×

জাতীয়

আইন প্রণয়নের দাবি জানাবে বাম দলগুলো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৪৩ এএম

নির্বাচন কমিশন গঠনে এখনো আইন প্রণয়ন না হওয়ায় এবারো ইসি পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতিকে সার্চ কমিটির পথে যেতে হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত সোমবার থেকে নির্বাচন কমিশনে তালিকাভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে এর সূচনা হয়। তবে নিবন্ধিত বাম দলগুলোর পক্ষ থেকে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হবে বলে জানিয়েছে দেশের বামপন্থী দলগুলো। এদিকে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। ফলে এর আগেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন নিয়োগ দেবেন। এ কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

সংলাপে দ্বিতীয় দল হিসেবে সরকারের জোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গতকাল বুধবার বিকালে ৪টায় রাষ্ট্রপতি সঙ্গে সংলাপে একই দাবি জানিয়েছে। এরপরে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দলসহ বেশ কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলব একাদশ সংসদ নির্বাচন যেমন ৩০ তারিখের ভোট আগের রাতে শেষ হয়েছিল, এতে রাষ্ট্রপতি দুঃখ প্রকাশ করবেন কিনা, সেটা আমরা জিজ্ঞেস করব। দেখি উনি এ বিষয়ে কী বলেন, দেখি উনি বলেন কিনা গতবার যে ইসি তিনি বানিয়েছিলেন, সেটা ঠিক ছিল না। তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি। এটা তিনি স্বীকার করেন কিনা।

এদিকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা বারবার সংসদে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু কোনো সরকার সেদিকে নজর দেয়নি। মেনন বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সংবিধানে যে আইনের কথা বলা হয়েছে, তা যেন করা হয়। তবে সংলাপে আমরা চাইব স্বাধীন কর্মক্ষণ ইসি, যারা নির্বাচনী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগে কুণ্ঠিত বা কারো নির্দেশের অপেক্ষা করবে না, স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম হবে তেমন কমিশন যেন তিনি গঠন করেন। তবে আইন প্রণয়নের ওপর জোর দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, একাদশ নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট দিয়ে ভোট বাক্স ভরার বিষয়টি দেশের সবাই জানে। এ কমিশন ছিল সরকারের আজ্ঞাবাহী কমিশন। এ ধরনের কমিশন যদি রাষ্ট্রপতি আবারো গঠন করেন, তাহলে তো সংলাপ, সার্চ কমিটি এসব করার প্রয়োজন পড়ে না।

তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে বলব এখনো অনেক সময় আছে সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি যথাযথ আইন প্রণয়ন করা। সংবিধানসম্মতভাবে ইসি গঠনের জন্য আইন প্রণয়নের জন্য তাকে বলব। তবে আমাদের ৮টি দলের একটি জোট আছে, জোটের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তবে বাসদ সংলাপে সংসদে আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব দেবে বলে জানান তিনি।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া জানান, তার দল সংলাপে অংশ নেবে এবং তারা তাদের মতামত তুলে ধরবেন। তবে ইসি গঠনে আইন করার বিষয়ে তিনি জানান, ইসি গঠনে সংসদে সর্বসম্মতভাবে একটা আইন পাস করা জরুরি।

বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, নতুন ইসি গঠনে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গেই রাষ্ট্রপতি আলোচনা করবেন। আলোচনা শেষে আপিল বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যিনি প্রধান বিচারপতি নন, তার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। এতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, মহাহিসাব নিরীক্ষক, নিয়ন্ত্রকসহ (সিএজি) দু-তিনজন বিশিষ্ট নাগরিক থাকবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, গত সোমবার থেকে সংলাপ শুরু হয়েছে। এখানে দলগুলোর মতামত নেবেন রাষ্ট্রপতি। তারপরে তিনি একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন, যার আহ্বায়ক হবেন আপিল বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি যিনি প্রধান বিচারপতি নন, তার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপরে সংলাপে বিভিন্ন দল যে নামগুলো প্রস্তাব করবে, সেগুলো রাষ্ট্রপতি তাদের কাছে দেবেন। এর থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করে এই সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতিকে পেশ করবে। পরে এর থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এ বিষয়ে আইনের দাবি তুলছে বিভিন্ন দলগুলো। আইন কবে হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, এটা করতে আগামী দু-তিনটি সংসদীয় অধিবেশনে আলোচনা করে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত বা আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে। তবে সময় লাগবে। এক্ষুনি এটা সম্ভব হবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App