×

জাতীয়

৪৭ শতাংশ খোলা ভোজ্য তেলে মেলেনি ভিটামিন-এ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম

৪৭ শতাংশ খোলা ভোজ্য তেলে মেলেনি ভিটামিন-এ
৪৭ শতাংশ খোলা ভোজ্য তেলে মেলেনি ভিটামিন-এ

মঙ্গলবার ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও বাজারে বিক্রি ড্রাম তেলের গুণমান মূল্যায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রফেসর ড. মো. আবদুল আলিম এ তথ্য তুলে ধরেন। ছবি: ভোরের কাগজ

রিফাইনারী ও মোড়কজাতকারী কোম্পানীগুলোর জন্য ভোজ্য তেলে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন-এ নিশ্চিতকরণ বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই নিয়ম সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। ৪৭ শতাংশ খোলা তেলেই পাওয়া যায়নি ভিটামিন-এ। একইসঙ্গে বোতলজাতকৃত ১৩ শতাংশ ভোজ্য তেলেও ভিটামিন-এ পাওয়া যায়নি। ২০১৮-২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বিএসটিআই নমুনা হিসেবে, দেশের বিভিন্ন এলাকার বোতলজাতকৃত ৫২০টি নমুনা ও খোলা বা লুজ তেলের ৩৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করেছে। এরমধ্যে বোতলজাত তেলের ৪৫৭টি নমুনায় (৮৭ শতাংশ) এবং খোলা তেলের ২০৭টি (৫২ শতাংশ) নমুনায় ভিটামিন এ পাওয়া গেছে। অথচ, দেশের ভোজ্য তেলের ৬৫ শতাংশই বিক্রি হয় খোলা বা লুজ আকারে।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও বাজারে বিক্রি ড্রাম তেলের গুণমান মূল্যায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবদুল আলিম এ তথ্য তুলে ধরেন। গুণমান ঠিক না থাকায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের ১৬ মার্চ থেকেই খোলা তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করা হবে বলে সেমিনারে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুল কাইয়ুম সরকার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাজারে ভালো মন্দ সব ধরণের ভোজ্য তেল পাওয়া যায়। কিন্তু বেশি টাকা দিয়ে তেল কিনলেও সন্দেহ কাজ করে এটি স্বাস্থ্যকর কিনা। শুধু আইন করে কিংবা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে এই সমস্যা দূর করা যাবেনা। আমরা চাই, তেলের ভেজাল সরিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত তেল নিশ্চিত করে আস্থা ফিরিয়ে আনতে। এজন্য কোন কোন কোম্পানী তেলে ভেজাল দিচ্ছে, সয়াবিনের সঙ্গে পাম ওয়েল মেশাচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে এমন অবস্থা দাড়িয়েছে, কোনটি সয়াবিন, কোনটি সরিষা আর কোনটি অলিভ ওয়েল তার কোনো আস্থা নেই। কারণ অনেকে সয়াবিন তেলের সঙ্গে ঝাঝালো মেডিসিন মিশিয়ে সরিষার তেল হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।

আমরা এই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে চাই। সয়াবিন তেলকে আর সরিষার তেল বলতে চাইনা। অনেকে বলছে, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করা হলে তেলে দাম বাড়বে, জনজীবনে এর প্রভাব পড়বে। কিন্তু অল্প কিছু টাকা বাড়িয়ে হলেও সবাই স্বাস্থ্যকর জিনিস খাবে, এটাই আমরা চাই।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ভোজ্য তেল মোড়কজাত করলে এটির গায়ে লিখে দিতে হবে, কোন কোন উপাদান আছে এবং কিসের জন্য তা ক্ষতিকর। তাহলে মানুষ বিভ্রান্ত না হয়ে স্বাস্থ্যকর তেল কিনতে পারবে। তিনি আরো বলেন, অনেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হয়তো জানেনা তারা কি ধরনের তেল আমদানি করছে। তাদেরকেও এ বিষয়ে আরো জানতে হবে।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, খোলা তেল উঠিয়ে দিয়ে প্যাকেটজাত করলে মানুষ অবশ্যই খাবে। তবে, এখানে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি বিষয় রয়েছে। কেননা, খোলা তেল বা ভেজাল তেল কম টাকায় খেয়ে মানুষের যে পরিমাণ চিকিৎসা ব্যয় হচ্ছে, তার তুলনায় অল্প একটু টাকা বাড়িয়ে প্যাকেটজাত তেল কেনা তুচ্ছ বিষয়। তাই আমরা বলতে চাই, খোলা তেল বন্ধ করে ১৬ মার্চের পর তা পাওয়ার সুযোগ বন্ধ করে দিতে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App