেলা কোটাতেই চাকরি পেয়েছেন।