পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

আগের সংবাদ

ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু আজ, প্রথম দিনে যাচ্ছে জাপা

পরের সংবাদ

এক দশকে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ড্রোন হামলায় ১৩০০ মানুষ নিহত

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২১ , ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ২০, ২০২১ , ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার পরিকল্পনা অনেক সময় ত্রুটিপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়ে থাকে। এমনকি ভুল লক্ষ্যবস্তুতেও চালানো হয়ে থাকে ড্রোন হামলা। আর এতে হতাহত হয় বেসামরিক মানুষ। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের গোপন নথিতে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যই উঠে এসেছে।

পেন্টাগনের গোপন নথি অনুযায়ী, এসব ‘ভুল হামলায়’ গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্যে এক হাজার তিন শতাধিক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের এক ড্রোন হামলায় ‘আইএসের পরিকল্পনাকারী’ নিহত

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বিমান হামলার কয়েকটি ঘটনা খতিয়ে দেখছিল করছিল নিউইয়র্ক টাইমস। তা করতে গিয়েই এ বিষয়ে পেন্টাগনের কিছু গোপন নথি সংবাদমাধ্যমটির হাতে আসে।

নথিতে বলা হয়েছে, একটি ঘটনায়ও ভুল স্বীকার বা কারও বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। অল্প কিছু ঘটনায় নিহতের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। যদিও গত পাঁচ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে মার্কিন বাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজারের বেশি হামলা চালিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে সিরিয়ার প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ড্রোন হামলা চালিয়ে ৮৫ জন ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, সেই হামলায় প্রাণ গেছে ১২০ জনের বেশি মানুষের। নিহতদের সবাই ছিলেন নিরীহ গ্রামবাসী।

একই ঘটনা ঘটেছে ইরাকেও। ২০১৭ সালে ইরাকের পশ্চিম মসুলে মার্কিন বিমান থেকে একটি গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় মার্কিন বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, গাড়িটিতে বোমা ছিল। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধান বলছে, সেই তথ্য সঠিক ছিল না। হামলার সময় গাড়িটিতে মাজিদ মাহমুদ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিলেন। হামলায় তাঁরা সবাই নিহত হন। প্রাণ যায় আরও তিনজন বেসামরিক ব্যক্তির।

যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মধ্যপ্রাচ্যে ড্রোন হামলার প্রতিবাদে তৈরি পোস্টার

অন্যদিকে আইএসের বিরুদ্ধে বোমা হামলায় মার্কিন বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষার বিষয়টি নিয়মিতই পাশ কাটিয়ে গেছে। গত আগস্টে আফগানিস্তানের কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালিয়ে ১০ জনকে হত্যা করে। পেন্টাগন থেকে শুরুতে দাবি করা হয়েছিল, তারা বোমা বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, নিহত ১০ জন ছিলেন বেসামরিক মানুষ। তারা একই পরিবারের সদস্য।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু ভুল রয়ে যেতে পারে। এটা ঘটে থাকে অসম্পূর্ণ কিংবা ভুল গোয়েন্দা তথ্যের কারণে। আগামী দিনগুলোয় আরও কার্যকর উপায়ে হামলা পরিচালনায় আমরা এসব ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাই। কেননা প্রতিটা জীবনই অমূল্য।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধরত মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে মধ্যপ্রাচ্যে বিমান হামলা ব্যাপকতা পায়। ধীরে ধীরে দেশগুলো থেকে সেনা কমিয়ে ড্রোন হামলা বাড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বারাক ওবামা এসব বিমান হামলাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে নিখুঁত অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেও এসব হামলা অব্যাহত ছিল।

ডি- এইচএ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়