×

খেলা

সাকিব ফেরায় উজ্জীবিত টাইগার বাহিনী: মিরপুরের উইকেট নিয়ে ধোঁয়াশা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৩২ এএম

অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের প্রত্যাবর্তনে উজ্জীবিত হয়ে আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। এই টেস্ট দিয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আবারো জাতীয় দলের হয়ে দেখা যাবে দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে।

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়েন সাকিব। যে কারণে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ও প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি সাকিব। তবে মিরপুরে তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নামবেন সাকিব। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর মিরপুরের ভেন্যুতে দেশের হয়ে টেস্ট খেলেছিলেন সাকিব।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ছিল সেটি। ওই টেস্টের অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। ম্যাচটি ইনিংস ও ১৮৪ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে ৮০ রান করেছিলেন সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস ব্যবধানে হারায় ম্যাচে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে হয়নি বাংলাদেশকে। বল হাতে প্রথম ইনিংসে ৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেট নেন সাকিব। সাকিব থাকলে দলের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটে বলে সবার বিশ্বাস। মিরপুর ভেন্যুতে এ পর্যন্ত ১৭ ম্যাচে ব্যাট হাতে ১টি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪৫ দশমিক ২৭ গড়ে ১৩১৩ রান করেছেন সাকিব। বল হাতে ৬৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ইনিংসে পাঁচবার ও ম্যাচে ১০বার পাঁচ বা ততধিক উইকেট নেন তিনি।

কেমন হবে মিরপুরের উইকেট নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন উইকেট হবে স্লো। কেউ বা বলছেন স্পোর্টিং উইকেট হবে। প্রথম টেস্টে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে স্পোর্টিং উইকেটে খেলেছিল দুই দল। যেখানে ব্যাটসম্যানরা রান যেমন পেয়েছেন, স্পিনার-পেসাররা উইকেটও পেয়েছেন। তবে বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বিব্রতকর ব্যাটিংয়ে হারতে হয়েছে বড় ব্যবধানে।

চট্টগ্রামে চার ইনিংসে ৩২টি উইকেট পড়েছে। তাতে ১৪ উইকেট পেয়েছেন স্পিনাররা। তার মধ্যে এক ইনিংসেই তাইজুল ইসলাম নিয়েছেন ৭ উইকেট। বাকি ১৮ উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। পেস বোলিংয়ে পাকিস্তানই মূলত উইকেট নিয়েছে। ১৮ উইকেটের মধ্যে শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলীরা নিয়েছেন ১৬টি। বাকি ২টি নিয়েছেন বাংলাদেশি পেসার এবাদত হোসেন। পেসার-স্পিনার দুই পক্ষই সুবিধা পেয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগে আলোচনায় উইকেট। একে তো পাকিস্তান এমন এক প্রতিপক্ষ, যাদের বিপক্ষে মিরপুরের স্বভাবজাত স্পিন উইকেট বানিয়ে ভালো কিছু আশা করা সম্ভব নয়। সেখানে বিপদে পড়তে পারেন মুমিনুলরা। তাই সংবাদ সম্মেলনে এসে স্পিন উইকেটের বিপক্ষেই কথা বলেছেন টাইগার অধিনায়ক।

তিনি বলেন, ‘এটা সবাই জানে, উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানরা স্পিন ভালো খেলে। তাই এখানকার দলগুলোর বিপক্ষে স্পিন উইকেটে না খেলাটাই ভালো। কেবল আমি নই, বিশ্বের সব দলই তাই করবে। তাই আমার মনে হয় ফ্ল্যাট উইকেটে খেলাটাই ভালো হবে।’

উইকেট সম্পর্কে মুমিনুল হক বলেন, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে উইকেট কিংবা এগুলো নিয়ে অজুহাত দেয়া কাম্য নয়। এটাতে আমি নিজেও একমত নই। যদি ধানক্ষেতেও খেলতে দেয়া হয়, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে সেখানেও আপনাকে ভালো খেলতে হবে। আমার মনে হয় এসব নিয়ে অজুহাত না দিয়ে জেতার জন্য আরেকটু পেশাদারিত্ব দেখালেই ভালো হয়।’

চলতি বছরের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়ে সফর থেকে ফিরে একেবারেই সুবিধা করতে পারছেন না ব্যাটসম্যানরা। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সফরের পর বিশ্বকাপের মঞ্চে ভরাডুবি ব্যাটসম্যানদের। ওপেনাররা রানের দেখা পাচ্ছেন না পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজেও। দায়িত্ব নিয়ে খেলতে না পারায় ফুটে উঠছে পেশাদারত্বের ছাপ। ছন্দ হারানো বাংলাদেশ ক্রিকেট ২২ গজে একেবারেই টাল-মাটাল। একের পর এক ম্যাচ হারে কাঠগড়ায় ব্যাটসম্যানরা। আরো নির্দিষ্ট করে বললে ওপেনারদের দৈন্যদশা কাটছে না কিছুতেই। টি-টোয়েন্টি পর টেস্ট, পরিবর্তন এনেও ফায়দা হচ্ছে না। বড় হচ্ছে না উদ্বোধনী জুটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খেলানো হয়েছিল সাইফ হাসানকে। চট্টগ্রামে ব্যর্থ সাইফ টাইফয়েডের কারণে ছিটকে গেছেন দ্বিতীয় টেস্ট থেকে। ঢাকা টেস্টে সাদমান ইসলামের সঙ্গে ইনিংস শুরু করবেন কে?

মুমিনুল বললেন, ‘দেখেন ওপেনিং কম্বিনেশন ডান-বাম হতে পারে, হয়তো বাম হাতি দুইজনও হতে পারে, আসলে ডান বাম হওয়ারই চান্স বেশি।’ ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন হলে হঠাৎ করে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া নাঈম শেখের ভাগ্যের শিকে ছিঁড়ছে না। সেক্ষত্রে বাঁ-হাতি সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে একের পর এক জুনিয়র ক্রিকেটারদের দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে দলের পাশাপাশি তাদের ক্যারিয়ারকেও কি ঝুঁকির মুখে ফেলা হচ্ছে না?

মুমিনুলের ব্যাখ্যা, আমার মনে হয় না। আপনারা যদি শেষ দেখেন এখানে কিন্তু জুনিয়র কাউকে আনা হয়নি এক্সপ্রিমেন্টের জন্য। আপনি দেখেন, তামিম ভাই নাই তার জায়গায় একটা ওপেনার দরকার ছিল। তো জয় আসছে, তারপর নাঈম এসেছে। সাকিব ভাই ছিল না, রাব্বি খেলল প্রথম ম্যাচ। রিয়াদ ভাই তো রিটার্ড করল, তো এ রকম জায়গায় নতুন কাউকে তো নিতে হবে। আমাদের তো এমন নাই অনেক বেশি খেলোয়াড়ও নাই। যারা নেই তাদের জায়গা খেলছে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App