দুই মেয়েকে ফিরে পেতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো। রবিবার (৫ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদনটি করেছেন তিনি। এ তথ্য জানিয়েছেন নাকানো এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ ও জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানোর দুই মেয়েকে বাংলাদেশে তার বাবার কাছে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই শিশুকে নিয়ে দেয়া রায়ে বলেন, যেহেতু মা জাপানি নাগরিক, সেখানে তার বসবাস ও কর্মস্থল সে কারণে তিনি তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে শিশুদের সঙ্গে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এক্ষেত্রে বছরে তিন বার বাংলাদেশে তার যাওয়া আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশু দুটির বাবাকে বহন করতে হবে। তবে, এর চেয়ে অতিরিক্ত যাওয়া-আসা বা বাংলাদেশে অবস্থানের ক্ষেত্রে খরচ মা নিজে বহন করবেন। বাবা মাসে কমপক্ষে দুই বার শিশু সন্তানদেরকে ভিডিও কলে মায়ের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেবেন। আর গত কয়েক মাস বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত বাবদ ওই মাকে ১০ লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে দিতে শিশুদের বাবার প্রতি নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে এই শিশুদের দেখভাল অব্যাহত রাখতে এবং প্রতি তিন মাস পর পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রতিবেদন দিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেন।

এছাড়া শুনানি শেষে তিনজনের মধ্যে সবার ছোট মেয়েকে জাপান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাবা ইমরান শরীফের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দেন আদালত। তবে তাদের মায়ের করা রিট চলবে।

২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো (৪৬) ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান (৫৮) জাপানি আইনানুসারে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তারা টোকিওতে বসবাস শুরু করেন। ১২ বছরের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা হলো- জেসমিন মালিকা (১১), লাইলা লিনা (১০) ও সানিয়া হেনা (৭)। এরিকো পেশায় একজন চিকিৎসক। তিন মেয়ে টোকিওর চফো সিটিতে অবস্থিত আমেরিকান স্কুল ইন জাপানের (এএসজেআই) শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি শরীফ ইমরানের এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর একদিন জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার পথে বাসস্টপ থেকে ইমরান তাদের অন্য একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।