দেশবিরোধী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৪৮ পিএম
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'দুঃখজনক হলেও সত্যি, দেশে স্বাধীনতাবিরোধী ও দেশবিরোধী অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। এবং বিএনপি ও জামাত যদি গত ৫০ বছর ধরে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নেতিবাচক, প্রতিহিংসাপরায়ণ, পেট্রোলবোমা আর সন্ত্রাসয়াশ্রয়ী অপরাজনীতি, ষড়যন্ত্র না করতো, দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে অপপ্রচার না চালাতো, তাহলে দেশ আরো বহুদূর এগিয়ে যেতো।'
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার কাকরাইলে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর- ডিএফপি আয়োজিত ‘বিজয়ের ৫০ বছর চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
'শুধু আজ নয়, বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক' উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, 'জিয়াউর রহমান দেশে আর কোনো মানুষ খুঁজে পাননি, সেই শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন, যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের উপপ্রধান হিসেবে জাতিসংঘে গিয়ে বলেছিলেন, পূর্বপাকিস্তানে কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না, কোনো গণহত্যা হচ্ছে না, সেখানে ভারতীয় কিছু চর গন্ডগোল করছে মাত্র।'
'জিয়াউর রহমান রাজাকারদের মন্ত্রী এমপি বানিয়েছিলেন, বেগম জিয়ার সময় গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছিল এবং যারা দেশটাই চায়নি, যারা চাঁদ-তারা পতাকার পক্ষে এদেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত সেই মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদদের খালেদা জিয়া মন্ত্রী বানিয়েছিলেন' বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
'এসব কারণেই দেশকে যদি আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়, এই স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী অপশক্তির চূড়ান্ত পতন প্রয়োজন' বলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
সভাপতির বক্তৃতায় স. ম. গোলাম কিবরিয়া বলেন, 'জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর একটি নিবিড় সম্পর্কে যুক্ত। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ধারণকারী ও দেশের সংবিধানের প্রথম হস্তলিপিকার এই অধিদপ্তরেরই চাকুরে ছিলেন এবং অধিদপ্তরের এই স্থানেই ছিল স্বাধীনতা উত্তরকালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কার্যালয়।'
ডিএফপি মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান তথ্য অফিসার শাহেনুর মিয়া, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকার, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, ডিএফপি'র পরিচালক মোহাম্মদ আলী সরকার সভায় বক্তব্য রাখেন। শুরুতেই প্রদর্শিত হয় প্রামাণ্যচিত্র 'চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু'।
মুশতারী শফীর কফিনে তথ্যমন্ত্রীর শ্রদ্ধা :
মঙ্গলবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সদ্যপ্রয়াত শিল্পী মুশতারী শফীর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় তিনি মরদেহের পাশে ক্ষণকাল নিরবে দাঁড়িয়ে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে মন্ত্রী বলেন, বেগম মুশতারী শফী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তার স্বামী ডা. শফী তার বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। মুশতারী শফীর ভাইকেও হত্যা করা হয়েছিল। এরপরও মুশতারী শফী দমে যাননি। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী হিসেবে, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন।
মুশতারীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও আমাদের আবহমান সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তা লালন করেছেন মুশতারী শফী, তিনি চট্টগ্রাম উদীচীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে জাতি একজন নিবেদিতপ্রাণ সংস্কৃতিসেবী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠককে হারালো। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি।