×

খেলা

শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর মারিয়ারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:৩৮ পিএম

শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর মারিয়ারা

ট্রফি নিয়ে দুই অধিনায়ক। বুধবার ফাইনাল শেষে এ ট্রফি উঠবে একজনের হাতে

শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর মারিয়ারা

নিজেদের পরিচিত ভেন্যুতে মঙ্গলবার শেষ সময়ে অনুশীলনে ঘাম ঝরান মারিয়া মান্ডারা

শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর মারিয়ারা

বাংলাদেশের মেয়েদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে মঙ্গলবার নিজেদের প্রস্তুত করছেন ভারতের মেয়েরা

২০১৮ সালে প্রথম বার আয়োজিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় আসরেও দুর্দান্ত মারিয়া মান্ডারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফাইনালে উঠেছে। আগামিকাল বুধবার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত। কমলাপুরে আর একটি জয়, মারিয়াদের সাফে টানা দ্বিতীয় শিরোপার স্বাদ এনে দিবে।

এর আগে চলতি আসরে অপরাজিত থেকে ফাইনালে খেলছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। অন্যদিকে ভারত একমাত্র বাংলাদেশের বিপক্ষে হার ছাড়া বাকি তিন ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে। শক্তির বিচারে তাই বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখতে হচ্ছে। অবশ্য ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিতে পেনাল্টি থেকে করা ওই একটি গোলেই জয় পেয়েছিল মারিয়ারা। বিপরীতে ভারত বেশ কিছু আক্রমণ করলেও ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতায় ম্যাচে ফিরতে পারেনি। ফাইনালে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া বাংলাদেশের মেয়েরা।

[caption id="attachment_324996" align="aligncenter" width="1280"] নিজেদের পরিচিত ভেন্যুতে মঙ্গলবার শেষ সময়ে অনুশীলনে ঘাম ঝরান মারিয়া মান্ডারা[/caption]

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের অধিনায়ক শিরোপা জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলে স্বাগতিক দর্শকদের বিনোদন দেয়া। প্রাথমিক এই লক্ষ্য পুরণ করায় আমি বাংলাদেশ দলের মেয়েদের ধন্যবাদ জানাই। আশা করি এই ধারবাহিকতা ধরে রেখে অনুপ্রাণিত মেয়েরা ভারতের বিপক্ষে বুধবার ফাইনালে আরো উজ্জীবিত হয়ে খেলবে। ভারত দলের কোচ অ্যালেক্স এমব্রোস বলেন, ফাইনালের আগে দল আগের ভুল ভ্রান্তি শুধরে নিয়েছে। মারিয়া-আঁখিরা লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলংকার জালে ১২ গোল দিয়ে ফাইনালে উঠেছে। ভারত ফাইনালে উঠেছে নেপালকে হারিয়ে। লিগপর্বে ছোটনের শিষ্যরাপ ১৯ গোল করে অক্ষত রেখেছে নিজেদের পোস্ট, ভারত ৯ গোল দিয়ে খেয়েছে একটি। ভারতের জালে একটি বল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। দুই দলের আগের চার ম্যাচ বিশ্লেষণ করলে বাংলাদেশকে একটু হলেও এগিয়ে রাখতে হচ্ছে ফুটবলবোদ্ধাদের।মঙ্গলবার শেষ সময়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মেয়েরা অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন।

[caption id="attachment_324997" align="aligncenter" width="1280"] বাংলাদেশের মেয়েদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে মঙ্গলবার নিজেদের প্রস্তুত করছেন ভারতের মেয়েরা[/caption]

বাংলাদেশ যেভাবে ফাইনালে এলো এদিকে পুরো আসরে দুর্দান্ত খেলেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের চলতি আসরে চার ম্যাচের একটিতেও গোল হজম করেনি তারা। তবে শুরুটা আশানুরূপ ছিল না আখি খাতুনদের। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা প্রথম ম্যাচেই খায় হোঁচট। নেপালের বিপক্ষে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে একাধিক আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি ঋতুপর্না চাকমরারা। তাদের সব প্রচেষ্টা একাই রুখে দেন নেপালের গোলরক্ষক অঞ্জনা রানা মাগার। এই ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যতটা নজর কেড়েছে, তার চেয়ে বেশি নজর কেড়েছে নেপাল গোলরক্ষকের বল প্রতিহত করার স্কিল। তবে ভুটানে নেই কোনো অঞ্জনা। তাই দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়ে বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। অর্ধ ডজন গোলে কমলাপুরে ভেসে যায় ভুটানের মেয়েরা। ম্যাচে দুটি করে গোল করেন তহুরা খাতুন ও শাহেদা আক্তার রিপা। ঋতুপর্না চাকমা ও মারিয়া মান্ডা একটি করে গোল করেন। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। এই ম্যাচে দুই দলের আক্রমণই ছিল সমানে সমান। তবে সহজ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছিল ভারতের মেয়েরা। ভাগ্য সহায়ক না হলে ওই ম্যাচে হারতে হত মারিয়াদের। তবে আক্রমণে বেশ শানিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরাও। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই ভারতের ডি বক্সে ঢুকে পড়ে মারিয়ারা। ফাউল করে তাদের প্রতিহত করেন ভারতের ডিফেন্ডাররা। রেফারি নজর এড়ায়নি বলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে ভারত গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে ভুল করেননি শামসুন্নাহার সিনিয়র। ভারতের বিপক্ষে মাত্র একজন গোল স্কোরার হয়তো মেনে নিতে পারেননি বাংলার কিশোরিরা। তাই শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মন খুলে গোল করেছেন সাত জন। শুরুটা করেন স্বপ্না রানী, লঙ্কার জালে শেষ বলটি জড়ান উন্নতি খাতুন। ম্যাচে হ্যাট্রিক গোল করেন শাহেদা আক্তার রিপা ও আফিদা খন্দকার। দুইট গোল করেন ঋতুপর্না চাকমা। একটি করে গোল করেন আখি খাতুন, আনুচিং মগিনি, স্বপ্না ও উন্নতি। এক ডজন গোলে ভেসে যায় লঙ্কার মেয়েরা। ফলে ৪ ম্যাচে তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ভারত যেভাবে ফাইনালে ভারতের ফাইনালে আসতে লড়াই করতে হয়েছে নেপালের বিপক্ষে। কারণ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপালের বেশি কিছু দরকার ছিল না। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ড্র হলেও ফাইনালে পৌঁছে যেত তারা। তবে অঞ্জনা রানা মাগার ভারতের মেয়েদের খুব বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেননি। একের পর এক আক্রমণে নেপালকে দিশেহারা করে দিয়ে শেষ ম্যাচটি সিল্কি দেবীরা ১-০ গোলের ব্যবধানে জিতে যায়। আসর থেকে ছিটকে যায় নেপাল। তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ম্যাচ শুরু করা ভারত ৯ পয়েন্ট নিয়ে পৌঁছে যায় ফাইনালে। আর তিন ম্যাচে ৭ পয়েন্ট বাড়ির পথে নেপাল। এর আগে ভারত নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় তুলে নেয়। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ভুটানের বিপক্ষে জয় পায় ৩-০ গোল ব্যবধানে। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে আসরে তাদের ওই এক হার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App