×

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আজিজুর রহমানের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:১১ পিএম

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আজিজুর রহমানের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ছবি: বাম থেকে পেছনে তাজুদ্দিন আহমেদ, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, এডভোকেট মো. আজিজুর রহমান। সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মানিক মিয়া। ছবিটি দৈনিক ইত্তেফাক অফিসে ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ মাসে স্টাফ ফটোগ্রাফার আফতাবুর রহমান তুলেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আজিজুর রহমানের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অগ্রসৈনিক বৃহত্তর দিনাজপুরের বিপ্লবী জননেতা এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান ছিলেন ১৯৭০ সালে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) এবং মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চল ক জোনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। আজ শনিবার (৪ ডিসেম্বর) তার ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। বেঁচে থাকলে এখন তিনি হতেন একশত এক বছরের প্রবীণ।

গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারী হিসাবে রাজনীতি করতেন তিনি কলকাতায় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী হিসাবে তারা একই সঙ্গে বেকার হোস্টেলে থাকতেন।

বাঙালি জাতীয়তাবাদের এই উজ্জ্বল নেতা ১৯৪৫ সালে ডিস্টিংশন (৮৫% প্রতি বিষয়ে) সহ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে তৃতীয় স্থান অধিকার করে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। অনেক ভাষায় পণ্ডিত উচ্চশিক্ষিত এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান, এমএনএ ছিলেন সর্বস্বব্যাপী। এ মহান জননেতার সম্পর্কে দিনাজপুর তথা বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মেহরাব আলী সম্পাদিত দিনাজপুরের ইতিহাস সমগ্র- ৫ম খণ্ডে (পৃষ্ঠা নম্বর ৫৮২) লিখেছেন, ‘দিনাজপুর বারের লব্ধ প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী, সুলেখক, সম্পাদক, সংসদ সদস্য ও রাজনীতি ক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের উত্তেজিত যুগে। যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তখন যুদ্ধের সংগঠক ও সংস্থানের ব্যবস্থাপনায় প্রাণান্তকর পরিশ্রম করেন তিনি। ঐ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে অনেক জ্বালাময়ী বক্তৃতা করেন, যা দেশবাসীর মনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অপূর্ব সাড়া জাগায়। দিনাজপুর বড় মাঠে আয়োজিত ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবে তার প্রদত্ত ভাষণটিও ছিল উন্মাদনাময়ী, আবেগময়ী ও জ্বালাময়ী। তিনি রাজনীতির চর্চা করে গেছেন রাজনীতির জন্যে, অন্য কোনো মতলবে নয়। তিনি ভোগীর চেয়ে ত্যাগী ছিলেন বেশি। তাবৎ কাজে নিজস্ব সহায়সম্পত্তি উজাড় করে দিতে অকুণ্ঠচিত্ত।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিনাজপুর শহরে ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম দিনাজপুর জেলা কমিটি গঠিত করে দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য এবং তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর এডভোকেট মো. আজিজুর রহমানকে প্রথম সহসভাপতির দায়িত্ব প্রদান করেন। এরপর তিনি ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের দু দফায় নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের ফলে বঙ্গবন্ধুর কারামুক্ত হয়ে অক্টোবরের ১০ তারিখে দিনাজপুর সফরে আসেন। সফরের সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি ছিলেন এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান এবং সম্পাদক অধ্যাপক ইউসুফ আলী।

১৯৭১ সালে প্রতিরোধ সংগ্রাম শুরু হলে এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান, এমএনএ দিনাজপুর শহরের পাহাড়পুর মহল্লায় তার বাসায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নির্দেশনায় বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার গঠিত সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের নির্বাচিত আহ্বায়ক হিসাবে জেলায় নেতাকর্মী ও তরুণদের সংগঠিত করেন। ১৩ এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা দিনাজপুর দখল করলে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আঙ্গিক বদলে তাকে সভাপতি করে বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা মুক্তিসংগ্রাম সমন্বয় পরিষদ গঠিত হয়। একাত্তরে জুলাই মাসে যুদ্ধ সেক্টরগুলো পূর্ণতা পাওয়ার আগ পর্যন্ত এ পদাধিকারবলেই তিনি দিনাজপুর কেন্দ্রীয় মুক্তিসংগ্রাম কমিটির সভাপতি হিসাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন তার লেটারহেড প্যাডে অসংখ্য নির্দেশনা জারি করেছেন।

মুজিবনগর সরকার ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরগুলো সম্পন্ন করলে, এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান, এমএনএ মুক্তিযুদ্ধের ৭ নম্বর এবং ৬ নম্বর সেক্টর (অর্ধেক) অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদায় সিভিল অ্যাফেয়ার্স এডভাইজার, ফ্রিডমফাইটার্স রিক্রুটিং ও লিয়াজোঁ অফিসার পদে দায়িত্ব পান। জেনারেল ওসমানী স্বাক্ষরিত মুজিবনগর সরকার কর্তৃক ৩০ আগস্ট জারি করা গোপন পরিপত্র নং : ০০০৯জি/২ অনুযায়ী মো. আজিজুর রহমানের সদর দপ্তর ছিল ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত তরঙ্গপুরে। মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত সেই গোপন পরিপত্র অনুয়ায়ী কার্যত তিনি ৭ নম্বর এবং ৬ নম্বর সেক্টর (অর্ধেক) সেক্টরের সব মুক্তিযোদ্ধার রিক্রুটিং ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনায় সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ ছিলেন। ওই সেক্টরের সামরিক কমান্ডার এবং অধীনস্ত সবার জন্যে বেসামরিক বিষয়ে তার নির্দেশ মানাটা ছিল বাধ্যতামূলক। এ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য বিষয়েও পরামর্শ দেয়ার এখতিয়ার তার ছিল। সব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র্রে তার সামরিক বিষয়ে প্রদত্ত পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে সেক্টর কমান্ডারকে জানানোর নির্দেশ ছিল।

[caption id="attachment_322228" align="alignnone" width="1714"] ছবি: বাম থেকে পেছনে তাজুদ্দিন আহমেদ, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, এডভোকেট মো. আজিজুর রহমান। সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মানিক মিয়া। ছবিটি দৈনিক ইত্তেফাক অফিসে ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ মাসে স্টাফ ফটোগ্রাফার আফতাবুর রহমান তুলেছেন।[/caption]

উল্লেখ্য, পশ্চিমাঞ্চল প্রশাসনিক ক জোনের প্রশাসনিক কর্মকর্তার হিসাবেও দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের অবিকৃত তালিকার লালবই খ্যাত দলিলে মুক্তিযুদ্ধের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্ব কাঠামোয় ’স্বাধীনতার বীর সেনানি, স্মরণীয় যারা বরণীয় যারা’ শিরোনাম অধিভুক্ত ক্রম অনুযায়ী এডভোকেট মো. আজিজুর রহমানের কোড ০৭০০০০০০২১ এবং পরে দিনাজপুর-২ আসনের এমএনএ হিসাবে ০৭০০০০০০৩৯। সে দলিল অনুযায়ী প্রথমেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম রাষ্ট্রপতি হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান, এমএনএ’র নেতৃত্বের গুরুত্ব বিবেচনায় পাকিস্তান সামরিক শাসক দেশদ্রোহিতা ও তিন হাজার লোককে গণহত্যার অভিযোগ এনে অক্টোবর মাসে সামরিক আদালতে তাকে হাজির হতে সমন জারি করে এবং পরে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

এসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান (এপিপি) রিপোর্টে বলা হয়, ১৭ আগস্ট ১৯৭১ দুই দফায় ৩০ এমএনএকে সামরিক আদালতে তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের মো. আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতা ও ৩০০০ লোকের হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে আছে এক গর্ভস্থ মহিলাকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দলিলপত্রের পঞ্চদশ খণ্ডের ২২৭ পৃষ্ঠা থেকে এডভোকেট মোহম্মদ আজিজুর রহমান, এমএনএ-এর প্রদত্ত বিবৃতির কিছু অংশ উল্লেখ করা অতি প্রাসঙ্গিক। তিনি লিখেছেন, ‘২৭ মার্চ দু ঘণ্টার জন্যে কার্ফ্যু তুলে নেয়া হয়। এ সুযোগে আমি বেরিয়ে পড়ি এবং ইপিআর বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থির হয় দিনাজপুর ইপিআর ৮ম বাহিনীর বাঙালিদের দায়িত্বে থাকবেন ক্যাপ্টেন নজরুল হক এবং ৯ম বাহিনীর দায়িত্বে থাকবেন সুবেদার মেজর আবদুর রউফ। আর আমি বেসামরিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করব।’

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘২৪ শে মার্চে আমি ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুরের ইপিআর বাহিনীর কয়েকজন সুবেদার ও হাবিলদারের সঙ্গে গোপনে আলাপ করি এবং তাদের উপদেশ দেই পাক অফিসাররা তাদের অস্ত্র জমা দিতে বললে তারা যেন তা না করেন। তাদের আরো উপদেশ দেই, এরকম পরিস্থিতি দেখা দিলে তারা যেন অস্ত্রাগার দখল করে নেন। তারা এতে রাজি হন। দিনাজপুর ইপিআর বাহিনীর একজন সুবেদার যুদ্ধ ঘোষণার পূর্বেই অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং পাক সৈন্যদের হত্যার জন্য আমার এবং জেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি অধ্যাপক ইউসুফ আলীর কাছে অনুমতি চান। কিন্তু আমরা তার এ প্রস্তাবে রাজি হইনি। ২৭ মার্চ পাক বাহিনী আমাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। ২৮ শে মার্চ আমি এখান থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের ইপিআর বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য রওয়ানা হই। ২৯ শে মার্চ ঠাকুরগাঁও পৌঁছি। এখানে সুবেদার মেজর কাজিমউদ্দিন এবং ঠাকুরগাঁও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে একত্রে কাজ চালিয়ে যাই। সুগার মিলের জিপ নিয়ে দিনাজপুর ৯নং ইপিআর বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য ২৯ তারিখে রওয়ানা হই। ৩০ শে মার্চ দিনাজপুরের কাঞ্চনঘাটে আমাদের মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিতে পৌঁছি। ঐ দিনই দিনাজপুরের ইপিআর ঘাঁটির সব অস্ত্র আমরা লাভ করি। এখানে রফিক সাহেব, ফয়েজ সাহেব, সাজিম ভূঁইয়া, জজ, আব্দুল হান্নান চৌধুরী এবং ক্যাপ্টেন নজরুল হকের সঙ্গে দেখা হয়। ভারতীয় বন্ধুগণ এখানে আমাদের রসদ সরবরাহ করত।’

‘৩১ মার্চ ঠাকুরগাঁও ঘাঁটি আমাদের দখলে আসে। রাত ১০টায় আমরা অস্ত্রাগারের অস্ত্র নিজেদের অধিকারে আনি। এ সময়ে স্থানীয় গ্রামবাসী আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা করে। এ সময়ে ভারতীয় সীমান্ত থেকে কিছু অস্ত্র ও ওয়্যারলেস সংগ্রহ করি। আমি ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ের রেললাইন অচল করে দেই এবং প্রাক্তন উইং কমান্ডার জনাব মির্জার সঙ্গে পরামর্শ করে শিবগঞ্জ বিমানঘাঁটি নষ্ট করে দেই। ক্যাপ্টেন নজরুলের দেয়া অস্ত্রসহ আমরা এলাকাব্যাপী মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ ও সংগঠনে তৎপর হই। ২রা এপ্রিল সীমান্ত পার হয়ে অস্ত্রের জন্য ভারতে যাই। সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য সুবেদার কাজিম উদ্দিনকে পাঠিয়ে আমি ঐ তারিখে গভীর রাতে দেশে ফিরে আসি। ৩রা মার্চ আমাদের দিনাজপুরে যুদ্ধঘাঁটি পরিদর্শন করি। ঐ দিনই দিনাজপুরের ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন আরাফকে ঠাকুরগাঁওয়ে ডেকে পাঠাই এবং মিটিং করে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণের পরিকল্পনা নেই। ৫ এপ্রিল আমি সেতাবগঞ্জ ও পীরগঞ্জ ঘাঁটি অভিমুখে রওয়ানা হই। ৬ এপ্রিল রাতে ভারতে যাই এবং কংগ্রেস নেতা বাবু আর দত্ত, এমএলএ এর সঙ্গে আলাপ করি। অধ্যাপক ইউসুফ আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কামারুজ্জামান, মিজানুর রহমান, মনসুর আলী প্রমুখ নেতৃবর্গের সঙ্গেও সেখানে সাক্ষাৎ হয়।’

‘১৩ এপ্রিল পশ্চিম দিনাজপুরের রায়গঞ্জে ফিরি এবং সেখান থেকে এসে দিনাজপুর শহরের উপকণ্ঠে প্রবেশের চেষ্টা করি। কিন্তু সে সময়ে পাক বাহিনী দিনাজপুরে প্রবেশ করে প্রবল গুলিবর্ষণ করে। রাতে ক্যাপ্টেন নজরুল হক, সুবেদার মেজর রউফ, সুবেদার ওসমান গনী সাহেবের সঙ্গে ভারত সীমান্তে সাক্ষাৎ হয়। এ সময়ে রাধিকাপুর স্টেশনে ভারতগামী হাজার হাজার শরণার্থী দেখতে পাই। এখান থেকে বিএসএফ ক্যাম্পে চলে যাই এবং সেখানে অবস্থান করি। ১৯ এপ্রিল মুক্তিবাহিনীসহ পাকবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করি। যুদ্ধে আমরা জয়ী হই এবং প্রচুর খাদ্যদ্রব্য উদ্ধার করি। শরণার্থী ক্যাম্পের যুবকদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করি। আমার সঙ্গে এ সময় দিনাজপুরের জজ, ডা. নইম উদ্দিন, ছাত্রনেতা আজিজুল ইসলামও ছিলেন। মুজিবনগর সরকার এবং ভারতীয় বাহিনী আমাদের এ ব্যাপারে সহায়তা করে।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই স্বর্ণসন্তান ৪ ডিসেম্বর ১৯৯১ সালে দিনাজপুর শহরে ঘাসিপাড়া মহল্লায় ভাড়াবাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন।

লেখক: জননেতা আজিজুর রহমানের ছেলে

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App